জুয়েল আশরাফ »
আজ থেকে রিয়াজের পারিবারিক দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। পরিবারের একমাত্র উপার্জক্ষম ব্যক্তি সে। কাজে মন ব্যস্ত না, বারবার চোখ উঠছে দেয়াল ঘড়িটার দিকে। অফিস বন্ধ হতে এখনও আধঘণ্টা বাকি। আজ সময় যেন কিছুতেই কাটছে না। মনে হচ্ছে যেন একজন মানুষ মরুভূমিতে পানির পিপাসায় ছুটছে, সে দৌড়ে নেমে শীতল পানি পান করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ বসের কর্কশকন্ঠ শোনা গেল।
বেতন নেবেন না?
রিয়াজ ঘাবড়ে গেল। সে মাথা তুলে তাকাল। সবাই পালাক্রমে বেতন নিচ্ছে। সেও তাড়াহুড়ো করে লাইনে দাঁড়ালো। আজ প্রথমবারের মতো বেতনের পরিমাণ তার হাতে আসার কথা। এতদিন ছোটোখাটো চাকরি করেছে, প্রথমবারের মতো কারখানায় স্থায়ী বস হয়ে বেতনের ঝাঁজালো নোটগুলো পকেটে পুরলো।
অদ্ভুত কোলাহল হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন কিছু ব্যাঙ তার পকেটে লাফাচ্ছে। সে শক্ত করে ধরে রেখে পালাতে চাইল। রিয়াজ জানে পকেটে টাকার ওজন বাড়ানো যাবে না। তবে হ্যাঁ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ঝুড়ি কমাতে হবে। কারণ এই বোঝার দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হয়।
ব্যাঙের কথা মনে পড়তেই ঠোঁটে মৃদু হাসি খেলে গেল। মনে পড়ল তখন তার বয়স দশ-বারো হবে। পাড়ায় শীলা নামে একটা মেয়ে থাকত। সে নিশ্চয়ই তার থেকে চার-পাঁচ বছরের বড় হবে। সবার কল্পনার পরি। ঠিক যেন দুধের মতো ফরসা সাদাপরি। ছেলেরা কোনো না কোনো অজুহাতে তার দিকে তাকিয়ে থাকতো। একদিন শিলা তাকে ইশারা করে। শৈশবে দূর থেকে তাকানোর দুষ্টুমি তার মধ্যে ছিল। কিন্তু কোনো মেয়ে কাছে আসার ইঙ্গিত করলেই গলা শুকিয়ে যেতো। ঘামের ফোঁটা ঝরতে থাকতো। সাহস করে জবাব দিতে চাইলেও পারতো না। বুঝতো আজ সব চাহনি পালিয়ে যাবে। কাছে যেতেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো, আপা আপনি ডেকেছেন?
শিলার মুখের হাসি দেখে একটু খুশিই হলো।
তোমার নাম কী?
আমার নাম?
হঠাৎ প্রশ্ন করায় রিয়াজ নিজের নাম ভুলে গেল। আমতা-আমতা করে বলল, হ্যাঁ, হ্যাঁ আমার নাম …।
রিয়াজের আতঙ্ক দেখে শিলা জোরে হাসতে লাগলো। তার সাদা দাঁতগুলো আভা ছড়াচ্ছিল। হঠাৎ মনে পড়ল নাম তার রিয়াজ। রিয়াজ আহমেদ।
হাসি চেপে শিলা বলল, রিয়াজ, তুমি কি আমার একটা কাজ করবে? প্র্যাকটিক্যালের জন্য আমার একটা ব্যাঙ দরকার। আমি একটা হলুদ ডোরাকাটা রানি ব্যাঙ চাই। তুমি কি পুকুর পাড় থেকে ধরে আনবে?
হ্যাঁ আপা, আমি নিয়ে আসবো।
এটা সব বালকদের প্রভাবিত করার একটি ভালো সুযোগ। সন্ধ্যা নাগাদ দুটি ব্যাঙ ধরে রিয়াজ। একটি ব্যাঙ প্যান্টের পকেটে রেখে অন্যটি হাতে ধরে শিলার কাছে পৌঁছাল।
রাতে যখন বাবার লাঠি তার পিঠে পড়ল, তখন কী হল বুঝতে পারল না। পরে জানা গেল, মা রাতে ধোয়ার জন্য তার পেন্ট বের করলেন। হঠাৎ পকেটে খুব ভারী কিছু টের পেলেন। মা ভেবেছেন, রিয়াজ কিছু চুরি করে পকেটে রেখেছে। পকেটে হাত দিয়ে জিনিস বের করতেই মা চিৎকার করে ভয়ে সিঁড়ি থেকে নিচে পড়ে গেলেন। শিলার নায়ক হওয়ার ভাবনায় রিয়াজ ভুলে গিয়েছিল যে পকেটে একটি ব্যাঙ রেখে দিয়েছে।
কৈশোরের সেই নিষ্পাপ ভালোবাসা কবেই মরে গেছে।
রিয়াজ তখন কলেজে ফাইনাল ইয়ারে। একদিন কলেজ থেকে ফিরে পাশের বাড়ির এক মেয়ের খিলখিল হাসির আওয়াজ শুনতে পেল। এই বাড়িটি কয়েক মাস ধরে খালি ছিল। সম্ভবত একজন নতুন প্রতিবেশী এসেছে। তার মন কৌতূহলে ভরে গেল। কার কণ্ঠ এত মধুর! মা চা নিয়ে এলে রিয়াজ জিজ্ঞেস করল, মা! পাড়ায় কেউ এসেছে?
মা বললেন, তালুকদার পরিবার এসেছে। তাঁদের একটি মেয়ে আছে। সেদিন সন্ধ্যায় রিযাজ সেখানে যাওয়ার জন্য কিছু না কিছু অজুহাত খুঁজতে থাকে। কিন্তু বুঝতে পারে না কি করবে। ঠিক তখনই ডোরবেল বেজে উঠল। সে দ্রুত দরজা খুলল। তার সামনে একটি সুন্দরী মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে দরজায় দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকাল। মনে হলো যেন তার হৃদয়ঘরের দরজার বেল বেজে ওঠেছে। চোখের সামনে বারবার পলক ফেলতে গিয়ে বলে উঠলো মেয়েটি, আমি রিতা, তোমাদের পাড়ায় থাকতে এসেছি, চাচি কোথায়?
রিয়াজ এক মুহূর্ত ইতস্তত করে বলল, চাচি! এখানে কোনো চাচি নেই। বলতেই ভেতর থেকে মায়ের আওয়াজ এলো, কে রে?
রিতা রিয়াজের পাশ কেটে ভেতরে চলে গেল।
চাচি, আমি রিতা। আমাদের বাড়িতে দুধ পুড়ে গেছে। আপনি যদি আমাকে এক কাপ দুধ দিতে পারেন …।
কেন দেব না মা?
মা রিয়াজকে ডাকলেন। রিয়াজ, বাবা, আমার হাতে ময়লা, তুই রিতাকে দুধটুকু দে।
রিয়াজ তৎক্ষণাৎ রান্নাঘরে গিয়ে কাপে দুধ দিতে লাগল। তার চোখ তখনও রিতার দিকে। কাপভর্তি করার পর দুধ নিচে পড়তে লাগল। রিতা হাসতে হাসতে দুধ নিয়ে চলে গেল। জানে না কী ঘটেছিল। তবে ভেতরে ভেতরে ঘটনা ঘটেছে। রিতাকে বারবার মন দেখতে চাইত।
একদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছে। রিয়াজ কলেজ থেকে ফিরছে। রাস্তা পানিতে ডোবা। সাইকেল চালাতে গিয়ে সে পর্দা সরিয়ে রিতাকে উঁকি দিল, তার মানে সেও তার আসার অপেক্ষায় ছিল। তার দিকে তাকাতেই সে ভুলে গেল তার সামনে একটি পানির কলের গর্ত আছে। সাইকেলসহ তাতে পড়ে যায়। রিতা সাথে সাথে ছুটে এসে উঠতে সাহায্য করল। রিয়াজের জীবন বদলে গেল। সে সবেমাত্র প্রেমের প্রথম স্তরে আরোহণ করেছে। এরই মধ্যে বাবা বদলি হলেন। রিয়াজ চলে যাওয়ার সময় অশ্রুসজল চোখে রিতার দিকে তাকিয়েছিল।
পকেট শক্ত করে চেপে ধরল রিয়াজ। সারা শরীরটা একটু গরম লাগছে! বাড়ি এখনও দুই কিলোমিটার দূরে। প্রথমে বাবার চশমাটা ঠিক করতে হবে। কিছুদিন আগে বাজারে সবজি আনতে গিয়ে অটোরিকশা থেকে পড়ে চশমার একটা লেন্স ভেঙে ফেলেছে। বাবা মিথ্যা বলেছে তার কিছুই হয়নি। রিয়াজ পরে অনুভব করল যে বাবার হাত ও নিতম্বে ব্যথা। প্রথমে দারিদ্র্যের হিসাব করে দেখা গেল, পাঁচ শ টাকার চশমা ভেঙে গেছে।
বাড়িতে বাবা-মা, ছোটো বোন ও স্ত্রী রিতা। চাকরির চিঠি আসতেই বাবা বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন। চাকরি পাওয়ার সাথে সাথে মা রিতার পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।
বাবার সীমিত পেনশন। রিয়াজের আয় এতটা না যে সম্পূর্ণভাবে পা ছড়িয়ে কম্বল ঢেকে রাখতে পারে। কিন্তু সে একটি হিসাবের বন্দি জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়েছে বা তাকে অভ্যস্ত হতে হবে।
রিতা, তুমি অনেক ভালো ছেলে পেতে পারতে কিন্তু কেন তুমি আমাকে বেছে নিলে?
তখন রিতা ওর ঠোঁটে হাত রেখে বলে, আমি তোমাকে চেয়েছিলাম, এখন যদি তুমি আরও ভালো চাকরি পাও, তবে ধীরে ধীরে এই বাড়িটি স্বর্গে পরিণত হবে।
সন্ধ্যা যখন ঘনিয়ে আসে রিতা সারাদিন বাবা-মা আর বাড়ির কাজ করে এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়ে যায় যে বুকে মাথা রেখে চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ে। রিয়াজ তার বিক্ষিপ্ত চুল নিজের হাতে সামলাতে চায়, তাকে সব সুখ দিতে চায়। কিন্তু স্বপ্নের জগত এত সহজে কোথায় তৈরি হয়।
রিতাও বাড়িটাকে নিজের মতো করে নিয়েছে। সে রিয়াজকে কখনও বুঝতে দেয় না যে, তার চাহিদা মেটাতে পারছে না! আশেপাশের সুসজ্জিত নারীদের পাশ দিয়ে যেতে দেখলে মনে মনে একটা যন্ত্রণা পায় রিয়াজ। ভাবে, আমার রিতাও যেন এমন পোশাক পরে বের হয়!
সন্ধ্যায় ফিরলে চোখে কাজল থাকুক, ঠোঁটে লালিমা আর হাসি, আশার ডানা মেলে বসে থাকুক। রিয়াজও সেগুলো চায়, কিন্তু আকাক্সক্ষার কম্পাঙ্ক আছে, কিন্তু তা পূরণ হবে কবে?
সেদিন সন্ধ্যায় সবাই ঘুমিয়ে যাওয়ার পর রিতা ঘরে এসে বলল, এবার যখন তোমার বেতন পাবে তখন আমরা মেলায় যাবো। আমিও কিছু ছোট জিনিস কিনবো। আর হ্যা,ঁ কোনার দোকান থেকে সমোসা খাবো। যখনই ওদিকটায় যাই, একটা ভালো গন্ধ আসে।
একবার ওর মুখটা দেখল রিয়াজ। জানালা থেকে আসা চাঁদের আলোয় ওর মুখটা ঝলমল করছে। তৃপ্তির কোল ঢেকে সে ঘুমিয়েছে। রিয়াজ ঘুমাতে পারে না। রিতার মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবে, কী অদ্ভুত মাটির মানুষ, আমার সুখে সুখী, আমার দুঃখে দুঃখী!
সন্ধ্যা। চারিদিকে স্ট্রিট লাইট জ্বলে ওঠেছে। রিয়াজ বাড়িতে ঢুকল। কয়েক জোড়া চোখ দরজায় দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টি মেলে অপেক্ষা করছে। মা-বাবা তাদের বাবা-মা হওয়ার অধিকার নিয়ে, রক্তবন্ধনের সুতোয় বাঁধা বোন এবং ভাই। তাদের পেছনে দুটি চোখ দাঁড়িয়ে আছে প্রথম বেতন নেওয়ার অপেক্ষায়, স্ত্রীত্বের অধিকার। যে নোটগুলো দরজার বাইরে ভেসে বেড়াচ্ছে, আর রিয়াজ পকেট শক্ত করে ধরেছে, সেগুলো সামনে দাঁড়িয়ে অধিকারের যুদ্ধে হেরে পকেটের কোণে লুকিয়ে রেখেছে! হাত-মুখ ধুয়ে ব্যাগটা তুলে নিয়ে রিতার সঙ্গে রেডি হয়ে হাঁটতে লাগল।
বোঝা যদি খুব ভারী হয়ে যায়, রিয়াজ ভাবল কী করবে। সম্ভবত রিতাও স্বামীর প্রথম বেতনের কিছু অংশের অধিকারী। এবং সম্ভবত সে তার বন্ধুবান্ধব আর প্রতিবেশীদের দেখাতে চায় যে সেও একজন চাকরিজীবীর বউ, তাদের মতো সেও বাজারে যাবে। তারা কী সব মার্কেটিং করে? আমিও করতে পারি।
বাবার চশমা, মায়ের ওষুধ, ভাইবোনের পড়াশোনার খরচ আর সংসার খরচ নিয়ে বাবা ফিরে যাবেন। রিয়াজ মাথা নিচু করে হাঁটে। এখন রিতাকে মেলায় নিয়ে যাওয়ার মতো টাকা নেই। সে আত্মনিন্দায় ডুবে চুপচাপ হাঁটছে। রিতা তার বাধ্যতা বুঝতে পেরেছে। সম্ভবত স্ত্রীদের একটি বিশেষ জ্ঞান আছে, এমনকি না বলা শব্দগুলোকেও স্বীকৃতি দেয়। সে হেসে বলল, শোনো, মেলায় আজকাল এত ভিড়, ভিড় দেখে আমি সত্যিই ভয় পাই। আমরা আরেকদিন আরামে মেলায় যাব। তাহলে আজ তাড়া কিসের। এই মাসে বাবার চশমা কিনতে চাইলে তুমি। ভালো চশমা কিনে দিও। কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করবে না।
রিতা আলতো করে রিয়াজের হাতের আঙ্গুল স্পর্শ করল। কাঁপতে কাঁপতে, কিছু না পারার আকুলতা রিয়াজকে ছুঁয়ে বেরিয়ে এলো। কেন জানে না চোখের কোণ থেকে জবরদস্তির মেঘে ঢাকা কয়েক ফোঁটা জল বেরিয়ে গেল। মিথ্যে হাসি দিয়ে রিতার দিকে তাকাল। ওল্টোদিকের মুরগিভাজা দোকানটা এসে পড়েছে। সঙ্গে সামোসা ভাজার ভেজা গন্ধও! হঠাৎ রিতা বলল, জানি না কেন আজ পেটে ব্যথা হচ্ছে। চলো তাড়াতাড়ি বাসায় যাই।
রিয়াজ বুঝতে পারে হয়তো রিতা তাকে অপমান থেকে বাঁচাতে চায়, তাই সে অজুহাত দিচ্ছে। একবার গোপনে প্যান্টের পকেটে হাত দিল। আঙুলের ডগার শেষে নোটটি আঘাত করল, বিশ টাকার নোট। রিতা কিছু বোঝার আগেই দোকানে গিয়ে রিয়াজ জিজ্ঞেস করল, সমোসার দাম কত?
দোকানদার বলল, এক পিস দশ টাকা।
রিয়াজ কিনে নিয়ে চমকে ওঠা রিতার দিকে ছুটে গেল। আর ওর হাত ধরে পাশের খালি টুলটায় বসে ওর দিকে গরম সামোসা বাড়িয়ে দিল।
যে ভালোবাসা রিতার চোখে প্রতিফলিত হচ্ছে, যে তৃপ্তি তার মুখে ফুটে উঠেছে, মনে হচ্ছে যেন সারা পৃথিবীর সুখ তার পকেটে রেখেছে। সে হাসছে। তার দাঁতের রেখা শিলা আপার মতো সাদা আভা ছড়াচ্ছে।
মুখের রং হয়তো খাঁটি সাদা নয়। কিন্তু আজ যে আভা ফুটে উঠছে তা সত্যিই শিলা আপাকেও হার মানিয়ে গেছে। রিয়াজের স্বপ্নের পরি আজ তার সোনালি ডানা মেলে ঠাট্টা করে খেলছে। সত্যিকার অর্থে ভালোবাসায় টাকার মূল্য হারিয়ে যায় আর অনুভূতি অমূল্য! মনে মনে রিয়াজ অনুভব করল, জীবনের এই মুহূর্তগুলো সে যাপন করছে। এগুলো হয়তো অর্থপানে মগ্ন মানুষ অনুভব করতে পারে না। রিয়াজ নিজের হাতের তালু প্রসারিত করে তার মুখ ঢেকে রাখল। এই মুহূর্তগুলো কেউ দেখুক, সে চায় না! এই সময় চিরতরে থেমে যাক। তার অঞ্জুরিতে এই সুখের মুহূর্তগুলো চিরকাল ভরিয়ে দিতে চায়। এই মুহুর্তে মনে হলো বসন্তের বাতাস চারিদিকে প্রেমের সুবাস নিয়ে মৃদুভাবে বইছে আর সে প্রেমের স্রোতে ডুবে গেছে। কোথাও একটা গান বেজে উঠল, মেঘ ঢাকা চাঁদ হোক না, তবু তো এক টুকরো জোছনা।