নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান »
রাউজানের হালদা সংযুক্ত বুড়ি সর্তাখালে প্রায় ২০০ কেজি ওজনের একটি মৃত ডলফিন ভেসে উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে রাউজান পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গহিরা এলাকায় নদী সংযুক্ত বুড়ি সর্তাখালে ডলফিনটি ভাসতে দেখতে পান পমা হায়দার নামে স্থানীয় এক যুবক।
তিনি বলেন, ‘বিশাল আকৃতির মৃত ডলফিনটির উচ্চতা ১০ ফুটের বেশি, ওজন প্রায় ২০০ কেজি। মুখে পশুর বর্জ্য আটকানো ছিল। ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘বড় আকৃতির একটি গাঙ্গেয় ডলফিন ভেসে উঠার খবর পেয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছি। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি মৃত ডলফিনটি অনেক বড় আকৃতির। হালদায় এর আগে এত বড় ডলফিন মারা যায়নি। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না, ডলফিনটির পচন ধরেছে। হালদা নদী ও সংযুক্ত খালে এই পর্যন্ত ৩৬টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে।’
গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিনের বিচরণ আছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে। ২০১৭ সাল থেকে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর ডলফিন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন গবেষকরা। তখন থেকে হালদা ও কর্ণফুলীতে মৃত ডলফিনের সংখ্যা গণনা শুরু হয়। খবর ঢাকাপোস্ট।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ছয়মাসে হালদা নদীতে ১৮টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। ২০২১ সালে মোট ৫টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। চলতি বছরে তিনটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে।
এছাড়া কর্ণফুলী নদীতে এ পর্যন্ত দুইটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে। কর্ণফুলী ও হালদা নদীপাড়ের বাসিন্দারা স্থানীয়ভাবে একে হুতুম বা শুশুক নামে অভিহিত করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে বিপন্ন হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।