জলাবদ্ধতা নিরসন
নিজস্ব প্রতিবেদক »
শুরু হলো খালের মাটি অপসারণ কার্যক্রম। গতকাল মঙ্গলবার কর্ণফুলীর তীরে ফিরিঙ্গীবাজার কলাবাগিচা খাল, চশমা খাল, চাক্তাই খালসহ বিভিন্ন স্থানে খালের মাটি অপসারণ শুরু করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে তিন ঘণ্টায় মাত্র ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় খালের ভেতরের বাঁধ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এসব বাঁধের কারণে পানি নামতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল। গত সোমবার সিটি করপোরেশনের মেয়রের উপস্থিতিতে সমন্বয় সভায় ৩০ জুনের মধ্যে খালের সব বাঁধ অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
এদিকে সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খাল থেকে মাটি অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, ‘গতকাল টেকপাড়া খালের মুখ পরিষ্কার করা হয়েছে। এখন এ খাল দিয়ে পানি সহজে নদীতে যেতে পারবে। এছাড়া চশমা খাল ও চাকতাই খালসহ বিভিন্ন খালের মাটি অপসারণ এবং বাঁধ কেটে দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এখন আর বাঁধের কারণে পানি নামতে না পারার ঘটনা ঘটার কোনো সুযোগ থাকবে না। আমরা পর্যায়ক্রমে সব খাল থেকে মাটি অপসারণ করে নেবো।
এদিকে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় নগরীর অনেক খাল ভরাট করে রিটেনিং দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছিল। আবার কোথাও স্লুইস গেট নির্মাণের কারণে পাইপ দিয়ে কিংবা বিকল্প উপায়ে পানি পরিবাহিত করা হচ্ছিল। এখন থেকে সব অপসারণ করা হবে।
উল্লেখ্য, নগরীতে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়ে থাকে। এবারো বর্ষার প্রারম্ভে দুই দফা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছিল নগর। এতে নগরজুড়ে ক্ষোভ শুরু হয়। মেগা প্রকল্পের আওতায় সরকার এ পর্যন্ত ১৭০০ কোটি টাকা খরচ করলেও এর কোনো সুফল পায়নি নগরবাসী। মেগা প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৩৬টি খাল আরএস শিট অনুযায়ী পূর্বের অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, খালের উভয় পাশে ১৫ ফুট চওড়া রোড ও খালের মুখে ৫টি সøুইস গেইট বসানো, ৪২টি সিল্ট ট্র্যাপ (বালি জমার স্থান), ৩টি জলাধার নির্মাণ, ৩৬টি খাল খননের মাধ্যমে ৫ লাখ ২৮ হাজার ২১৪ ঘনমিটার মাটি উত্তোলন, ৪২ লাখ ঘনমিটার কাদা অপসারণ, নতুন করে ১০ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ১ লাখ ৭৬ হাজার মিটার দীর্ঘ রিটেনিং দেয়াল নির্মাণ এবং খালের উভয় পাশে ৮৫ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করার কাজ রয়েছে।