নিজস্ব প্রতিবেদক »
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, সিআরবিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ পদ্ধতিতে হাসপাতাল নির্মাণের ব্যাপারে অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিদ্ধান্তক্রমে যেহেতু এটি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেহেতু এ ব্যাপারে রেলওয়ে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। এখন প্রধানমন্ত্রী যা সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে। এদিকে, গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে সুপারমল গড়ে তোলায় এবং অপরিচ্ছন্ন প্ল্যাটফর্মের কারণে সাময়িক বরখাস্ত হলেন পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার শামস মোহাম্মদ তুষার ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী।
গতকাল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা পরিদর্শনে এসে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এ নির্দেশনা দেন। এর আগে তিনি পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় রেলওয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য প্রস্তাবিত জায়গা বরাদ্দের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সংবাদকর্মীদের বলেন, ‘রেলওয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট জায়গার জন্য আবেদন করেছে। আমরা জায়গাটি দেখলাম। এখানে রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর অস্ত্রাগার, রেলওয়ের পার্সেল অফিস রয়েছে। এ জায়গা দেয়া যায় কিনা আমরা কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবো।’
হালিশহর সিজিপিওয়াই এলাকায় বেসরকারি একটি কোম্পানিকে কনটেইনার টার্মিনাল করার জন্য রেলওয়ের জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এভাবে বেসরকারি কোম্পানিকে রেলভূমি বরাদ্দের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘রেলভূমি বরাদ্দ দিয়ে যদি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায় তাহলে আমরা তা করবো না কেন? এতে রেলের আয় বাড়বে। রেলের অব্যবহৃত ভূমি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে আমরা যাচাই বাছাই করে বরাদ্দ দেবো।’
এদিকে পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি নতুন রেলওয়ে স্টেশন এলাকা ঘুরে দেখেন। এসময় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখতে পান। একইসাথে নতুন রেলওয়ে স্টেশনের সামনের বিশাল জায়গাটি পার্কিংয়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সেই পার্কিংয়ের জায়গায় সুপার মল গড়ে তোলায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় রেলওয়ের মহাপরিচালক ও পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের জিএমকে নির্দেশনা দেন পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শামস মোহাম্মদ তুষার ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করার।
মন্ত্রী বলেন, কালুরঘাট রেলসেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সেতুর উচ্চতা ৪.৬ মিটার। নদীর নাব্যতা ও নৌ-যান চলাচলের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এটাকে এখন ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় নির্মাণ করতে হবে। এ ব্যাপারে কাজ চলছে।
সিআরবি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী
সিআরবি ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের ব্যাপারে অনেক আগেই পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) পদ্ধতিতে নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গেলে এর বাধা আসে। এখন প্রধানমন্ত্রী যা সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে।
কিন্তু চট্টগ্রামের মানুষ তো এই হাসপাতাল চায় না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মন্ত্রী এমপিরা যদি না চায় তাহলে প্রধানমন্ত্রীও চাইবেন না। আর রেল মন্ত্রণালয়ও সেটার বিরুদ্ধে যাবে না।
উল্লেখ্য, সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে সাধারণ মানুষ। এই আন্দোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও সম্পৃক্ত রয়েছেন।