সুপ্রভাত ডেস্ক »
দেশীয় নাটকের অঘোষিত রানী মেহজাবীন চৌধুরী। গত কয়েক বছরে তিনি নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তার অভিনীত প্রায় সব নাটকই দর্শক পছন্দের তালিকায় থাকে। সময়ের সঙ্গে নিজেকে ভেঙে-গড়ে পুরোদস্তুর অভিনেত্রী হিসেবে জাহির করেছেন তিনি। ২০০৯ সালে একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শোবিজে পা রাখেন ‘মেহু’। এরপর থেকেই টানা কাজ করছেন। গত কয়েক বছর ধরেই তিনি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে রয়েছেন। তার অধিকাংশ কাজই দর্শক গ্রহণ করছে। সম্প্রতি অভিনয় জীবনের যুগ পূর্তি করেছেন টিভি নাটকে এই সময়ের শীর্ষ অভিনেত্রী।
যুগ পূর্তির মাইলফলক স্পর্শ করে মেহজাবীন বলেন, ‘২০০৮ সালের শেষের দিকে মাত্র ৬ মাসের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে থেকে দেশে এসেছিলাম। এখানে আসার পর তেমন বন্ধু-বান্ধব না থাকায় অনেকটা ডিপ্রেশনে চলে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। এরপর মাথায় চিন্তা এলো যদি এখানে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’-এর কম্পিটিশনে যাওয়া যায় তাহলে হয়তো কিছু বন্ধু পাবো। সেই চিন্তা থেকেই এই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। হাজার হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে আমি বিজয়ী হই, এটা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না তখন!’
এই তারকা বলেন, ‘এরপর বিজ্ঞাপন করলাম এবং তারপরে অভিনয়ে দীর্ঘ পথচলা। আজকের এই অর্জন বা অবস্থান যেটাই বলি তার পেছনে আমার বাবা-মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। কারণ তারা আমাকে বিভিন্ন সময়ে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। আমার মা আমার পাশে থেকে আমাকে সহযোগিতা করেছেন, এগিয়ে যাবার পথে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। বাবা-মায়ের প্রতি আমরা ভালোবাসাটা প্রকাশ করতে পারি না তবুও তারা সেটা বোঝেন। আমি ভীষণ ভাগ্যবতী, এমন পরিবারে জন্ম নেওয়ায়। না হলে হয়তো এতদূর আসতে পারতাম না।’
মেহজাবীনের ভাষ্য, ‘মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও অভিনয়েও নিয়মিত থাকব, এটা আগে ভাবিনি। ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত স্টিলেই ফোকাস দিয়েছি বেশি। আমার কাছে মনে হতো অভিনয় থেকে মডেলিংটা সহজ; তাই এখানেই থাকি। কিন্তু ’১৩ এর পর থেকে অভিনয়েই বেশি মনোযোগ দেই।’ এই অভিনেত্রীর মতে, ‘আমি কাজেই আমার যোগ্যতা প্রমাণ করতে চেয়েছি, সমালোচনার জবাব দিতে চেয়েছি। আমি নিজে সমালোচনা করতে পছন্দ করি না, আমার নামে কেউ কিছু বললেও সেসব কানে নেই না। আমি শুধু কাজটাতেই ফোকাস দেওয়ার চেষ্টা করি সবসময়। কারণ, দিনশেষে কাজটাই কথা বলবে।’ এক যুগের ক্যারিয়ারে যারা পাশে ছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানান মেহজাবীন, ‘আমার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের এই পথ চলায় যারা আমাকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন সেসব পরিচালক, সহকর্মী, ভক্ত অনুরাগী এবং সাংবাদিক ভাই-বোনদের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা সবাই আমাকে তাদের ভালোবাসার চাদরে সবসময় মুড়িয়ে রেখেছেন। এমন ভালোবাসাতেই সারাজীবন বেঁচে থাকতে চাই।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মেহজাবীন অভিনয় করেছেন ৪৪৫টিরও বেশি নাটকে। বিজ্ঞাপন করেছে ৮০টিরও বেশি। কাজের এই সীমানটাকে আরও বহুদূর ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। বেঁচে থাকবেন দর্শক-ভক্তদের হৃদয়ে।