চারদিকে মানবিক বিপর্যয়। করোনায় পাল্টে গেছে চেনা পৃথিবী। সে প্রভাব পড়েছে করোনাক্রান্ত ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত লাশের দাফন ও সৎকার কার্যক্রমে। মৃত মানুষটি পাচ্ছেন না ধর্মীয় ও মানবিক শেষ বিদায়। এ নির্মম পরিস্থিতিতে মৃত ব্যক্তিকে সম্মানজনক শেষ বিদায় জানাতে এগিয়ে এসেছে ‘কোয়ান্টাম’। গত ৭ এপ্রিল থেকে কোয়ান্টাম স্বেচ্ছাসেবকদের লাশ দাফন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফাউন্ডেশনের তিন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক, সারাদেশে মরদেহ দাফন ও সৎকারে কাজ করছে।
চট্টগ্রামে এ কার্যক্রম শুরু হয় ২৩ মে থেকে। এ পর্যন্ত ৩০টি লাশের দাফন ও সৎকার করা হয়। এর মধ্যে মুসলিম ২০, সনাতন ৭, বৌদ্ধ ধর্মের ৩ জন। পুরুষ ২৫ ও নারী ৫ জন।
চট্টগ্রামে দাফন সেবা কার্যক্রমের সমন্বয়কারী কামরুল হাসান সবুজ বলেন, ‘একটা সময় ছিল কাফনের কাপড় দেখলেই অস্বস্তি ও ভয় কাজ করত। মানবতার বিপর্যয়ের এ সময়ে আমাদের শিক্ষক আহ্বান জানালেন, এখন আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। তখন সমস্ত ভয়, দ্বিধা ঝেড়ে প্রশিক্ষণে যাই। এখন ভয়তো নেই বরং এক অপার্থিব আনন্দে স্নাত হচ্ছি। অধিকাংশ সময় লাশের পাশে রক্তের স্বজন ও থাকে না। তখন খুব খারাপ লাগে মৃতের জন্য। আবার কখনো মৃতের আত্মীয়রা দূর থেকেই কৃতজ্ঞতা জানায়।’
সৎকার কার্যক্রমের আহ্বায়ক দেবাশীষ পাল দেবু বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করছি অদৃশ্য শত্রুর সাথে। মুক্তিযুদ্ধের সময় শত্রু ছিল দৃশ্যমান। তবুও মানুষ মানুষের পাশে ছিল। আর লাশ সৎকারে যাচ্ছি বলে পরিচিত অনেকেই ভয়ে আমাদের কাছে আসে না।’
এভাবেই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের নিবেদিত প্রাণ কর্মীরা সারা দেশে নিরলসভাবে করোনাক্রান্ত ও করোনা উপসর্গে নিহত মানুষটিকে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন তার প্রাপ্য সম্মানে। কাজ শেষে পরনের পিপিইসহ অন্যান্য পরিধেয় বস্ত্র সাথে সাথেই পুড়িয়ে ফেলা হয়।
চট্টগ্রাম সেন্টারের অর্গানিয়ার কো-অর্ডিনশন এস এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, ‘এটি আমাদের মানবিক দায়িত্ব। প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে শেষ যাত্রায় যথাযথ সম্মান পাওয়ার। দাফন ও সৎকারের পুরো খরচ কোয়ান্টামের স্বেচ্ছা অর্থায়নেই সম্পন্ন হচ্ছে।’ বিজ্ঞপ্তি
মহানগর