মিন্টু মারমা, মানিকছড়ি »
সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ফসলের মাঠ। পৌষের কনকনে বাতাসে সবুজ গাছে দোল খাচ্ছে স্বপ্ন নিয়ে বুনা সরিষার হলুদ ফুল। উৎপাদন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
উপজেলার মানিকছড়ি সদর, গচ্ছাবিল, বাটনাতলী, ছদুরখীল, পান্নাবিল, তিনটহরী, কালাপানি, বড় বিল যোগ্যাছোলা ও আশপাশের এলাকার ঘুরে দেখা যায়, পরিত্যক্ত, আবাদি ও অনাবাদি বিস্তীর্ণ কৃষি জমিতে আবাদ হয়েছে সরিষার। গেলো বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রায় দ্বিগুণ হারে সরিষার চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা। ফুল ও ফলে সয়লাব হওয়া সরিষার ক্ষেতে ছবি, সেলফি ও ভিডিও ধারণ করছে প্রকৃতিপ্রেমীরা। আশানুরূপ ফলন পেয়ে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। চলতি মৌসুমে ২৫ হেক্টর জমিতে সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ২৬.৫ হেক্টর জমিতে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৮৯ জন কৃষক এবছর সরিষার আবাদ করেছে। তাদেরকে সরকারি রাজস্ব প্রণোদনা ও জেলা পরিষদের সহায়তায় বিনামূল্যে সার, বীজ ও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
উপজেলার ছদুরখীল ব্লকের সরিষা চাষি মো. ফিরোজ আলম জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবছর নতুন ভাবে ৬৬ শতাংশ জমিতে ‘বিনা সরিষা-৯ ও বারি-১৪’ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন তিনি। ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হবেন বলে আশাবাদী।
যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, এক বিঘা জমিতে খরচ হয় আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। আর সাত থেকে আট মণ সরিষা উৎপাদন হয়। ১ হাজার ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলে দাম পাওয়া যায় ১৫ হাজার ২০০ টাকা। খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে ১২ হাজার টাকারও উপরে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মহি উদ্দিন আহম্মদ বলেন, এই অঞ্চলের জমি ও আবহাওয়া সরিষা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এবছর উচ্চফলনশীল (উফশি) বারি-১৪, বারি-৯, বিনা সরিষা-৯ জাতের বীজ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী বছর সরিষা চাষ আরও বাড়বে বলে আশাবাদী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। সরিষা চাষে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। ‘কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়ায় সরিষা আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন তারা।’