সুপ্রভাত ডেস্ক »
রান ১০০ পেরোবে কিনা, এই সংশয়ও জন্মেছিল। নাসুম আহমেদের ‘ক্যামিও’ পারফরম্যান্সে মোটামুটি একটা স্কোর তবু হলো। ১২৪ রানের পুঁজি নিয়ে অন্তত লড়াই তো করা সম্ভব। কিন্তু কীসের কী, কোনও সুযোগই পেলো না বাংলাদেশ। ইংলিশ ব্যাটারদের কাছে, বিশেষ করে জেসন রয়ের দাপটে অসহায় আত্মসমর্পণ মাহমুদউল্লাহদের। হেসেখেলে ম্যাচটি ৮ উইকেটে জিতে নিয়েছে ইংল্যান্ড।
গতকাল বুধবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রান করে বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রয়ের ঝড়ো হাফসেঞ্চু্রেিত ২ উইকেট হারিয়ে ১৪.১ ওভারেই জয় নিশ্চিত ইংলিশদের। ফলে সুপার টুয়েলভে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ। তাতে সেমিফাইনালের আশা কমে গেলো আরেকটু।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় স্কোর গড়েও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ক্যাচ মিসে হাতছাড়া হয়েছে ম্যাচ। ইংল্যান্ড ম্যাচ ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চে, অথচ সামান্য প্রতিরোধও গড়া যায়নি। প্রথমে ব্যাটিং ব্যর্থতা, এরপর বোলারদের হতাশা। অল্প পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে দুর্দান্ত কিছুর প্রয়োজন থাকলেও কিছুই করতে পারেননি সাকিব-মোস্তাফিজরা। তাদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে রয় খেলেন ৩৮ বলে ৬১ রানের ইনিংস। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা এই ওপেনার ঝড়ো ইনিংসটি সাজান ৫ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায়। শরিফুল ইসলামের বলে নাসুম আহমেদের হাতে যখন তিনি ধরা পড়লেন, ইংল্যান্ডের জয় তখন সময়ের ব্যাপার।
সহজ লক্ষ্যে ইংল্যান্ডকে দারুণ শুরু এনে দেন রয় ও জস বাটলার। অস্বস্তি বাড়তে থাকা বাংলাদেশ দলে খানিক সময়ের জন্য স্বস্তি ফেরে নাসুমের বলে। বাটলার-ঝড় তুলতে দেননি বাঁহাতি স্পিনার। তার বলেই ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে বাংলাদেশ।
সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম সাফল্য পাচ্ছিলেন না। ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটিও এগিয়ে চলছিল। এরপর বোলিংয়ে এলেন নাসুম। এসেই ফেরালেন বাটলারকে। এই ইংলিশ হার্ডহিটার ব্যাটারকে এক্সটা কাভারে নাঈম শেখের হাতে ক্যাচ বানান বাঁহাতি স্পিনার। ফেরার আগে ১৮ বলে ১ চার ও সমান ছক্কায় ১৮ রান করে যান বাটলার।
ইংলিশ উইকেটকিপার আউট হলেন বটে কিন্তু অস্বস্তি কাটলো না। ইংল্যান্ডের অন্য ব্যাটাররা সুযোগই দিচ্ছিলেন না। তাই জয়ের পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলে ইংলিশরা। এরই এক ফাঁকে রয় ফিরে যান। তাতে অবশ্য কোনও প্রভাব পড়ে না ইংল্যান্ড ক্যাম্পে। দলের সহজ জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়ে যান ডেভিড মালান ও জনি বেয়ারস্টো। মালান ২৫ বলে ৩ বাউন্ডারিতে অপরাজিত ২৮ রানে। আর বেয়ারস্টো ৪ বলে ১ বাউন্ডারিতে অপরাজিত থাকেন ৮ রানে।
ইংল্যান্ডের হারানো ২ উইকেট ভাগ করে নিয়েছেন নাসুম ও শরিফুল। নাসুম ৩ ওভারে খরচ করেন ২৬ রান। শরিফুল ৩.৩ ওভারে দেন ২৬ রান। উইকেটহীন সাকিব ৩ ওভারে দিয়েছেন ২৪ রান। মোস্তাফিজ ৩ ওভারে ২৩ রানে উইকেটশূন্য। আর মেহেদী হাসান ২ ওভারেই খরচ করেছেন ২১ রান।
টি-টোয়েন্টিতে আগে কখনোই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেনি বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এই ম্যাচ দিয়েই প্রথমবার সাক্ষাৎ। আবুধাবির ম্যাচটিতে ব্যাটারদের টানা ব্যর্থতায় লড়াই করার মতো স্কোর পাওয়াই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তবে নাসুমের ছোট কিন্তু কার্যকর ইনিংসে মোটামুটি একটা লক্ষ্য দাঁড় করায় মাহমুদউল্লাহরা।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় পরিস্থিতি এমন ছিল যে, ৯৮ রানেই পড়ে যায় ৭ উইকেট! সেখান থেকে স্কোর ১২৪ পর্যন্ত গিয়েছে আদিল রশিদের ১৯তম ওভারে নাসুম ১৭ রান নিলে। তার মাঝে ছিল দুটি ছয় ও এক চার। আবুধাবিতে ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে সর্বোচ্চ রান ছিল কেবল মুশফিকের। ৩০ বলে করেন ২৯ রান। মাহমুদউল্লাহ ২৪ বলে করেছেন ১৯ রান।
নাসুমও করেছেন ১৯*। ৯ বলে অপরাজিত ইনিংসটি তিনি সাজান ১ চার ও ২ ছক্কায়। নুরুল হাসান সোহান ১৬ ও মেহেদীর ১৯ ছাড়া বাকিরা দুই অঙ্কের ঘরে যেতে ব্যর্থ। আবারও হতাশায় ডুবিয়েছেন লিটন দাস (৯)। রান পাননি নাঈম (৫), সাকিব (৪) ও আফিফ হোসেন (৫)।
এ মুহূর্তের সংবাদ