সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
ধ্বংসস্তুপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাস ক্রিকেটে কম নেই। গৌরবময় সেই আখ্যানগুলোয় এবার যোগ হলো নতুন এক অধ্যায়। আগের টেস্টে ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার দুঃসহ অভিজ্ঞতা আর প্রবল সমালোচনার আঘাত যখন সঙ্গী, দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক ও দলের সেরা দুই পেসার, ম্যাচ চলার সময় আরেক পেসারকে হারানো, এত সব প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে, প্রচ- মানসিক শক্তি, প্রতিজ্ঞা, স্কিল আর প্রবল তাড়নার প্রতিফলন ফুটিয়ে তুলে ভারত পেল অসাধারণ এক জয়। খবর বিডিনিউজের।
অ্যাডিলেইডে বিধ্বস্ত ভারত মেলবোর্নে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে এখন ১-১ সমতা। টেস্টের চতুর্থ দিনে গতকাল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রানে থামিয়ে ভারত ৭০ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ২ উইকেট হারিয়ে। ওই ২ উইকেট হারানো যেন ছিল চিত্রনাট্যেরই দাবি। দুর্দান্ত এই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন যিনি, জয়ের সময় ২২ গজে তার উপস্থিতি না থাকলে কেমন হয়! সেই অজিঙ্কা রাহানের ব্যাট থেকেই এলো জয়সূচক রান।
প্রথম ইনিংসে ১১২ রানের দারুণ ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যান অব দা ম্যাচ ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কই। কোহলির ছুটি-বিশ্রামের সুযোগে এই নিয়ে ৩ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে সবকটিতেই জয়ের স্বাদ পেলেন অধিনায়ক রাহানে।
অস্ট্রেলিয়ায় সব মিলিয়ে ভারতের এটি অষ্টম জয়, পয়মন্ত ভেন্যু মেলবোর্নেই জয় চারটি। সবশেষ সফরেও তারা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়ার গর্বের এই মাঠে।
ভারত ম্যাচ জয়ের পথ তৈরি করে ফেলেছিল আগের দিনই। চতুর্থ দিন সকালে ক্যামেরন গ্রিন ও প্যাট কামিন্স চেষ্টা করেন প্রতিরোধ গড়ার। দিনের প্রথম ঘণ্টায় উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকেন দুজন।
ভারত সাফল্য পায় দ্বিতীয় নতুন বলে। ২১৩ বলে ৫৭ রানের সপ্তম উইকেট জুটি ভাঙেন জাসপ্রিত বুমরাহ। দারুণ এক শর্ট বলে কামিন্স বিদায় নেন ১০৩ বলে ২২ রান করে।
একটু পর থেমে যায় গ্রিনের প্রায় ৩ ঘণ্টার লড়াইও। ১৪৬ বলে ৪৫ রান করে তরুণ অলরাউন্ডার শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মোহাম্মদ সিরাজের শর্ট বলে পুল করে।
সিরাজ পরে ফেরান ন্যাথান লায়নকেও। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল জশ হেইজেলউড ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হলে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
গোটা ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যানের ফিফটি নেই। এবারের আগে সবশেষ তাদের দুর্দশা হয়েছিল ১৯৮৮ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মেলবোর্নেই।
ছোট রান তাড়ায় মায়াঙ্ক আগারওয়াল ও চেতেশ্বর পুজারাকে দ্রুত হারায় ভারত। তবে শুবমান গিল ও রাহানের স্ট্রোকের ছটায় জয় ধরা দেয় অনায়াসেই। অভিষিক্ত গিল তার প্রতিভার স্বাক্ষর আরেকবার মেলে ধরে ৩৬ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন ৭ চারে।
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা জয়গুলির একটি তো বটেই, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসেও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পগাঁথায় দারুণ সংযোজন এই ম্যাচ।
জয়ের পর ভারতের উদযাপনে দেখা গেল না উচ্ছ্বাসের বাড়াবাড়ি। অজিঙ্কা রাহানের প্রতিক্রিয়ায় স্বস্তির পাশাপাশি ফুটে উঠল প্রতিজ্ঞাও। কাজ যে এখনও বাকি! বিরাট কোহলি, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামিকে ছাড়া ও ম্যাচের মাঝপথে উমেশ যাদবকে হারানোর পরও তাড়ানো গেল ৩৬ রানের ভূত। তাদের সামনে এবার সিরিজ জয়ের লড়াই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস : ১৯৫
ভারত ১ম ইনিংস : ৩২৬
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস : ১০৩.১ ওভারে ২০০ (আগের দিন ১৩৩/৬) (গ্রিন ৪৫, কামিন্স ২২, স্টার্ক ১৪*, লায়ন ৩, হেইজেলউড ১০; বুমরাহ ২৭-৬-৫৪-২, উমেশ ৩.৩-০-৫-১, সিরাজ ২১.৩-৪-৩৭-৩, অশ্বিন ৩৭.১-৬-৭১-২, জাদেজা ১৪-৫-২৮-২)।
ভারত ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৭০) ১৫.৫ ওভারে ৭০/২ (মায়াঙ্ক ৫, গিল ৩৫*, পুজারা ৩, রাহানে ২৭*; স্টার্ক ৪-০-২০-১, কামিন্স ৫-০-২২-১, হেইজেলউড ৩-১-১৪-০, লায়ন ২.৫-০-৫-০, লাবুশেন ১-০-৯-০)।
ফল : ভারত ৮ উইকেটে জয়ী
সিরিজ : ৪ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা
ম্যান অব দা ম্যাচ : অজিঙ্কা রাহানে
‘৩৬’ পেছনে ফেলে
ভারতের স্মরণীয় জয়
সুপ্রভাত ডেস্ক
ধ্বংসস্তুপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাস ক্রিকেটে কম নেই। গৌরবময় সেই আখ্যানগুলোয় এবার যোগ হলো নতুন এক অধ্যায়। আগের টেস্টে ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার দুঃসহ অভিজ্ঞতা আর প্রবল সমালোচনার আঘাত যখন সঙ্গী, দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক ও দলের সেরা দুই পেসার, ম্যাচ চলার সময় আরেক পেসারকে হারানো, এত সব প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে, প্রচ- মানসিক শক্তি, প্রতিজ্ঞা, স্কিল আর প্রবল তাড়নার প্রতিফলন ফুটিয়ে তুলে ভারত পেল অসাধারণ এক জয়। খবর বিডিনিউজের।
অ্যাডিলেইডে বিধ্বস্ত ভারত মেলবোর্নে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে এখন ১-১ সমতা।
টেস্টের চতুর্থ দিনে গতকাল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রানে থামিয়ে ভারত ৭০ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ২ উইকেট হারিয়ে।
ওই ২ উইকেট হারানো যেন ছিল চিত্রনাট্যেরই দাবি। দুর্দান্ত এই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন যিনি, জয়ের সময় ২২ গজে তার উপস্থিতি না থাকলে কেমন হয়! সেই অজিঙ্কা রাহানের ব্যাট থেকেই এলো জয়সূচক রান।
প্রথম ইনিংসে ১১২ রানের দারুণ ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যান অব দা ম্যাচ ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কই। কোহলির ছুটি-বিশ্রামের সুযোগে এই নিয়ে ৩ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে সবকটিতেই জয়ের স্বাদ পেলেন অধিনায়ক রাহানে।
অস্ট্রেলিয়ায় সব মিলিয়ে ভারতের এটি অষ্টম জয়, পয়মন্ত ভেন্যু মেলবোর্নেই জয় চারটি। সবশেষ সফরেও তারা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়ার গর্বের এই মাঠে।
ভারত ম্যাচ জয়ের পথ তৈরি করে ফেলেছিল আগের দিনই। চতুর্থ দিন সকালে ক্যামেরন গ্রিন ও প্যাট কামিন্স চেষ্টা করেন প্রতিরোধ গড়ার। দিনের প্রথম ঘণ্টায় উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকেন দুজন।
ভারত সাফল্য পায় দ্বিতীয় নতুন বলে। ২১৩ বলে ৫৭ রানের সপ্তম উইকেট জুটি ভাঙেন জাসপ্রিত বুমরাহ। দারুণ এক শর্ট বলে কামিন্স বিদায় নেন ১০৩ বলে ২২ রান করে।
একটু পর থেমে যায় গ্রিনের প্রায় ৩ ঘণ্টার লড়াইও। ১৪৬ বলে ৪৫ রান করে তরুণ অলরাউন্ডার শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মোহাম্মদ সিরাজের শর্ট বলে পুল করে।
সিরাজ পরে ফেরান ন্যাথান লায়নকেও। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল জশ হেইজেলউড ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হলে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
গোটা ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যানের ফিফটি নেই। এবারের আগে সবশেষ তাদের দুর্দশা হয়েছিল ১৯৮৮ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মেলবোর্নেই।
ছোট রান তাড়ায় মায়াঙ্ক আগারওয়াল ও চেতেশ্বর পুজারাকে দ্রুত হারায় ভারত। তবে শুবমান গিল ও রাহানের স্ট্রোকের ছটায় জয় ধরা দেয় অনায়াসেই। অভিষিক্ত গিল তার প্রতিভার স্বাক্ষর আরেকবার মেলে ধরে ৩৬ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন ৭ চারে।
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা জয়গুলির একটি তো বটেই, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসেও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পগাঁথায় দারুণ সংযোজন এই ম্যাচ।
জয়ের পর ভারতের উদযাপনে দেখা গেল না উচ্ছ্বাসের বাড়াবাড়ি। অজিঙ্কা রাহানের প্রতিক্রিয়ায় স্বস্তির পাশাপাশি ফুটে উঠল প্রতিজ্ঞাও। কাজ যে এখনও বাকি! বিরাট কোহলি, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামিকে ছাড়া ও ম্যাচের মাঝপথে উমেশ যাদবকে হারানোর পরও তাড়ানো গেল ৩৬ রানের ভূত। তাদের সামনে এবার সিরিজ জয়ের লড়াই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস : ১৯৫
ভারত ১ম ইনিংস : ৩২৬
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস : ১০৩.১ ওভারে ২০০ (আগের দিন ১৩৩/৬) (গ্রিন ৪৫, কামিন্স ২২, স্টার্ক ১৪*, লায়ন ৩, হেইজেলউড ১০; বুমরাহ ২৭-৬-৫৪-২, উমেশ ৩.৩-০-৫-১, সিরাজ ২১.৩-৪-৩৭-৩, অশ্বিন ৩৭.১-৬-৭১-২, জাদেজা ১৪-৫-২৮-২)।
ভারত ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৭০) ১৫.৫ ওভারে ৭০/২ (মায়াঙ্ক ৫, গিল ৩৫*, পুজারা ৩, রাহানে ২৭*; স্টার্ক ৪-০-২০-১, কামিন্স ৫-০-২২-১, হেইজেলউড ৩-১-১৪-০, লায়ন ২.৫-০-৫-০, লাবুশেন ১-০-৯-০)।
ফল : ভারত ৮ উইকেটে জয়ী
সিরিজ : ৪ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা
ম্যান অব দা ম্যাচ : অজিঙ্কা রাহানে
খেলা