সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
বৃষ্টিতে প্রায় দুদিন ভেসে যাওয়ার পরেও জমে উঠেছে ঢাকা টেস্ট। পাকিস্তান ৩০০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণার পর শেষ বিকালে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন ৭৬ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। দিন শেষে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে ২২৪ রানে। ফলোঅন এড়াতে এখনও ২৫ রান প্রয়োজন। সবমিলে তাই ভীষণ বিপদে বাংলাদেশ।
ধৈর্য পরীক্ষায় শুরু থেকেই ব্যর্থ ছিল টপ অর্ডার। সাজিদের ঘূর্ণিতে খেই হারিয়ে ৭১ রানে ফিরেছেন ৭জন! অভিজ্ঞদের মধ্যে মুশফিক-লিটন তো বাজে শটে ফিরেছেন। মুশফিক করেন ৫ আর লিটন ৬ রান। অধিনায়ক মুমিনুল অবশ্য দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউটের শিকার হয়েছেন। ঘূর্ণি বলে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলা সাজিদ খান ৩৫ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট। অবশ্য সাকিব ক্রিজে থাকলেও প্রথম ইনিংসের লড়াই কতক্ষণ টেকে তা নিয়ে সংশয় আছে। ব্যাট হাতে বেশ অস্বস্তিতে ভুগতে দেখা গেছে তাকে। একবার তো রানআউট হতে হতে বেঁচেছেন। সাকিবের সঙ্গে ক্রিজে আছেন তাইজুল। সাকিব ব্যাট করছেন ২৩ রানে, তাইজুল (০)।
অথচ সকালে ১৮৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে খেলতে নামার পর পাকিস্তানকে চেপে ধরার সুযোগ ছিল স্বাগতিকদের। শুরুতে তাদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেন স্বাগতিক পেসাররা। প্রতিরোধ গড়া আজহার-বাবরকে সাজঘরে পাঠান এবাদত-খালেদ। তবে প্রথম সেশন শেষের আগে সেই ধাক্কা সামলে উঠেন রিজওয়ান-ফাওয়াদ।
মিরপুরে ৭০ রানে ২ উইকেট পড়ার পর বাবর-আজহার জুটিই মূলত প্রতিরোধ গড়েছিল। ১২৩ রানের এই জুটি ভাঙে এবাদত হোসেনের কল্যাণে। তার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন আজহার। বল টপ এজ হয়ে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। আজহার ১৪৪ বলে ৫৬ রান করে ফিরেছেন।
অপর প্রান্তে সেঞ্চুরির আশায় থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমও টেকেননি বেশিক্ষণ। তাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় দিয়েছেন পেসার খালেদ আহমেদ। তার হঠাৎ নিচু হয়ে পড়া বল আঘাত করে বাবরের প্যাডে। তিনি রিভিউ নিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানেও অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থেকেছে। ১২৬ বলে ৭৬ রান করে ফেরেন বাবর। তাতে ছিল ৯টি চার ও একটি ছয়। এটি খালেদের প্রথম টেস্ট উইকেট।
এরপর জুটি গড়ে দ্রুতগতিতে ব্যাট চালিয়ে খেলেছেন ফাওয়াদ-রিজওয়ান। অবশ্য এই জুটি এতদূর যেত না যদি ফাওয়াদ আলমকে ফেরানো যেত। এবাদতের ৭৩তম ওভারের শেষ বলে ফাওয়াদকে আউটের সুবর্ণ সুযোগ ছিল। আলট্রা এজে দেখা গেছে বল তার ব্যাট ছুঁয়েই লিটনের গ্লাভসে জমা পড়েছিল। কিন্তু স্বাগতিক শিবিরের কেউ আবেদনই করেননি তখন! পরে এই সুযোগই কাজে লাগান ফাওয়াদ-রিজওয়ান।
বিশেষ করে লাঞ্চ বিরতির পর হাত খুলে মারার চেষ্টা করেন তারা। তাতে রিজওয়ানকে আউট করার স্পষ্ট সুযোগও এসেছিল। মেরে খেলতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হয়েছেন তাইজুল। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ৩০০ রান তুলেই ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান।
ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে ফাওয়াদ আলম অপরাজিত থাকেন ৫০ রানে। খেলেছেন ৯০ বল, মেরেছেন ৭টি চার। রিজওয়ানও ৯৪ বল খেলে ৫৩ রানে অপরাজিত থেকেছেন। খালেদ ও এবাদত একটি করে উইকেট নিলেও তাইজুল নেন ২টি উইকেট।