সুপ্রভাত ডেস্ক »
তানভীর মুরাদ আমেরিকায় বাঙালি কমিউনিটির প্রিয় মুখ। তিনি কখনো দেশের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, কখনো সুবিধাবঞ্চিত ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছেন, কখনো সামাজিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, আবার কখনো বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। জাতীয় দুর্যোগের সময় একজন প্রবাসী হিসেবে তিনি তাঁর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। আর এগুলোই হল চারপাশের মানুষকে ঘিরে তাঁর স্বপ্ন, চিন্তা-ভাবনা, কর্মকাণ্ড। এসবের মূল কারিগর তানভীর মুরাদ। একজন স্বপ্নচারী তরুণ সংগঠক এবং উদ্যোক্তা, যিনি একাধিক প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউ ইংল্যান্ড (BANE) এর সর্বকনিষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লিন সিটি হলের নাগরিক উপদেষ্টা বোর্ডের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন।
তানভীর মুরাদ যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ব্যবসায়িক উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি নিউ ইংল্যান্ডের দক্ষিণ এশিয়ান ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা। একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। বোস্টনে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী বাংলাদেশি যুবকদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘বোস্টন ইয়াংস্টার’। তিনি ‘বেঙ্গল টাইগার স্পোর্টস ক্লাবে’র পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এসব সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে সকার, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছেন।
এটি সর্বজনবিদিত যে, তরুণ সংগঠক তানভীর মুরাদ বিগত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ডে প্রবাসী বাংলাদেশিদের যে কোনো ধরনের বিপদে সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি গত জানুয়ারিতে ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুবক সাইদ ফয়সালের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি তাঁর পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন। এছাড়াও, তিনি বিদেশের মাটিতে বিপুল সংখ্যক নতুন অভিবাসী এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করে আসছেন।
করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন তিনি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপনসহ কোভিড-১৯ পরীক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ পাঠিয়েছেন। কোভিড পরবর্তী সময়ে নিউ ইংল্যান্ডের স্কুলগুলো পুনরায় খোলার ব্যাপারেও তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন। এভাবে তিনি যে শুধু এখানকার বাংলাদেশি সম্প্রদায়কেই সহযোগিতা করছেন তা নয় বরং তিনি দেশের সিলেটে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া, দেশের অনেক হতদরিদ্র ব্যক্তির জন্যে তিনি তাঁর আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি প্রতিবছর আর্থিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে তাদের মেধা ও প্রয়োজন অনুযায়ী বৃত্তির ব্যবস্থা করেন।
বেইনের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী তানভীর
আগামী ১০ ও ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ নিউ ইংল্যান্ড (ইঅঘঊ) নির্বাচনে তানভীর-তাজ-শান্তা প্যানেল থেকে তানভীর মুরাদ এবারে সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। এতে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী শান্তা বাকি এবং সহসভাপতি পদপ্রার্থী রয়েছেন মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন। এ প্যানেলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, কারো মৃত্যুর পর কবর বা সৎকারে সহায়তার জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করা, বেইন মোবাইল মেডিকেল ক্যাম্প এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্রদের জন্য স্কুল সরঞ্জাম সরবরাহ করা, মসজিদের জন্য লাউডস্পীকার অনুমোদন নেয়া, অবসর-বিনোদনের জন্য খেলার মাঠ ভাড়া করা, লোগান বিমানবন্দরে বাংলা ভাষা যোগ করা, বেইন থেকে আইনি সহায়তা প্রদান করা, বিনামূল্যে অভিবাসন পরামর্শ প্রদান করা, বেইনের জন্য বিল্ডিং ক্রয় করা।
সাউথ এশিয়ান বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউ ইংল্যান্ড-এর পক্ষ থেকে এ নির্বাচনী প্রচারণা চালানো হয়েছে। প্রতি দুই বছর পর বেইনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবারের নির্বাচনেও তানভীর তাঁর কমিউনিটির সহযোগিতা চেয়েছেন।
ব্যক্তি তানভীর মুরাদ
তানভীর মুরাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশি ইমরান বিপুর সঙ্গে। বিপু বলেন, ‘তানভীর মুরাদ এমন একজন সংগঠক যিনি মানুষের জন্যে স্বপ্ন দেখেন এবং বিপদের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ডের বাংলাদেশি কমিউনিটির পাশে দাঁড়ান।’
তানভীর মুরাদ বলেন, ‘আমি সব সময়ে আমার দায়িত্ববোধ থেকে জনগণের জন্য এবং নিজেদের সম্প্রদায়ের জন্যে কিছু করার চেষ্টা করি। আমি আমাদের দেশ এবং নিউ ইংল্যান্ডে প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।’
উল্লেখ্য, তানভীর মুরাদ বাংলাদেশের নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১৪ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। যুক্তরাষ্ট্রের কেমব্রিজ কলেজ থেকে এমবিএ এবং নিউ হ্যাম্পশায়ার ইউনিভার্সিটি থেকে তথ্য প্রযুক্তিতে স্নাতকোত্তর করার পর বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়া ইন্টারকন্টিনেন্টাল ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিচ্ছেন। তিনি তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।