সুপ্রভাত ডেস্ক »
নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে নাগরিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সব ধরনের উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে তিনি সবাইকে কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান। খবর বিডিনিউজের।
শনিবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির মধ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় তার এ ভাষণ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়।
ভোটকে ঘিরে নাশকতা ও সহিংসতার কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন সিইসি। এরপরও অলংঘনীয় সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে ভোট আয়োজনের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন কেবল ভোট গ্রহণ শুরুর অপেক্ষা।
পরিতাপের বিষয় নাশকতা ও সহিংসতা একেবারেই হচ্ছে না তা বলা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় ধন-সম্পদের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি মানুষ আহত-নিহত হচ্ছে। নির্দোষ, নিরীহ, নিষ্পাপ শিশু, নারী, পুরুষের মর্মান্তিক ও মর্মন্তুদ মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
তিনি বলেন, নাশকতা ও সহিংসতার কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তারপরও অলংঘনীয় সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে জনগণকে অনুরোধ করছি আপনারা সকল উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করে মূল্যবান নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন।
সকল প্রার্থী ও ভোটারদের নির্বাচন বিষয়ক বিধি-বিধান অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তাকেও আইন ও বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুধাবন, প্রতিপালন ও প্রয়োগ করে সততা ও নিষ্ঠার সাথে নির্বাচন পরিচালনার সার্বিক বিষয়ে আরোপিত দায়িত্বপালন করতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলা, শৈথিল্য, অসততা ও ব্যত্যয় সহ্য করা হবে না।
কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশিশক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা তাৎক্ষণিক বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ সামগ্রিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। জনগণকেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল প্রকারের নির্বাচনি অনিয়ম-অনাচার প্রতিহত করার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রচার শেষ হয়েছে। ভোটের সামগ্রী পৌঁছে যেতে শুরু করেছে কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রে। বেশির ভাগ কেন্দ্রে ব্যালট যাবে ভোটের দিন সকালে।
এর আগে ১৫ নভেম্বর শনিবার তফসিল ঘোষণার জন্য জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণ দিয়েছিলেন সিইসি।
সেদিনও তিনি সব দলকে ভোটে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আর ভোটে আসেনি। শেষ পর্যন্ত ২৮টি দল ভোটে অংশ নিচ্ছে, মোট প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ৯৭০ জন। এবার অনেক স্বতন্ত্রও অংশ নিচ্ছেন।
তবে সব দল ভোটে না আসায় ভোটে সেরকম রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না মন্তব্য করে শনিবার সিইসি বলেন, নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিগত প্রশ্নে মত-বিরোধের কারণে এবারের নির্বাচনে কাক্সিক্ষত নির্বাচনি সার্বজনীনতা প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। তারপরও ২৮ টি দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে। সর্বমোট ১৯৭১ জন প্রার্থী ২৯৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও অংশগ্রহণমূলক নয় মর্মে আখ্যায়িত করা যাবে না।