নিজস্ব প্রতিবেদক »
ভঙ্গুর প্রায় কালুরঘাট সেতু সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন আলোচনার পর কাজ শুরু করতে যাচ্ছে রেলওয়ে। ২০ জুন শুরু করে ১৫ সেপ্টেম্বর রেল চলাচল স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত থাকলেও এ কাজ পিছিয়ে যায় বিভিন্ন জটিলতায়। অবশেষে আজ (মঙ্গলবার) থেকে শুরু করে রেল ট্রেক ও সেতুর সংস্কার কাজ করতে তিন মাস সময় নিয়েছে সংস্থাটি। অন্যদিকে পাঁচবারের মতো ইজারাদার আহ্বান করেও কারো সাড়া না পাওয়ায় ফেরি পরিচালনা ও টোল আদায় করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা বলেন, ‘১ আগস্ট থেকে সংস্কার শুরুর বিষয়ে আমরা ২৫ জুলাই একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শ অনুযায়ী পুরো কাজটি করা হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। রেল ট্রেকসহ সেতুর সংস্কার কাজগুলো যেহেতু ভারি, সেহেতু সংস্কার কাজ চলাকালে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। তিন মাস পর্যন্ত ট্রেক ও সেতুর কাজ শেষ করে তারপর সেতুতে ওয়াকওয়ের কাজ শুরু করা হবে।’
১৫ সেপ্টেম্বর কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে কাজটা শুরু করতে দেরি হয়েছে। তাই সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি আমরা কতটুকু কাজ শেষ করতে পারবো সেটা দেখতে হবে। কাজ পুরোদমে চলবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে ট্র্যাকের কাজ শেষ করতে চাই। পাশাপাশি কিছু কিছু রিপ্লেস (পরিবর্তন), কিছু কিছু ঝালাই দিয়ে কাজটা করবো। পুরো কাজ বুয়েটের পরামর্শক দলের তত্ত্বাবধানে হবে। আশা করি দেড় মাসের মধ্যে আমরা কাজটি শেষ করতে পারবো।’
রেলসূত্রে জানা যায়, আজ থেকে প্রথমে ম্যাটারিয়ালস মোবিলাইজেশন, প্লেট সংস্কার ও বিটুমিন ঢালাই কাজ করা হবে। এ কাজ এক মাস চলবে। তবে প্লেট সংযোজন বা সংস্কারের কাজ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে অর্থাৎ আগস্ট থেকে রেল ট্রাফিক লিংকিংয়ের কাজ শুরু হবে। এ কাজটি সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। এরপর মানুষ হেঁটে চলাচল করার জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে রেলওয়ে ট্রাফিক খুলে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে বিকল্প পথ হিসেবে চালু করা হয়েছে ফেরি। এ ফেরি পরিচালনা ও টোল আদায়ের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। এ নিয়ে সওজের চট্টগ্রাম জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘ইজারাদার আহ্বানের প্রক্রিয়া এখনও চলমান আছে। আমরাতো ইজারাদার খুঁজেছি। কিন্তু ইজারাদার না পাওয়ায় আপাতত আমরা ফেরি চালু করে দিয়েছি। টোলও আমরা আদায় করব। ইজারাদার পেলে তাদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে দিবো।’
প্রসঙ্গত, ট্রেইলারের জন্য ৫৬৫ টাকা, ভারী ট্রাক বা কাভার্ডভ্যানের জন্য ৪৫০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (২ এক্সেল) ২২৫ টাকা, বড় বাস (চালক ছাড়া ৩১ জনের বেশি) ২০৫ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহৃত যানবাহনের (পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর) জন্য ১৩৫ টাকা, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টার (সর্বোচ্চ ৩০ জন) ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস (৮ থেকে ১৫ জন), পিকআপ, জিপ ও রেকার ৯০ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়ি (সিডার কার) ৫৫ টাকা, অটোভ্যান, ব্যাটারিচালিত তিন ও চার চাকার গাড়ির জন্য ২৫ টাকা, মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা, রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল ও ঠেলাগাড়ির জন্য ৫ টাকা করে টোল আদায় করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সওজ।