সুপ্রভাত ডেস্ক :
খাবার যে আমরা শুধু স্বাদের জন্য খা তা তো নয়, খাবার দরকার শরীরে শক্তি জুগিয়ে সচল রাখার জন্য। তাই নির্দিষ্ট সময় পরপর খাবার খেতে হয়। আর দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকলে তখন ক্ষুধার অনুভূতি হয়। ক্ষুধার এই অনুভূতির মাধ্যমে শরীর জানান দেয় যে জ্বালানির প্রয়োজন পড়েছে। ক্ষুধা লাগার পরেও না খেয়ে থাকলে তখন ক্লান্ত ও অবসন্ন লাগতে শুরু করে।
তবে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার পরেও যদি ক্ষুধার অনুভূতি না হয়, তবে তা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। কারণ ক্ষুধার অনুভূতি না থাকা গুরুতর শারীরিক সমস্যার পূর্বাভাস হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে খাকলেও ক্ষুধা না পাওয়ার কিছু কারণ ও প্রতিকার প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া-
যদি কোনো কারণে খুব উদ্বেগে, চিন্তাগ্রস্ত হয়ে থাকেন, তাহলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। কারণ উদ্বেগ আমাদের শরীরে এমন কিছু হরমোন নিঃস্বরণ করে, যার ফলে খাবার হজম হতে দেরি হয় এবং স্বাভাবিক ভাবে ক্ষুধাও সহজে পায় না।
অবসাদগ্রস্ত হয়ে থাকলেও সহজে ক্ষুধা পেতে চায় না। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যারা অবসাদগ্রস্ত, তাদের মস্তিষ্কের কোনো কোনো অংশ ভিন্নভাবে কাজ করে। এই কারণেই প্রভাব পড়ে ক্ষুধার অনুভূতির ওপর।
কোনো কারণে মানসিক চাপে থাকলে তার প্রভাব অ্যাপেটাইটের ওপর পড়তে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে অবশ্য স্ট্রেসের কারণে ক্ষুধা বেড়ে যায়। তবে সাধারণত দেখা যায় স্ট্রেসের কারণে খাওয়ার ইচ্ছে চলে যায়।
শারীরিক অসুস্থতা থাকলেও কিছু খেতে ইচ্ছে করে না। বিশেষ করে সর্দি-কাশি-জ্বর হলে ক্ষুধা পাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমে যায়। সর্দি হলে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাবারের গন্ধও পাওয়া যায় না। খাবারের গন্ধ পাওয়া না গেলে ক্ষুধার অনুভূতি কমে যায়।
গর্ভাবস্থায় অনেকের ক্ষুধা কমে যায়। আবার অনেকের কোনো কোনো খাবারের প্রতি নিরাসক্তি আসে। এমনকি সেই খাবার খেলে বমি পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় বদহজমের সমস্যাও অনেকের দেখা যায়। সেই কারণেও অনেক সময় খেতে ইচ্ছে করে না।
অনেক সময় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে ক্ষুধার অনুভূতি চলে যায়। কোনো ওষুধের প্রভাবে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। ক্যান্সারের মতো অসুখের ক্ষেত্রে রেডিয়েশন এবং কেমোথেরাপি চললেও খাওয়ার ইচ্ছে চলে যায়।
এক্ষেত্রে করণীয় :
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার পরেও যদি আপনি ক্ষুধার্ত বোধ না করেন, তবে ক্ষুধা বাড়ানোর কিছু উপায় মেনে চলতে পারেন-
সুস্বাদু খাবার
বিভিন্ন ভেষজ এবং মশলা দিয়ে খাবার রান্না করুন। খাবার যত বেশি স্বাদযুক্ত হবে, আপনার ক্ষুধা জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। এইভাবে আপনার ইন্দ্রিয়গুলো খাবার খেতে এবং স্বাদ গ্রহণের অপেক্ষায় থাকবে।
বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার
ক্ষুধার্ত না হলে নিজেকে জোর করবেন না। এর পরিবর্তে বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার অল্প অল্প করে খাওয়া যেতে পারে। যাতে আপনি শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি পূরণ করতে সক্ষম হন।
পছন্দের খাবার খান
কখনো কখনো, আপনার এই মুহূর্তে যা খেতে মন চায় কেবল তা খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি এটি খুব স্বাস্থ্যকর খাবার না হলেও এ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না। একবার আপনার ক্ষুধা ফিরে এলে আপনি ডায়েট পরিচালনায় মন দিতে পারবেন।
এলার্ম সেট করুন
ক্ষুধা না পাওয়ার কারণে খাওয়ার কথা মনে থাকে না অনেকের। তাই অনেকের ক্ষেত্রে এলার্ম সেট করে নেয়া জরুরি। আপনিও এমন সমস্যায় ভুগলে খাওয়ার সময়সূচি মেনে চলার চেষ্টা করুন।
খবর : জাগোনিউজ’র।
ফিচার দেউড়ি