নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গারা দ্রুত প্রত্যাবাসনের দাবিতে ক্যাম্পে ক্যাম্পে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। মিয়ানমারে নিজেদের বসতভিটায় ফিরে যেতে রোহিঙ্গারা কয়েকটি দাবি তোলে।
মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করার দাবিতে সমাবেশ করেছেন কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গারা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে উখিয়া-টেকনাফের ১৩টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হাতে নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যার ভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছি। বাংলাদেশ সরকার মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে, যার জন্য রোহিঙ্গারা কৃতজ্ঞ। এখানে ছয় বছর ধরে ক্যাম্পে বন্দি জীবনযাপন করছি। আমরা দ্রুত মিয়ানমারে নিজ ভিটায় ফিরতে চাই।’
দ্রুত স্বদেশে (মিয়ানমারে) ফিরে যেতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করে টেকনাফের জাদিমুড়া শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা বজলুল রহমান বলেন, ‘আমরা আর বাংলাদেশে থাকতে চাই না। দ্রুত নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই।
আমাদের নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা এবং চলাচলের স্বাধীনতাসহ নিজ গ্রামের ভিটেমাটি ফেরত দিলে এই মুহূর্তে চলে যাব মিয়ানমারে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) খালিদ হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গারা দ্রুত প্রত্যাবাসনের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। সেখানে মিয়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গারা কয়েকটি দাবি তোলে।’
এ ব্যাপারে টেকনাফে ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপঅধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মুহাম্মদ জামাল পাশা বলেন, ‘মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবিতে আমার ক্যাম্পে ৫টি জায়গায় ৭ হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অংশ নিয়েছে।’
এদিকে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘আমরা আর শরণার্থী জীবন চাই না। সামনের দিনগুলোতে আমরাও আমাদের জন্মভূমি আরাকানে (রাখাইন) জীবনযাপন করতে চাই। বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের দেশে ফেরার ব্যাপারে যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই এখানে ছিল আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা।