উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামী লীগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের কাউন্সিলর তালিকা অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন কক্সবাজারের এক তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মী।
রাজাকার ছিদ্দিক আহমদের পুত্র জসিম উদ্দিন, তার ভাই বেলাল উদ্দিন, নুরুল হকের পুত্র জামায়াত নেতা সাবেক মেম্বার আবুল হাশেম, ছাত্রদল নেতা আলমগীর রেজা, যুবদল নেতা সুজাউদ্দিন, হাবিবুর রহমানসহ রাজাকারের সন্তান ও জামায়াত-শিবিরসহ ভিন্ন দলের নেতা কর্মীদের সংখ্যাধিক্যতা নিয়ে এ তালিকা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
এ মামলার আরজিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এরকম ফেরবী কাউন্সিলারের তালিকা নিয়ে কাউন্সিল অধিবেশন করা হলে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নাম ধরার কোন লোকই থাকবে না।
কক্সবাজারের সহকারী জজ আদালত, উখিয়ায় মঙ্গলবার ‘ঘোষণামূলক মামলা’ (অপর-৬৬/২০২২) টি দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য জাফর আলম বাদি হয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনের জন্য গঠিত ৬ সদস্যের সাংগঠনিক টিমের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিবাদিরা হচ্ছেন দলীয় সাংগঠনিক টিমের প্রধান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহ আলম চৌধুরী, টিমের সদস্য যথাক্রমে ইউনুচ বাঙ্গালী, আদিল উদ্দিন চৌধুরী, আবদুর রহমান বদি (সাবেক এমপি), নাজনিন সরওয়ার কাবেরি ও বদরুল হাসান মিলকী।
মামলার আরজিতে বাদি উল্লেখ করেন- ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি গণমানুষের রাজনৈতিক দল। এ দলের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। তৃণমূল পর্যায় থেকে সংগঠনের সর্বশীর্ষ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক রীতি ও গণতান্ত্রিক চর্চা সাবলীলভাবে বিদ্যমান।’ কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ দলের উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড তদারকির লক্ষ্যে ৬ সদস্যের সাংগঠনিক টিমটি গঠন করে। কিন্তু টিম প্রধানের নেতৃত্বে উক্ত সংসদীয় এলাকায় ‘আওয়ামী মোড়কে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন বিরোধী গোষ্ঠীতে রূপ নিয়েছে এবং গোপনে আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি জামায়াত ও বিএনপিকে দলে অনুপ্রবেশ করার সুযোগ করে দিয়ে আওয়ামী লীগ ধ্বংসের অপরাজনীতি ও ষড়যন্ত্র করছেন।’ খোদ সাংগঠনিক টিম প্রধান শাহ আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধেও আওয়ামী লীগ বিরোধিতার নানা অভিযোগ মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়।
মামলার বিবরণে বলা হয়, গঠিত সাংগঠনিক টিমের সদস্যরা উখিয়া-টেকনাফের দলীয় তৃণমূলের কোন নেতা-কর্মীর সাংগঠনিক মতামতকে তোয়াক্কা না করে দলের ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিগুলো গঠন করা হচ্ছে। কমিটি গঠনের জন্য ওয়ার্ড পর্যায়ে কাউন্সিলার তালিকা থেকে শুরু করে গঠিত কমিটিগুলোতে পর্যন্ত রাজাকার পুত্র, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি-যুবদল ও ছাত্রদলের কর্মী ঢুকানো হচ্ছে। এসব নিয়ে বাদি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে দলীয় নেতাদের কাছেও কোন প্রতিকার না পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে জানান। তিনি উখিয়ার জালিয়াপালং এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তালিকা ও গঠিত কমিটি অবৈধ ঘোষণাসহ ইউনিয়ন কমিটির কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছেন।
অপরদিকে উখিয়া-টেকনাফের সাংগঠনিক টিমের প্রধান শাহ আলম চৌধুরী জানিয়েছেন- ‘মামলার সমস্ত বিবরণই মিথ্যা ও বানোয়াট। ওয়ার্ড কমিটির কাউন্সিলর তালিকা করার দায়িত্ব স্থানীয় তৃণমূল কমিটির সদস্যদের। আমরা কেবল দলীয় কমিটি গঠনের কার্যক্রম তদারকির দায়িত্ব পালন করে আসছি। অন্যদলের কর্মীদের দলে নেওয়ার কথাও সঠিক নয়।’ এদিকে মামলার নিয়োজিত আইনজীবী মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরী জানিয়েছেন- ‘মামলাটি আদালতে দায়ের করা হয়েছে। মামলায় জবাব দেয়ার জন্য আদালত নোটিশ প্রদান করবেন বিবাদিদের। বিবাদিরা যদি হাজির না হন তাহলে মামলাটি এক তরফা সূত্রে নিষ্পত্তি হবে।’