নিজস্ব প্রতিবেদক »
‘১৯৭৫ সালের এ দিনে সব দল বন্ধ করে বাকশাল নামক একটি স্বৈরাচারী দলের জন্ম দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার তাদের কোন ইচ্ছা ছিল না। বাকশাল হচ্ছে ভোট চুরির মেশিন। সাথে সাথে তারা আইনের শাসনকে নিজের হাতে নিয়েছিল। আইনের শাসনের অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছিল। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তারা হনন করেছিল। আজকেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নাই। সেদিনও গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হয়েছিল। সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। চারটি সরকারি পত্রিকা রাখা হয়েছিল। তারা আজও গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণের জানার অধিকারকে ভূলুন্ঠিত করতে চাইছে।’
গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ির নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন, তারা একাকী হয়ে গেছে। আপনারা সামনে আরো একাকী হয়ে যাবেন, তখন আর জনগণের কাছে যেতে পারবেন না। তখন আপনাদের আশ্রয়স্থল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি কিছু কর্মকর্তা ও দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা। তারা কি আপনাদের বাঁচাতে পারবে? রক্ষা করতে পারবে? যাদের উপর তারা ভর করে ক্ষমতায়, তাদের আমরা বার্তা দিচ্ছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সংবিধান মোতাবেক এ দেশের জনগণকে দৈনন্দিন সুরক্ষা দেবে। জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সন্ত্রাসীদের দমন করবে। সাংবিধানিক অধিকার কেউ বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
দেশের অর্থনীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব ব্যাংক এখন খালি। রিজার্ভ খালি। পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার নোট নতুন করে ছাপানো হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে আজ টাকা নেই, রিজার্ভ নেই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দশ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। পাচার করে বিভিন্ন দেশে দেশে ঘরবাড়ি করেছে। রিজার্ভ খালি তাই দেশের মানুষের জন্য পণ্য আমদানি করতে পারছে না, ডলার নেই বলে। যার জন্য দ্রব্যমূল্যের দাম আজ আকাশচুম্বী। যারা জনগণের অর্থ চুরি, ব্যাংক লুটপাট, মানুষের মানবাধিকার লংঘন করেছে তাদের কোনো সমস্যা নেই কারণ তাদের পকেটভর্তি টাকা। পণ্যের বাজারমূল্য যতই বাড়ুক তাদের সমস্যা হবে না। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তারা।’
দক্ষিণ জেলা বিএনপি আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার ও হারুনুর রশীদ।
জালাল উদ্দীন মজুমদার বলেন, ‘১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। ৪ পত্রিকা রেখে সব বন্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতারা আওয়ামী লীগ নামে দল করার জন্য শহীদ জিয়ার কাছে দরখাস্ত করেছিলেন। শহীদ জিয়া অনুমোদন দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ করার জন্য। আজকে আওয়ামী লীগ বড় বড় কথা বলছে, তাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের ঠেলায় মানুষ আজ অস্থির। এখন তারা নাকি স্মার্ট বাংলাদেশ করবে। ব্যাংক খালি করা স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা চাই না।’
হারুনুর রশীদ বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের কথায় কথায় বলেন, খেলা হবে। কিন্তু কি খেলা হবে? কিছুদিন আগে ওর ভাই বলেছিল আওয়ামী লীগের নেতারা পালানোর জন্য দরজা খুঁজে পাবে না। উনি কি খেলা খেলবেন? এখন সময় এসেছে, এখন খেলবে বিএনপি। যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে ২০২৩ সালের মধ্যে জনগণ এই সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন করবে। আওয়ামী লীগের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।’