নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁশখালী »
বাঁশখালীর চাম্বল বনবিট অফিসের অদূরে জঙ্গল চাম্বল গ্রামের ধানক্ষেতে এক বন্য হাতি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার রাতের কোন এক সময় হাতিটি মারা গেলে গতকাল শুক্রবার সকালে পাহাড়ে বসবাসকারী লোকজন মৃত হাতিটি দেখতে পান।
এর আগে শনিবার সাতকানিয়া, মঙ্গলবার শেরপুরের শ্রীবরদী এবং বুধবার কক্সবাজারের চকরিয়ায় তিনটি মৃত হাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, হাতি মারা যাওয়া স্থানটি চুনতি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অভায়ারণ্যের আওতাধীন বাঁশখালীর বনবিভাগের জলদী রেঞ্জের চাম্বল ইউনিয়নের জঙ্গল চাম্বল এলাকায়। এর অদূরে চাম্বল বনবিট অফিস। হাতিটি বান্ডু পাহাড়ে কাঁধ রেখে আমির হোসেনের ধানক্ষেতে শরীরের বাকী অংশ রেখে মারা যায়। হাতির পেটের নিচে রক্তক্ষরণের চিহ্ন দেখা গেছে। এর আশে-পাশে হাতিটি ধানক্ষেতে হাঁটার চিহ্নও রয়েছে। শুক্রবার হাতিটির ময়নাতদন্ত করেছেন চকরিয়া সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান ও বাঁশখালী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া।
স্থানীয় কৃষক কামাল, জমির উদ্দিন, শাহ আলম বলেন, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ৩টি হাতির পাল পৃথকভাবে ঘোরাঘুরি করে প্রতিরাতে। এক পালে ৭টি, অপর দুই পালে ৫টি ও ২টি হাতি রয়েছে। মারা যাওয়া হাতিটি ২টি হাতিওয়ালা পালের ১টি হতে পারে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিযোগকারী বলেন, চাম্বল পাহাড়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রায় ৫০ শতাংশ দখল করে কয়েক হাজার অবৈধ ঘর-বাড়ি গড়ে উঠেছে। এসব বনাঞ্চল কতিপয় বনদস্যুরা নিজেদের জায়গার মত করে স্টাম্প করে বিক্রয় করেছে। বিস্তীর্ণ সামাজিক বনাঞ্চলের গাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। এমন কী সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বৈদ্যুতিক লাইনও সঞ্চালিত হয়েছে। ফলে হাতির দল বনাঞ্চলে খাদ্য সংকটে বনের পাশের লোকালয়ে এসে নানাভাবে মারা যাচ্ছে।
বাঁশখালীর বনবিভাগের জলদী রেঞ্জের রেঞ্জার শেখ আনিচ্ছুজ্জামান বলেন, হাতিটির মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের আগে কিভাবে মারা গেছে তা বলতে পারছি না। বন থেকে হাতির পাল লোকালয়ে প্রায় সময় ছুটে আসছে। সেই দলছুট হাতিদের পাহাড়ে ফেরাতে বনবিভাগের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, হাতিটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের ফলাফল পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ উদঘাটন হবে। শারীরিক অসুস্থতা জনিত কারণে নাকি হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।