সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »
সেন্সরবোর্ড আটকে গেল রায়হান রাফীর আলোচিত সিনেমা ‘অমীমাংসিত’র মুক্তি। সেন্সরবোর্ড বলছে, এই সিনেমায় নৃশংস খুনের দৃশ্য রয়েছে। কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপের বিষয়বস্তুর সঙ্গে বাস্তবতার মিল রয়েছে। যে কারণে তা জনসাধারণের মধ্যে ‘প্রদর্শন উপযোগী নয়’।
বুধবার (২৫ এপ্রিল) সিনেমাটির প্রযোজক শহিদুল আলম সাচ্চুকে দেওয়া সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো. মঈনুদ্দীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সিনেমাটির টিজার সামনে এলে অনেকে বলছিলেন, সিনেমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে বানিয়েছেন রাফী। কেউ আবার আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এর মিল খুঁজে পান। যদিও সিনেমা সংশ্লিষ্ট কেউ কিংবা সেন্সর বোর্ডও সরাসরি সাগর-রুনির নাম বলেননি। তারা বলছে, এ ধরনের কাহিনি বাস্তবে ঘটেছে এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। চলচ্চিত্রটির কাহিনী বিচারাধীন মামলার সঙ্গে মিল থাকায় ভুল বার্তা দিতে পারে এবং তদন্তের বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
সেন্সর বোর্ডের সদস্যদের মতে, ‘দি কোড ফর সেন্সরশিপ অব ফিল্মস ইন বাংলাদেশ, ১৯৮৫ এর ১ এর প্রথম, পঞ্চম ও সপ্তম দফায় বর্ণিত উপাদানসমূহ বিদ্যমান থাকায় ‘অমীমাংসিত’ চলচ্চিত্রটি জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন উপযোগী নয়। ফলে ‘দি বাংলাদেশ সেন্সরশিপ অব ফিল্মস রুলস, ১৯৭৭’ এর বিধি ১৬ (৫) অনুযায়ী চলচ্চিত্রটির সেন্সরপত্রের আবেদন বাতিল বা সেন্সরপত্র দিতে অস্বীকারের কথা জানায় সেন্সরবোর্ড। এদিকে সিনেমা আটকে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্মাতা রায়হান রাফী। ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি। যেখানে এই পরিচালক লিখেছেন, বাস্তবের সাথে মিলে গেছে তাই এটা মুক্তি দেওয়া যাবেনা! সিনেমা হতে হবে অবাস্তব! ওয়েব ফিল্ম ‘অমীমাংসিত’ সেন্সর বোর্ডে আটকে দেয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
রাফী লেখেন, বিষয়টা তাহলে এমন, কোনো সিনেমায় কোনো সাংবাদিক দম্পতি খুন হতে পারবে না? কাল্পনিক কাহিনী উল্লেখ করার পরেও যদি কোন ঘটনার সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে ব্যাপারটা এমন, ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা খাইনি টাইপ।
রাফীর প্রশ্ন, তাহলে কী সিনেমায় কোনো মেয়ে গুম হয়ে খুন হলে সেটা কুমিল্লার তনুর সাথে মেলানো হবে? সিনেমায় কোনো কিশোরের লাশ নদীতে পাওয়া গেলে, তার সাথে নারায়নগঞ্জের ত্বকী হত্যাকাণ্ড মেলানো হবে?
এই নির্মাতা লেখেন, ‘অমীমাংসিত’ সিনেমায় কোনো কিছুই প্রমাণ করা হয়নি, জাস্ট বিভিন্ন জনের ধারনা দেখানো হয়েছিল, তারপরও এই সিনেমা আটকে দেয়াটা সত্যি দুঃখজনক!
সবশেষ আক্ষেপ প্রকাশ করে রাফী লেখেন, সিনেমায় কোনো খুন দেখানো যাবে না, কোনো ধর্ষণ দেখানো যাবে না, কোনো অপহরণ দেখানো যাবে না, কোনো গুম দেখানো যাবে না। আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেস্তে। এখানে কোনো খুন হয় না, কোনো গুম হয় না, কোনো ধর্ষন হয় না। এভাবেই হাত পা বেঁধে সাতার কাটতে হবে আমাদের দেশের সিনেমাকে।