সুপ্রভাত ডেস্ক :
আতঙ্কের নাম কোভিড-১৯। বাইরে বেরোলেই সংক্রমণের আশঙ্কা। এ দিকে বাড়িতে রোজ একটানা বসে থাকলেও মুশকিল। ‘গল্প হলেও সত্যি’র ছায়া দেবীর মতো আপনিও বলে উঠবেন, ‘বসে বসে গেঁটে বাত ধরে গেল।’ তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে হাঁটা-চলা করতেই হবে। বাড়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কিন্তু পার্কে কিংবা রাস্তায় একটানা হেঁটে যে ফল পাওয়া যেত, ছাদে কিংবা এক ফালি বারান্দায় বার বার হেঁটে সেই ফল মিলবে কি?
হাঁটাচলা করলে, বিশেষত দ্রুত গতিতে হাঁটতে পারলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, বলছেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে তো একই নিয়ম খাটবে না। তা হলে?
তবে একটানা লম্বা হাঁটার বদলে স্টপ-স্টার্ট পদ্ধতি অনেক বেশি জরুরি। এমনকি সেটা ছাদ কিংবা ফ্ল্যাটের স্পেস হতেই পারে। এমনই বক্তব্য ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়ের। তার মত, ‘হালকা গতিতে অনেক ক্ষণ রাস্তায় হাঁটাচলা করলে লাভ নেই। বরং এক মিনিট জোরে তার পর তিরিশ সেকেন্ড আস্তে হাঁটলে, সেটা ছাদ হোক কিংবা বারান্দা, তা অনেক বেশি ফলপ্রসূ। কিংবা দু’মিনিট অত্যন্ত দ্রুত হেঁটে তিরিশ সেকেন্ড বিশ্রাম, এই পদ্ধতি অবলম্বন করে হাঁটতে পারেন। একটানা পার্কে কিংবা রাস্তায় ৪০ মিনিট হাঁটার বদলে এটি অনেক বেশি কাজে দেবে।’
ছাদে কিংবা ঘরে হাঁটার ক্ষেত্রে যা মনে রাখতে হবে-
– টানা অনেক ক্ষণ হাঁটা বয়স্কদের ক্ষেত্রে নৈব নৈব চ। কারণ হাঁটু তে ব্যথা হতে পারে।
– ক্রনিক হার্ট ডিজিজ না থাকলে যে কোনও বয়সের যে কেউ জোরে হাঁটতেই পারেন।
– কিন্তু তা করতে হবে স্টপ স্টার্ট পদ্ধতি মেনে অর্থাৎ দ্রুত ঘাম ঝরিয়ে এক মিনিট হেঁটে আবার তিরিশ সেকেন্ড ধীর গতিতে হাঁটুন। এ ভাবে বাড়ির ছাদে রোজ মিনিট ১৫ হাঁটলেও তা কাজে দেবে।
– হাঁটা যে কোনও ভাবে, যে কোনও জায়গায় হতে পারে। রাস্তার বদলে ছাদে বিরতি নিয়ে স্টপ স্টার্ট পদ্ধতি মেনে হাঁটা অনেক বেশি কার্যকর।
– তবে শুধু হাঁটাই নয়, এর সঙ্গে আরও একটা প্রশ্ন চিহ্ন রয়েই যাচ্ছে। আবাসনের ছাদ হলে সেখানে তো অন্যরাও উঠছেন। ফলে জমায়েতের সম্ভাবনা। সে ক্ষেত্রে কি মাস্ক পরতে হবে?
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবব্রত রায় বলছেন, যে কোনও এক্সারসাইজের মূল শর্ত ঘাম ঝরাতে হবে। রাস্তায় না বেরিয়ে ছাদে হাঁটলেই সেই ফল মিলবে। কিংবা বাড়িতে কায়িক পরিশ্রমের কাজ করলেও।
কিন্তু মাস্ক পরে দ্রুত গতিতে ছাদে হাঁটা? চিকিৎসকের মত, ‘এক্কেবারে না। দমবন্ধ হয়ে আসছে এমন একটা অনুভূতি তৈরি হবে এবং এটি শরীরের জন্যে ক্ষতিকর।’
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ রামিজ ইসলাম এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই নিয়ে বেশ কিছু গবেষণাপত্র রয়েছে। মাস্ক পরে দ্রুত গতিতে হাঁটলে একটা মাইক্রো ক্লাইমেট তৈরি হয়। এয়ার-ওয়ে অবস্ট্রাকশন অর্থাৎ বাতাস চলাচলে বাধা তৈরি হবে। ফলে হৃদস্পন্দনের হার বেড়ে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ক্রনিক হার্ট ডিজিজ, ক্রনিক লাং ডিজিজ, সিওপিডি, হাঁপানির সমস্যা রয়েছে এমন মানুষ এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে মাস্ক পরে দ্রুত গতিতে হাঁটা একেবারেই উচিত নয়।
খবর : আনন্দবাজার’র।
ফিচার দেউড়ি