নিজস্ব প্রতিবেদক »
২২ দফা দাবি নিয়ে আট দিন ধরে আন্দোলন করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের ষষ্ঠ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে রাজিও হয়। শিক্ষকরা এ নিয়ে সমন্বয় সভা করে জানানোর কথা থাকলেও সভা শেষে তারা কিছুই জানায়নি শিক্ষার্থীদের। ফলে শিক্ষার্থীরা চারুকলা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন বাদশা মিঞা সড়ক অবরোধ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে সড়ক অবোধ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ২২ দফা দাবিপূরণের জন্য মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কেননা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে মেহেদিবাগের এ ক্যাম্পাসে ক্লাস করার জন্য ভবন নির্মাণ, খেলার মাঠ ও শিক্ষার্থীদের থাকার হল দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়। কিন্তু চারুকলার শিক্ষকরা শহরে থাকার জন্য মূল ক্যাম্পাসে যেতে রাজি নন। এ নিয়ে উপাচার্য কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ৬ নভেম্বরের বৈঠক থেকে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে আসে।
শিক্ষার্থী সায়েদ কবীর সুপ্রভাতকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমাদের শিক্ষকরা সকাল ১১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মিটিং করেন। তারা মিটিং শেষে মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের কিছু জানাননি। তাই, আমরা বাদশা মিঞা সড়ক অবরোধ করেছি। বিকেল পাঁচটা থেকে আমরা সড়ক অবরোধ করি। দাবি মানা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
এ নিয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রবীর মিত্র চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলার জন্য কয়েকবার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, আন্দেলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি হলো- ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ ক্লাস রুম, ছাত্র-ছাত্রী হল ও ডাইনিং ব্যবস্থা, প্রতিটা ভবনে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরা, নিজস্ব বাসের ব্যবস্থা, প্রতিটি ভবনে পর্যাপ্ত টয়লেট, ক্লাসের বরাদ্দকৃত আর্ট ম্যাটেরিয়ালের ব্যবস্থাকরা, বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বইয়ের ব্যবস্থাকরা, অকেজো পড়ে থাকা জেনারেটর চালুকরা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, খেলার মাঠ, শিক্ষার্থীদের জন্য ফটোকপি মেশিন, প্রিন্ট ও স্টেশনারি সামগ্রীর ব্যবস্থাকরণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ (মশা, পানিজমা, ময়লা ইত্যাদি) নির্মূলকরণ, শ্রেণিকক্ষে বৈদ্যুতিক সংকট দূরীকরণ, ছাত্র-ছাত্রী মিলনায়তনের ব্যবস্থাকরণ, সেমিনারের পরিধি বাড়ানোসহ প্রজেক্টের ও পর্যাপ্ত সাউন্ড সিস্টেম নিশ্চিতকরণ, পুরো প্রাঙ্গণের ওয়াইফাই সংযোগ নিশ্চিতকরণ, প্রার্থনাগারের ব্যবস্থাকরণ, নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত আলোকায়ন, শিক্ষার্থীর জন্য লকারের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, কম্পিউটার ল্যাবে পর্যাপ্ত কম্পিউটার ও প্রজেক্টর বসানো এবং মডেলের সংকট সমাধান করা।