ডেস্ক রিপোর্ট »
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনালকে (আইসিটি) লাভজনক করতে হবে। এখানে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনাল পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজেক্ট। এটিকে সাকসেসফুল করতে হবে এবং সবাই মিলে সেটি করতে পারবো।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ুমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল এবং চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল উপস্থিত ছিলেন।
কয়েকশো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্থবির পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনাল সচল করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তাই টার্মিনালটি পরিদর্শন করেছেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল।
রাজধানী ঢাকার সাথে দেশি-বিদেশি ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ২০১৩ সালে বুড়িগঙ্গার তীরে কেরানিগঞ্জে চালু হয় দেশের একমাত্র অভ্যন্তরীণ পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনাল। যা নির্মাণে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে চট্টগ্রাম বন্দর। জমি অধিগ্রহণে তখন সহায়তা করেছিলো বিআইডব্লিউটিএ।
চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ব্যবসা বাণিজ্য কিংবা ঢাকা থেকে অন্যান্য সমুদ্র বন্দরে পণ্য আনা নেয়াতে তেমন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেনি টার্মিনালটি। ২০২০ সালের আগ পর্যন্ত গড়ে বছরে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কন্টেইনার ওঠানামা করলেও তা কমতে কমতে নেমে আসে ১ থেকে ২ হাজারে। সবশেষ, গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর যা নেমে আসে শূন্যের কোটায়।
টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের বেশ কয়েকজন সচিব ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা। বৈঠক শেষে পানগাঁও টার্মিনালের অভিভাবক সংস্থা চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ব্যবসায়ীরা সেবা পান না বলেই তারা পানগাঁও টার্মিনাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
সচিব আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের অভিযোগ তারা দ্রুত কন্টেইনার ডেলিভারি নিতে পারছে না। আমাদের বন্দরের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সমস্যা নেই। আমদানিকারকরা পানগাঁও টার্মিনাল দিলে এখানে কার্গো আসবে, কিন্তু এই ডেস্টিনেশন দিচ্ছে না।’
এসময় সালমান এফ রহমান বলেন, ‘পানগাঁওকে লাভজনক করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে। সেবা দেয়া নিয়ে কাস্টমস ও শ্রমিকদের মধ্যে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা আগামী এক মাসের মধ্যে সমাধান করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোড কানেকশন আছে, কস্টিংয়ের ব্যাপার আছে, রেল কার্গোর সঙ্গে কস্টের তুলনা আছে। সমস্যাগুলো আমরা মোটামুটি চিহ্নিত করেছি এবং এগুলো সমাধানের জন্য কাজ করবো। এটা যেন লাভের মুখ দেখে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে সমস্যা সমাধান করা হবে।’
পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘পানগাঁও টার্মিনালের ব্যবহার বাড়লে পণ্য পরিবহনে অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি সড়কে গাড়ি চলাচলও কমে যাবে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ কমবে বলে আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পানগাঁও টার্মিনালকে আরও প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছি। রোডের ওপর চাপ কমানোর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব একটা উপায়ও হবে। এই কারণে আমরা টার্মিনালকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
২০১৩ সালে চালুর পর দেশের টেক্সটাইল খাতের মোট পণ্যের ৪০ শতাংশ এই পানগাঁও টার্মিনাল থেকে পরিবহনের কথা থাকলেও তা আজও কার্যকর হয়নি।