ডেস্ক রিপোর্ট »
কেএনএফ প্রধান নাথান বমের স্ত্রী লালসমকিম বমের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি ছিলেন রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স। ৮ এপ্রিল রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাঁকে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে বদলি করা হয়।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) উপসচিব মো. নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, বদলিকৃত সিনিয়র নার্স লালসমকিম বম ৯ এপ্রিলের মধ্যে কর্মস্থলে আবশ্যিকভাবে যোগদান করবেন। নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করলে ৯ এপ্রিল বিকেলে স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য করা হবে।
বদলির ১৪ দিন পার হলেও হদিস নেই নাথানের স্ত্রীর। লালমনিরহাটে কাজে যোগ দেননি তিনি। বদলির আদেশের পর থেকেই লাপাত্তা লালসমকিম। রুমা সদরের নিজ বাসাতেও তিনি থাকছেন না। তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ।
কেএনএফ ২ এপ্রিল রাতে রুমার সোনালী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুটের চেষ্টা করে। টাকা নিতে না পেরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে অপহরণ ও পাহারায় থাকা পুলিশ-আনসারের ১৪টি অস্ত্র লুট করে। পরের দিন দুপুরে থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংক থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা লুট করে তারা। এ ঘটনার পর সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা সমন্বিত অভিযান পরিচানা করেন।
২০২২ সালের শুরুর দিকে বান্দরবানের রুমায় সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়। বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রোদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও সেখানে বম জনগোষ্ঠীর কিছু সংখ্যক লোক রয়েছে। এ কারণে সংগঠনটি ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত।
কেএনএফের লক্ষ্য রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি ও বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা, আলীকদমসহ ৯ উপজেলা নিয়ে ‘কুকি-চিন রাজ্য’ গঠন করা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তারা।
কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠনের বর্তমান প্রধান নাথান বম। রুমা সদর ইউনিয়নের ইডেনপাড়ার বাসিন্দা মৃত জাওতন লনচেওর ছেলে নাথান বম। তাঁর বাবা ছিলেন জুমচাষি। মা মৃত রৌকিল বম। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে নাথান ছোট। অভাব-অনটনের মধ্যে বড় হয়েছেন নাথান। তাঁর দুই ভাই জুম চাষ করেন। নাথানের এক ভাই রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। আরেক ভাই অর্থ পাচারের মামলায় রাঙামাটি কারাগারে।
১৯৯৬ সালে নাথান বম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। ওই বছরই ঢাবির প্রাক্তন উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ বান্দরবান সফরে গিয়ে খিয়াং, লুসাই, ম্রো, বম জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রতিশ্রুতি দেন। তাই পরীক্ষায় পাস না করলেও নাথান চারুকলা অনুষদে ভর্তির সুযোগ পান।
কেএনএফ প্রধান নাথান বম কোথায় আছেন তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। তবে তিনি দেশে নেই, বিদেশে কোথাও অবস্থান করছেন।