চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নুরুল আমিন বলেছেন- বরেণ্য শিক্ষাবিদ বিমল কান্তি বড়ুয়া শৈশব থেকে আর্থিক দৈন্যতার মধ্যে দিয়ে বড় হলেও শিক্ষাপাঠ থেকে কখনো নিজেকে বিচ্যুত করেননি, এমনকি একজন সাধারণ শিক্ষক হয়েও শিক্ষা ও মানবসেবা কিভাবে করতে হয় তা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। অর্থের টানাপোড়েন থাকলেও তিনি বিপথে পরিচালিত হননি। আজীবন শিক্ষা সংস্কারক হিসেবে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। বর্তমান সমাজব্যবস্থায় তাঁর জীবন অনুসরণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমার সৌভাগ্য, এমন একজন মহান শিক্ষাগুরুকে আমি সরাসরি স্যার হিসেবে পেয়েছিলাম।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত লেখক-সাংবাদিক বিপ্লব বড়ুয়া সম্পাদিত জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত (মাধ্যমিক শাখা) দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ বিমল কান্তি বড়ুয়া’র জীবন আখ্যান ‘আলোর অভিসারী’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথি আরো বলেন- শিক্ষকতা জীবনের এক দীর্ঘ সময় প্রায় ২৮ বছর দেশের নন্দিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থাকাবস্থায় ১৯৯৫ সালে দেশ সেরা প্রধান শিক্ষকের পদক লাভ করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও আলোর অভিসারী গ্রন্থ মোড়ক উন্মোচন পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. বেণু প্রসাদ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ইউএসটিসির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর তুষার কান্তি বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. হাফিজুল ইসলাম, সাহিত্যিক-সাংবাদিক বিশ^জিৎ চৌধুরী, পটিয়া করল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা লায়ন ডা. মৃদুল বড়ুয়া চৌধুরী, সীতাকু- লতিফা সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শিমুল বড়–য়া, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মোড়ক উন্মোচন পরিষদের সদস্য সচিব চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সদস্য সিদ্ধার্থ বড়ুয়া। অনুভূতি প্রকাশ করেন শিক্ষবিদ বিমল কান্তি বড়ুয়া ও গ্রন্থের সম্পাদক লেখক-সাংবাদিক বিপ্লব বড়ুয়া।
শিক্ষাবিদ বিমল কান্তি বড়ুয়া বলেন, আলোর অভিসারী গ্রন্থে আমার জীবনের ঘটনাবলী চিত্রিত হয়েছে। এর জন্য আমার প্রিয় ভাজন সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়াকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। বইটি প্রকাশের মধ্যে দিয়ে সে আমাকে নতুনভাবে জন্ম দিয়েছে। প্রজন্মের জন্য একটি ইতিহাস রেখে যেতে পেরে আমি আজ আনন্দিত।
উদ্বোধক প্রফেসর ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়–য়া বলেন, আজীবন সুদক্ষ শিক্ষক বিমল কান্তি বড়–য়া একজন পুরিপূর্ণ বিদ্যান। মেধাবী পেশাজীবী এবং ছাত্রবান্ধব সুশীল সমাজের আইকন। সাংবাদিক বিশ^জিৎ চৌধুরী বলেন- ছাত্রদেরকে সন্তান স্নেহে আদর-শাসনের মধ্যে দিয়ে মানুষ করেছেন তাঁর ছাত্র হিসেবে আমি সত্যিই গর্বিত। আলোর অভিসারীর মধ্যে দিয়ে স্যারকে নতুনভাবে জানার সুযোগ হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন- প্রফেসর ডা. আবু তসলিম, প্রফেসর ডা. সৌমেন সরকার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক সঞ্জীব বড়ুয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ বেতার ও টিভি উপস্থাপক প্রবীর পাল। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী পাপড়ি মুৎসুদ্দী। নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পী অনন্য বড়ুয়া’র প্রাপণ একাডেমীর শিক্ষার্থীবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি