নগরে কেন্দ্র কম হওয়ায় উপচেপড়া ভিড়
নিজস্ব প্রতিবেদক »
করোনার টিকা গ্রহণের প্রথম দিন গতকাল প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছে।
কেন্দ্র সংখ্যা কম হওয়ায় টিকা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছে শিক্ষার্থীরা। টিকাকেন্দ্রে গিয়ে প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের মুখে পড়তে হয়েছে, পাশাপাশি দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থেকে ভোগান্তিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। আবার কেউ কেউ কেন্দ্রে এসে ফিরেও গেছে।
এদিকে টিকা কার্যক্রম চলাকালীন নগরীতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের।
জানা গেছে, জামালখানের রীমা কমিউনিটি সেন্টার, আগ্রাবাদে আব্দুল্লাহ কমিউনিটি সেন্টার ও চন্দনপুরার হল সেভেন-ইলেভেন-এ ৩টি কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র সংখ্যা কম হওয়ায় একটি কেন্দ্রে একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে টিকা নেওয়ার জন্য যেতে হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল বেশি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীর উপচে পড়া ভিড়। মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্ব নেই। টিকা কেন্দ্রে প্রবেশ জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। কেন্দ্রগুলোর সামনে ছিল দীর্ঘ লাইন। ফলে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ ভোগান্তি। গতকাল চট্টগ্রামে ১২ থেকে ১৮ বছরের শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম চলছে তিন কমিউনিটি সেন্টার ছাড়াও নগরীর ৫টি স্কুলে। শুধু নগরেই ৬৫টি বুথে এ কার্যক্রম চলছে। প্রথম দিন প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করেছে।
কমিউনিটি সেন্টারে টিকা নিতে অনেক দূর থেকে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসতে হয়েছে। এই কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার জন্য কাপ্তাই, হালিশহর, এ কে খান থেকে এসেছে অনেকেই। বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এর ছাত্র সায়েম ও রাহাত বলেন, রাহাত্তারপুল থেকে এসেছি। দীর্ঘ লাইনে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে টিকা নিয়েছে। টিকা নিতে এসে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ বোধ করায় চলে যায় গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পাশ করা হাসান।
প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে অভিভাবকদেরও। তারা জানান, মাত্র তিনটা কেন্দ্র। এতে তো ভিড় হবেই। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন তো হবেই। সিডিএ গার্লস স্কুলের এর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মাহবুবুল আলম সুপ্রভাতকে বলেন, ‘এই ভিড়ের কারণে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তাই স্বল্প ¯ু‹ল নির্ধারণ করে দিয়ে টিকা দেওয়া উচিত ছিল। অথবা প্রতিটি থানা ভিত্তিক টিকাদান কেন্দ্র করা করা গেল এত ভিড় হতো না। টিকা নিতে এসে করোনা আক্রান্ত হলে বা সংক্রমণ বাড়লে তো টিকা নেয়ার কোন ফায়দা নেই।’
টিকা কেন্দ্রগুলো ভিড়ে বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদুল হোসাইনী জানায়, টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ভিড় ছিল। জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন। প্রয়োজনে প্রতিদিন টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে তার অর্ধেক করা হবে।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী এবং উপজেলাগুলোতে ৫০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্র্থী টিকা দিয়েছে। যারা টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় আসবে না, তাদের ক্লাসে আসতে দেওয়া হবে না।
তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ১ নভেম্বর থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। ১২ বছর থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী এ টিকা নিতে পারছে। এই বয়সসীমার শিশুর সংখ্যা ১ কোটি এবং তাদের টিকার আওতায় আনার জন্য ২ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন। অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এক নির্দেশনায় ১৫ জানুয়ারির মধ্যে করোনা প্রতিরোধে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ১২-১৮ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীর টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করতে বলেছে।