নিজস্ব প্রতিবেদক »
সরকারের ২৩১ কোটি ১৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড (কেএসআরএম)। সম্প্রতি ওই কারখানায় অভিযান চালিয়ে জব্দ নথি পর্যালোচনা করে ভ্যাট ফাকির তথ্য উদঘাটন করে চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। গতকাল শনিবার বিষয়টি গণমাধ্যমে জানানো হয়।
জানা গেছে, গত ২২ জুন সীতাকুন্ড উপজেলার বড় কুমিরার ঘোড়ামারা এলাকায় কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেডে অভিযান চালায় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের নিবারক দল। কেএসআরএম স্টিল দীর্ঘদিন ধরে যথাযথভাবে মূসক পরিশোধ না করে ফাঁকি দেওয়ার সংবাদে এ অভিযান পরিচালনা করে। এসময় বেশকিছু নথিপত্র ও দুটি কম্পিউটরের সিপিইউ জব্দ নিয়ে আসে অভিযানকারী দল। প্রায় ২৪ দিন ধরে পর্যালোচনার পর ভ্যাট ফাঁকির চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ১৮ লাখ ৭৪ হাজার ৩৭৬ মেট্রিক টন এমএস পণ্য বাজারে সরবরাহ করে। এর বিপরীতে ১৮৮ কোটি ৭১ লাখ ৪৬ হাজার ৫১৪ টাকা সরকারি মূসক পরিশোধের কথা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি পরিশোধ করেছে ১০৩ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ৮১৭ টাকা। এতে ৮৫ কোটি ২৯ লাখ ১৫ হাজার ৬৯৫ টাকা পাওনা থাকে সরকার।
অন্যদিকে কাঁচামাল ক্রয়সহ সকল কেনাকাটার বিপরীতে মূসক কর্তনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানেনি কেএসআরএম। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ক্রয়ের বিপরীতে উৎসে মূসক কর্তনের কোন দলিলাদি উপস্থাপন করতে পারেনি। ৪ বছর ৫ মাসে ১৯ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮৭ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন কাঁচামাল ক্রয় করা হয়। এসব পণ্যের বিপরীতে উৎসে মূসক ১৪৫ কোটি ৮৭ লাখ ৬৮ হাজার ৭৮৪ টাকা পরিশোধ করেনি। মূসক ও উৎসে মূসক মিলে সর্বমোট ২৩১ কোটি ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৪৮০ টাকা ফাঁকি দেয় কেএসআরএম।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের উপকমিশনার আহসান উল্লাহ তরুণ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ২৩১ কোটি টাকা বড় ধরনের রাজস্ব ফাঁকি। রাজস্ব ফাঁকি রোধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। ।
কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, কেএসআরএম দীর্ঘদিন ধরে যথাযথভাবে মূসক পরিশোধ না করে নিয়মিত ফাঁকি দিয়ে আসছিল। নিবারক দলের তল্লাশি এবং তদন্তে বিশাল ফাঁকির তথ্য ওঠে আসে। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুতই কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হবে। সমপরিমান জরিমানা ও সুদসহ ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে কেএসআরএমকে। এ বিষয়ে কোন ধরনের শৈথিল্য প্রদর্শন করা হবে না। তিনি বলেন, বিগত কয়েক মাসে চট্টগ্রাম ভ্যাট এ জাতীয় বেশকিছু অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা উদঘাটন করেছে। যারা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।