পাইকারিতে দাম কমেছে কেজিতে ১৫ টাকা, খুচরায় তবু ৮০-৯৫ টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারত রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পরও পথিমধ্যে থাকা আমদানিকৃত ৩০০ ট্রাক পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসছে। এর মধ্যে খাতুনগঞ্জে আসছে ৫০ ট্রাক (প্রতি ট্রাকে ১৪ টন) পেঁয়াজ। গতকাল মধ্যরাতে এসব পেঁয়াজের চালান খাতুনগঞ্জে ঢোকার কথা রয়েছে। ভারত থেকে নতুন চালান আসার খবরে খাতুনগঞ্জে গতকাল পেঁয়াজের দামে কিছুটা ভাটা পড়েছে। কেজি প্রতি ১৫ টাকা কমেছে।
গত মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত খাতুনগঞ্জের আড়তে পেঁয়াজের দাম ছিল কেজি প্রতি ৬৮-৭০ টাকা। গতকাল বুধবার সকালে পেঁয়াজের দামে হঠাৎ ভাটা পড়ে। ৭০ থেকে দর নেমে আসে ৫৫-৫৮ টাকায়।
খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের আড়ত হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, ভারত থেকে পথেমধ্যে থাকা আমদানিকৃত প্রায় ৩০০ ট্রাক পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসছে। এর মধ্যে খাতুনগঞ্জে ৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আসবে। বুধবার (গতকাল) রাতেই এসব পেঁয়াজের চালান ঢোকার কথা রয়েছে।
গতকাল খাতুনগঞ্জে সকালে আড়তদারদের মধ্যে ভারত থেকে ৭০০ টন পেঁয়াজের চালান আসার খবর চাউর হয়। এতে পেঁয়াজের দর দ্রুত কেজিতে ১৫ টাকা কমে আসে।
খাতুনগঞ্জের আড়তদার ও কমিশন এজেন্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভারত থেকে নতুন পেঁয়াজের চালান আসলে দাম ৫০ টাকার নিচে নেমে আসতে পারে। সপ্তাহখানেক পর্যন্ত দাম স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজের সংকট হলে দাম আবার চড়া হবে।
কয়েকজন আড়তদার ও কমিশন এজেন্ট জানিয়েছেন, মিয়ানমার কিংবা অন্যদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলেও পাইকারি দাম ৫০ টাকার ওপরে থাকবে।
এদিকে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১৫ টাকা কমলেও এর প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে। অথচ পাইকারিতে দাম বাড়ার সাথে সাথে খুচরা বাজারেও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। কিন্তু দাম কমার ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র খুচরা বাজারে।
গতকাল সকাল থেকে খাতুনগঞ্জের আড়তে পেঁয়াজের দাম ছিল কেজি প্রতি ৫৫-৫৮ টাকা। অথচ নগরীর খুচরা বাজারে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮০-৯৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়।
চৌমুহনী কর্ণফুলী মার্কেটের নুর এন্ড সন্সের বিক্রেতা ছিদ্দিক আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার রাতে খাতুনগঞ্জ থেকে পেঁয়াজ কিনে এনেছি ৭০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন ও শ্রমিক খরচ বাবদ কেজি প্রতি আমাদের ৮৫-৯০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন আড়তে দাম কমলেও আমরা তো লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে পারবো না।
নগরীর খাতুনগঞ্জের আড়তে গত সোমবার রাত পর্যন্ত ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৪৫টাকা কেজি দরে। মাত্র ৮ ঘন্টার ব্যবধানে মঙ্গলবার সকাল থেকে পাইকারি বাজারে হু হু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। দাম চড়ে যায় ৭০ টাকায়। অপরদিকে সোমবার রাত পর্যন্ত নগরীর খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল কেজি প্রতি ৫০ টাকা। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়াতে পরদিন পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
দক্ষিণ ভারতে বন্যায় পেঁয়াজের খেত নষ্ট হবার অজুহাতে সপ্তাহখানেক আগে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম ২৫ থেকে একলাফে ৫০টাকা বেড়ে যায়। সংকটের কারণে ভারত সোমবার রাতে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে।