নিজস্ব প্রতিবেদক
দীর্ঘদিনের দাবির পর নগরের চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সামনে বসানো হয় ওভারপাস। প্রায় তিন কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে এটিই প্রথম ওভারপাস, যা রোগীদের কথা চিন্তা করে নির্মাণ করা হয়। এ ওভারপাস দিয়ে উপরে ওঠার জন্য দেওয়া হয়েছে এস্কেলেটর। কিন্তু চালুর দুই মাস পর থেকেই বন্ধ করে রাখা হয়। ফলে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করতে হচ্ছে রোগী ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের ব্যস্ততম জাকির হোসেন সড়কের ওয়ারল্যাস মোড় থেকে ফয়’স লেক পর্যন্ত সড়কের দক্ষিণ পাশে রয়েছে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি কলেজ, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও চারটি হাসপাতাল। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল ছাড়া চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল, সাহিক ও কিডনি ফাউন্ডেশন মূলত একই জায়গায়। প্রতিদিন হাজারের বেশি মানুষকে পারাপার করতে হয় সড়কের এ অংশে। এ কারণে ডায়াবেটিক হাসপাতালের সামনে বসানো হয়েছে নগরের সবচেয়ে আধুনিক এস্কেলেটর প্রযুক্তির একটি ওভারপাস। কিন্তু ওভারপাসের সামনে গেট বসিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না। মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করছে আর ওভারপাসে ওষুধ বিপণনে সংশ্লিষ্ট কর্মীরাসহ যুবকেরা বসে সময় পার করছে।
এ নিয়ে সরোয়ার নামে একজন ওষুধ বিক্রেতা বলেন, ‘এখানে (ওভারপাসে) গেট লক করে রেখেছে। মানুষতো চলাচল করতে পারছে না। এ কারণে আমরা এখানে ছায়ার নিচে বসে আছি। বাইরের রোদতো সহ্য করার মতো না। তাই এখানে বসে একটু বিশ্রাম নিই।’
রাস্তা পার হওয়া বৃদ্ধ মো. জসীম বলেন, ‘আমি হালিশহর থেকে আসছি। বয়স হয়েছে। ডায়বেটিস কন্ট্রোল রাখতে নিয়মিত চেক-আপ এখানেই (ডায়াবেটিক হাসপাতাল) করি। এ ওভারপাসটা কেন বানিয়েছে সেটা তো আমরা জানি না। শুরুর দিকে একবার এ ওভারপাস ব্যবহার করলেও পরে অনেক দিন ধরে এটা বন্ধ করে রেখেছে। আমাদেরতো দৌঁড়ে রাস্তা পার হওয়ার মতো ক্ষমতা নেই।’
স্থানীয় একটি খাবারের দোকানদার মোবারক বলেন, ‘ওয়ারল্যাস মোড়ে চারদিক থেকেই গাড়ি আসে। এরমধ্যে স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েসহ সবার রাস্তা পার হতে খুব অসুবিধা হয়। যে ওভারব্রিজটা করেছে, সেটার লিফট (এস্কেলেটর) না চললেও অসুবিধা নাই। ওভারব্রিজটা খুলে দিলে মানুষ চলাচল করতে পারতো।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সূত্রে জানা যায়, রোগীসহ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি বিকেলে নগরের প্রথম আধুনিক এ ওভারপাসটি উদ্বোধন করা হয়। ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে ও ৯ ফুট প্রস্থের এ ওভারপাসটিতে ওঠার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এস্কেলেটরের মাধ্যমে। আর নামার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সাধারণ নিয়মে। প্রায় তিন কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ওভারপাসে এস্কেলটেরের বিদ্যুৎ বিল বেশি হওয়ায় পুরো ওভারপাসটি বন্ধ রেখেছে সংস্থাটি।
এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সুপ্রভাতকে বলেন, ‘এ বিষয়টি আমি খেয়াল করিনি। তবে আমাদের সবকিছু মিলে প্রতি মাসে প্রায় এক কোটি টাকার মতো বিল চলে আসে। তবে একটা স্থাপনা যেহেতু তৈরি করা আছে, সেটি বিদ্যুতের ব্যবহার না করে বা কম ব্যবহার করে কিভাবে চালু করা যায়, আমি বিষয়টি দেখবো।’