নিজস্ব প্রতিবেদক »
‘তারুণ্যের উচ্ছ্বাস’ এর উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী কবিতা উৎসব ২০২৩-এর উদ্বোধনী দিনে সদ্যপ্রয়াত কবি আসাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সুবোধ সরকার বলেন, ‘কবির মৃত্যু নেই। আসাদ চৌধুরী বাংলা কবিতার ইতিহাসে আমৃত্যু বেঁচে থাকবেন তাঁর অসাধারণ সব সৃষ্টিকর্মের জন্যে।’
‘চট্টগ্রাম কবিতার শহর’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাচিক শিল্প চর্চা কেন্দ্র ‘তারুণ্যের উচ্ছ্বাস’ এর উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী কবিতা উৎসব ২০২৩। সপ্তম বারের মতো অনুষ্ঠিত এ আয়োজন উৎসর্গ করা হয়েছে শহীদজায়া, লেখিকা, গবেষক, ও সাংস্কৃতিক সংগঠক পান্না কায়সারের স্মৃতির প্রতি।
গতকাল ৫ অক্টোবর বিকেল ৫ টায় ইস্পাহানি নিবেদিত- এ কবিতা উৎসব উদ্বোধন করেন কবি সুবোধ সরকার। এ সময় তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সদস্যরা ‘একটি কবিতার জন্যে’ শিরোনামে উদ্বোধনী বৃন্দ আবৃত্তি করেন। উদ্বোধনী আয়োজনে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস সভাপতি ভাগ্যধন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদের আহ্বায়ক জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, ইস্পাহানী টি লিমিটেডের উইং ম্যানেজার নূর নবী, শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, সংস্কৃতিজন ডা. আলী আজগর চৌধুরী প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ সভাপতি প্রবীর মহাজন।
উদ্বোধকের বক্তব্যে কবি সুবোধ সরকার বলেন, ‘কবিতার শক্তি অসাধারণ। কবিতাই আমাদের সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে নিতে পারে। এপার ওপারের যে কাটাতারের বেড়া তা ডিঙ্গিয়ে কবিতার মাঝেই সব মিলেমিশে একাকার হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ‘শান্তনু বিশ্বাস স্মৃতি প্রণোদনা ২০২৩’ প্রদান করা হয় সিলেটের মনিপুরী থিয়েটারের মেধাবী তরুণ আবৃত্তি ও অভিনয়শিল্পী জ্যোতি সিনহাকে। অতিথিরা এ সময় জ্যোতি সিনহার হাতে পদক, প্রণোদনার অর্থমূল্য, বই ও উত্তরীয় পরিয়ে দেন। এ পর্বে শান্তনু বিশ্বাসের স্মৃতিচারণ করেন কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল এবং নাট্যজন শুভ্রা বিশ্বাস।
প্রথমদিনের আয়োজনে কবিতার গান পরিবেশন করেন আল তুষি। আবৃত্তি করেন কোলকাতার সৌমিত্র ঘোষ, ঢাকার দেওয়ান সাইদুল হাসান, শাহাদাত হোসেন নিপু। কবিতা পাঠ করেন কবি স্বপন দত্ত, ফাউজুল কবির, সাথী দাশ, আশীষ সেন, কমলেশ দাশগুপ্ত, অভীক ওসমান, রিজোয়ান মাহমুদ, সাজিদুল হক, খালেদ হামিদী, মোহাম্মদ আমানুল্লাহ, বিজন মজুমদার, পুলক পাল, শাহীন মাহমুদ, অনুপমা অপরাজিতা, নিশাত হাসিনা শিরিন, মনজুর কাদের, আলী প্রয়াস ও আজিজ কাজল।
একক আবৃত্তি করেন শুভ্রা বিশ্বাস, রেখা নাজনীন, মশরুর হোসেন, জলি চৌধুরী, শিমুল নন্দী বনকুসুম বড়–য়া, জাভেদ হোসেন, মো. সেলিম ভূঁইয়া, সুপ্রিয়া চৌধুরী, এএসএম এরফান, ইকবাল হোসেন জুয়েল, অনির্বাণ চৌধুরী শাহাদাত হোসেন, শামীমা ইয়াছমিন, উম্মে সিং মারমা, আব্দুল্লাহ ফারুক, রবি ঐশী পাল, অনন্যা চৌধুরী, উম্মে সালমা নিঝুম, ফাইরুজ নাওয়াল দুর্দানা ও অথৈ রহমান।
তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের তিনদিনব্যাপী এ আয়োজনের সহযোগিতায় রয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, টাইটেল স্পন্সর রয়েছে ইস্পাহানী টি লিমিটেড এবং কো-স্পন্সর রয়েছে ম্যাক্স গ্রুপ, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস ও বারকোড রেস্টুরেন্ট গ্রুপ।
আজ উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকাল ৯টায় রয়েছে শিশু প্রহর। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম ৮ আসনের সাংসদ নোমান আল মাহমুদ। শিশু প্রহরে চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের বাইরের ১৪ টি সংগঠনের তিন শতাধিক শিশুশিল্পী একক ও দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করবে। এ পর্বে আরো থাকছে দেশের নন্দিত ছড়াকারদের কণ্ঠে ছড়াপাঠ। বিকেল ৩টায় রয়েছে ঢোলবাদন। এরপর অনুষ্ঠিত হবে জনপ্রিয় কবি সুবোধ সরকারের কবিতা নিয়ে পর্ব ‘মুখোমুখি সুবোধ সরকার’। এদিন সন্ধ্যায় আবৃত্তি করবেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমন্ত্রিত আবৃত্তিশিল্পীরা। কবিতাপাঠ করবেন দেশের নন্দিত কবিরা।