সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিয়ের নামে প্রতারণা করে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুনের মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (০৪ মে) রাতে নগরীর বায়েজিদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আলী আকবরের (২৯) বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার ডলু গ্রামে। খুনের শিকার ১৪ বছর বয়সী কিশোরী একই উপজেলার ভুজপুর থানার সৈলকুপা গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে। ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ভুজপুরের বাদুরখীল গ্রামে একটি পাহাড় থেকে কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর সারাবাংলা।
র্যাব-৭ এর সদর ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, আকবর বিবাহিত ছিলেন। কিন্তু সেটা গোপন রেখে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ২০১৫ সালে ১০ নভেম্বর সে মেয়েটিকে বিয়ে করেন। মেয়েটির বাবা ছিলেন গরীব কৃষক।
‘নোটারি পাবলিকের কাগজপত্র দেখিয়ে কিশোরীকে বিয়ের কথা বলেছিল আকবর। বাস্তবে কাগজপত্র ছিল ভুয়া। বিয়ের দুইমাস পর আকবরের চাপে ওই কিশোরী বাবার বাড়িতে গিয়ে স্বামীর জন্য এক লাখ টাকা চায়। কিন্তু কৃষক বাবা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মেয়েটিকে খুন করে আকবর।’
এ ঘটনায় কিশোরীর বাবার ভুজপুর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় ২০১৭ সালে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছিল।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, টাকা না পাওয়ায় আকবর ক্ষুব্ধ হয়ে কিশোরীকে তার বাবার বাড়িতে রেখে দেয়। তার প্রথম স্ত্রী কিশোরীকে নিয়ে আলাদাভাবে বসবাসের তথ্য জেনে যায়। তার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের জন্য আকবরের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আকবর কিশোরীকে খুনের পরিকল্পনা করে। ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি তাকে বেড়াতে নেয়ার কথা বলে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যায় আকবর। ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত তাকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে যায়। ওইদিন সকাল থেকে ২০ জানুয়ারি সকালের মধ্যে কিশোরীকে শ্বাসরোধে খুন করে লাশ তার বাবার খামারবাড়ির পাশে পাহাড়ে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করেন, খুনের আগে অবৈধভাবে স্ত্রী পরিচয়ে নিজের হেফাজতে রাখা কিশোরীকে আলী আকবরের ধর্ষণ করার প্রমাণ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া যায়। এছাড়া খুনের আগে কিংবা পরে কিশোরীর যৌনাঙ্গে ধারালো কিছু দিয়ে জখমের চিহ্নও পাওয়া যায়।
র্যাব কর্মকর্তা মাহফুজ জানান, গত ১৯ মার্চ এ মামলায় আলী আকবরের মৃত্যুদ- দেন আদালত।
হত্যাকা-ের পর পুলিশ আলী আকবরকে গ্রেফতার করলেও পরে জামিনে গিয়ে পলাতক হয়ে যান। বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধরে নগরীর বিভিন্নস্থানে কাজ নিয়ে আকবর এতদিন গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন বলের্যাবের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।