রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১ দিনে ৪ হত্যাকাণ্ড

একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলায় হত্যাকা- বাড়ছে। একই দিনে পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ৪ রোহিঙ্গা নিহত ও দুই রোহিঙ্গা গুরুতর আহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উখিয়ার ১৫ ও ১৭ নম্বর ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যা করা হয়। এর আগে একইদিন দুপুরে আরেকজন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ১৭ নম্বর ক্যাম্পের সি/৭৭ ব্লক এলাকায় ১০/১২ আরসা সদস্য একত্রিত হয়ে ওই ক্যাম্পের এইস/৭৭ ব্লকের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে আবুল কাসেম (৩৫) নামের এক রোহিঙ্গাকে মাথায় উপর্যুপরি গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পে আরসার বিরুদ্ধে শান্তি শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন।

অপরদিকে, রাত ৮টার দিকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ১৫ নম্বর ক্যাম্পের জি/৩ ব্লক এলাকায় আরসা ও আরএসও সদস্যদের মাঝে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় আরসা সন্ত্রাসীদের গুলিতে (আরএসও সদস্য) ওই ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. আলীর ছেলে মো. জোবায়ের (১৬) ঘটনাস্থলে নিহত হয় এবং (আরএসও সদস্য) ১৫ নম্বর ক্যাম্পের জি/৬ মো. শফির ছেলে আনোয়ার সাদেক (২৭) ও জি/৩ ব্লক এলাকার বাসিন্দা কামাল উদ্দিনের ছেলে জয়নাল উদ্দিন (২৮) এবং জি/৭ সৈয়দুল বশরের ছেলে আয়াছ (১৮) গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে আশেপাশের রোহিঙ্গারা আহতদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে অবস্থিত এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আনোয়ার সাদেক (২৭) মারা যান। বাকিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং নিহতদের লাশ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরপরই এপিবিএন ও থানা পুলিশ রাতে সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইমাম হোসেন (৩০) নামে আরেক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়।

সাধারণ রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের ভয়ভীতি দেখাতে আরসা সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকা- সংঘটিত করছে। আমাদের প্রাণের নিরপত্তা এখন হুমকির মুখে। আমরা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

স্থানীয় রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গারা খুবই বেপরোয়া। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেও রোহিঙ্গা শিবিরে খুনের ঘটনা ঘটে। রোহিঙ্গা শিবিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এখন সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকা- ঠেকাতে প্রশাসন অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে।