নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরীর পতেঙ্গার ১২ নম্বর ঘাট এলাকার সড়কের পাশে পড়ে থাকা লাগেজের ভেতর থেকে উদ্ধার শরীরের ৮ টুকরা খণ্ডিত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মরদেহের আঙুলের ছাপ নিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়। তার নাম মোহাম্মদ হাসান (৬২)। তিনি বাঁশখালীর কাথরিয়া ইউনিয়নের বরইতলী এলাকার সাহাব মিয়ার ছেলে।
এ চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নিহতের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম এবং তার বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
গতকাল শনিবার সকালে নগরীর ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী রোডের খালপাড় এলাকায় একটি বস্তা থেকে মো. হাসানের শরীরের বাকি অংশও উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের খ-াংশ শনাক্ত ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) একেএম মহিউদ্দিন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সূত্র প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানিয়েছে, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে তার স্ত্রী ও ছেলে মিলে তাকে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় খুন করেন। এরপর পর তাকে কেটে টুকরা টুকরা করা হয়। পরে সেগুলো ল্যাগেজ ও বস্তায় ভরে ফেলে পাশের খালে ফেলে দেয়া হয়।
নিহত হাসানের এনআইডি কার্ড অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১৩ মার্চ ১৯৬১। হাসান দুই ছেলে এবং এক মেয়ের পিতা। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার অস্থায়ী ঠিকানা, সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির জামাল মিয়ার গ্যারেজ এলাকায়।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, হাসানের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম এবং তার বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকা-ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেন, নিহত হাসান ২৭-২৮ বছর নিখোঁজ ছিলেন। এ সময়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিলো না। সম্প্রতি তিনি পরিবারের কাছে ফিরে এলেই বাধে বিপত্তি। বাঁশখালীর পৈত্রিক সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে দুই ছেলে ও স্ত্রী। কিন্তু হাসান লিখে দিতে সম্মতি না দেওয়ায় তার স্ত্রী, দুই ছেলে এবং ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে তাকে হত্যা করেছে।
মহিউদ্দিন সেলিম আরও জানান, খুনের পর হাসানের লাশ কেটে টুকরো করে ট্রলিব্যাগে করে আট টুকরো ফেলা হয় পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় খালে। মাথা এবং বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়। ছোট ছেলেই তার বাবার শরীরের টুকরোগুলো বিভিন্নস্থানে ফেলেছে।
এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদি হয়ে এক বা একাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হাসানের স্ত্রী ও পুত্রকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও হত্যার সঙ্গে জড়িত ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলি এখনো পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।