নিজস্ব প্রতিনিধি, কাপ্তাই »
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই, বিলাইছড়ি সহ বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বাঁশের ভালো উৎপাদন হয়। সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলের উৎপাদিত এসব বাঁশ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়। বিশেষ করে কাপ্তাইয়ের অন্যতম আপস্ট্রিম জেটিঘাট থেকে এসব বাঁশ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়।
এদিকে গত জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই তিন মাস বংশ বিস্তার ও প্রজননের জন্য বাঁশ কর্তন ও বিপণনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বনবিভাগ। ৩ মাস পার হওয়ায় গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে কাপ্তাই জেটিঘাটে আবারো বাঁশ পরিবহন চালু হয়েছে।
গতকাল সোমবার কাপ্তাইয়ের ওই আপস্ট্রিম জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি বাঁশ সাজানো হচ্ছে, আবার কিছু বাঁশ ট্রাকে তুলে নেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছানোর জন্য। তবে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এই বাঁশ পরিবহন খাতে। পরিবহনভাড়া বৃদ্ধিতে মাথায় হাত পড়েছে বাঁশ ব্যবসায়ীদের।
বিশেষ করে বাঁশ ক্রয় করতে আসা কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বর্তমানে এই বাঁশ শহরে পৌঁছাতে পরিবহন ভাড়া তাদের দিশেহারা করে ফেলেছে। বাঁশ পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকচালকেরা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি টাকা ভাড়া দাবি করছে। এখন ভাড়া বেশি দিয়েই বাঁশগুলো কিনতে হচ্ছে। এতে তাদের অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাছাড়া বাঁশের দামের চেয়ে পরিবহন ভাড়া গুনতে হচ্ছে অনেক বেশি। পূর্বে তাদের প্রতি ট্রাক বাঁশে ৫০ হাজার টাকা আয় থাকলেও বর্তমানে ১০ হাজার টাকা আয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান। এমন পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে তবে ভবিষ্যতে বাঁশ ব্যবসা থেকে অনেক ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। এতে সরকার রাজস্ব হারাবে এবং পরিবহন শ্রমিক বাস ব্যবসায়ীরা বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
অপরদিকে বাঁশ পরিবহনে যুক্ত কয়েকজন ট্রাকচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে গাড়ির তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে তারা পোষাতে পারছে না, তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি করতে হয়েছে। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্রাক ভর্তি বাঁশ গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েও তারা তেমন একটা ভালো আয় করতে পারছে না। তেলের দাম যদি আগের মতো কমিয়ে আনা হয়, তবে পরিবহন খরচ অনেকটা কমে আসবে। এতে বাঁশ ব্যবসায়ীরা এবং পরিবহন শ্রমিকেরা কিছুটা আয় করতে পারবে বলে তারা মন্তব্য করেন।