প্রদীপ চৌধুরী, খাগড়াছড়ি »
আগামী দুই মাসের মধ্যেই রামগড় স্থলবন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশনসহ বন্দরের কার্যক্রম চালু হবে। ভারতের সীমান্ত শহর সাব্রুম হয়ে এ বন্দর দিয়েই বাংলাদেশের নাগরিকরা ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন। একই সাথে চালু হবে রামগড় স্থল বন্দর দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহন।
সূত্র জানিয়েছে, এই বন্দরের অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান ‘বিশ্ব ব্যাংক’র পক্ষ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে বন্দর চালুর সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চাওয়া হয়। এ জন্যই তড়িগড়ি করেই দুই মাসের মধ্যেই অস্থায়ী অবকাঠামোর মাধ্যমে চালু হবে বহুল প্রত্যাশিত ‘রামগড় স্থলবন্দর’র কার্যক্রম।
২২ জুন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল স্থলবন্দর পরিদর্শনে এই সংক্রান্ত একটি জরুরি নির্দেশনা দেয়ার পর পরই বন্দরের কার্যক্রম শুরু করতে নড়েচড়ে বসেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনও। রামগড়ের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ আরাফাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, সীমান্ত জটিলতায় প্রায় ছয় মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে দেশের একমাত্র সংযোগ সেতুর মাধ্যমে নির্মাণাধীনরামগড় স্থল বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ।
চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ অংশে কাজ শুরু করার একদিনের মাথায় সীমান্তের জিরো রেখা থেকে দেড়’শ গজের মধ্যে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইনে বিধি নিষেধের কারণ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।
এর এক মাস পর চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রামগড় স্থলবন্দর পরিদর্শনে এসে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে উভয় দেশের হাই কমিশন, যৌথ নদী কমিশন এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে বন্দরের নির্মাণ কাজে বাধার বিষয়টি সমাধানের ঘোষণা দিলেও চার মাসেও তা সুরাহা হয়নি।
বিজিবি’র ৪৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আর্ন্তজাতিক সীমানা আইন অনুযায়ী সীমান্তের শূন্য রেখা হতে ১শ ৫০ গজের মধ্যে কোন পক্ষই স্থায়ী কোন অবকাঠামো বা স্থাপনা নির্মাণ করতে পারেন না। রামগড় স্থল বন্দরের জন্য অধিগ্রহণ করা জায়গাটি ১’শ ৫০ গজের মধ্যে হওয়ায় কাজে বাধা দেয়া হয়েছিলো।
বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট – (ওয়ান)-এর আওতাধীন রামগড় স্থলবন্দর প্রকল্প’র পরিচালক মো. সরোয়ার আলম জানান, প্রকল্পের কাজ করার সম্মতির জন্য বিএসএফ’র চাহিদা অনুযায়ী ৯ মে রামগড় ৪৩ বিজিবি’র মাধ্যমে প্রকল্পের মাস্টারপ্ল্যান, ডিজাইন, ড্রয়িং, লে-আউটসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে এখনো কোন সাড়া না পাওয়ায় স্থল বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ কাজে হাত দেয়া যাচ্ছে না।
এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, রামগড় স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠার ‘মেসার্স মনিকো লিমিটেড’-এর ভারী যন্ত্রপাতি-যানবাহন খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। প্রতিষ্ঠানটি চল্লিশ জন সুদক্ষ লোকবল নিয়ে এখন রামগড়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন।