সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে লম্বা সময় আলোচনার পর অবসরের ঘোষণা প্রত্যাহার করে নিলেন তামিম ইকবাল। প্রধানমন্ত্রী তাকে খেলায় ফেরার ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন বলেও জানান অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। আপাতত এক-দেড় মাসের বিরতি নিয়ে এশিয়া কাপ থেকে আবার মাঠে ফিরবেন তিনি।
শুক্রবার দুপুরে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার মাধ্যমে তামিমকে গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন তামিমের স্ত্রী। পরে সেখানে ডেকে নেওয়া হয় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে সেখান থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমকে তামিম জানিয়ে দেন সিদ্ধান্ত বদলের কথা।
শুক্রবার দুপুর বেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে উনার বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অনেকক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন খেলায় ফিরে আসতে। আমি আমার অবসর এই মুহূর্তে উঠিয়ে নিচ্ছি। কারণ, আমি সবাইকে ‘না’ বলতে পারি, কিন্তু দেশের যে সবচেয়ে বড় ব্যক্তি, তাকে ‘না’ বলা আমার পক্ষে অসম্ভব।’
‘তাতে পাপন ভাই, মাশরাফি ভাই ছিলেন বিগ বিগ ফ্যাক্টর। মাশরাফি ভাই আমাকে ডেকে এনেছেন, পাপন ভাই সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে এক-দেড় মাসের একটা ছুটিও দিয়েছেন। আমার যা চিকিৎসা আছে বা অন্য কোনো কিছু, মানসিকভাবে যদি আমি ফ্রি হতে পারি… তার পর যা করা দরকার ও তারপরে যে খেলাগুলো আছে, আমি ইনশাল্লাহ খেলব।’
এশিয়া কাপে অধিনায়ক হিসেবে ফিরবেন নাকি খেলোয়াড় হিসেবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনও নেননি তামিম। তিনি জানালেন, বিরতি থেকে ফেরার পর এই সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। খবর বিডিনিউজ।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের একটি হোটেলে নাটকীয়ভাবে অবসরের ঘোষণার পর তামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না বিসিবি কর্তারা। বিসিবি পরিচালকদের সঙ্গে সভার পর মাঝরাতে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি সভাপতি জানান, কোনোভাবেই তারা তামিমের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাচ্ছেন না।
বোর্ড প্রধানের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে না পেরে প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ করেন সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফির সঙ্গে। পরে মাশরাফিই তামিম ও তার স্ত্রীকে নিয়ে যান গণভবনে।
দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে তারা গণভবনে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ সবার একসঙ্গে আলোচনা হয়। কিছুক্ষণ পরে ডেকে নেওয়া হয় বিসিবি সভাপতিকে। পরে তামিম ও তার স্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে ২ ঘণ্টার বেশি সময় কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তামিম যখন কথাগুলি বলছিলেন, তখন সেখানে জড়ো হওয়া সমর্থেকরা স্লোগান দিচ্ছিলেন তার নামে।
এরপর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, তার বিশ্বাস ছিল আলোচনায় বসলেই সব সমাধান হয়ে যাবে।
‘আমার একটা ধারণা হয়েছিল ওর সংবাদ সম্মেলনটা দেখে… কারণ আমি ওদের এত কাছের যে… ও হয়তো ইমোশনাল একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমার একটা বিশ্বাস ছিল যে, ওর সঙ্গে একবার সামনাসামনি যদি বসতে পারি, তাহলে হয়তো এটার একটা সমাধান পাব।’
‘আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে আমরা সবাই ওর সঙ্গে বসেছিলাম। ও আপনাদের সামনেই বলে গেল, অবসরের যে চিঠিটা দিয়েছে, সেটি তুলে নিচ্ছে। সে অবসর নেয়নি। তবে যেহেতু সে শারীরিক ও মানসিকভাবে সে এখনও ফিট নয়, সেইজন্য সে দেড় মাস সময় নিয়েছে। এই দেড় মাসে সে রিহ্যাব করে আশা করি আমাদের ক্রিকেটে ফিরে আসবে।’ ফেরার পর তামিমকে তারা অধিনায়ক হিসেবে চান, এটিও স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন বিসিবি সভাপতি। ‘এটা অবশ্যই… সবার জন্যই স্বস্তির। আমাদের অধিনায়ক যদি না থাকে, তাহলে খেলব কীভাবে!’