রুমন ভট্টাচার্য <<
রোজায় বাড়তি চাহিদা ও দেশজুড়ে লকডাউনের ‘অজুহাতে’ বেড়েছে প্রায় সবরকম ফলের দাম। বিভিন্ন ফল কেজিপ্রতি ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নগরের ফলমন্ডি, চকবাজার, বহদ্দারহাট ও কাজির দেউড়ি বাজারের বিভিন্ন ফলের দোকান ঘুরে পাওয়া গেছে দাম বাড়ার তথ্য।
পাইকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজান মাসে ইফতারে ফলমূলের চাহিদা বাড়ে। লকডাউনের কারণে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে কেজিপ্রতি দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, বিভিন্নরকম ফলের দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রোজার আগে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় কেজিপ্রতি বিক্রি হওয়া মাল্টা এখন মানভেদে ১৪০ টাকা থেকে দেড়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া আপেল মানভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিন বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আপেল ১৫০ টাকা, সাদা আঙ্গুর ২০০ টাকা, লাল আঙ্গুর ৩৮০ টাকা, নাসপাতি ২৪০ টাকা, মালটা ১৫০ টাকা, আনার মানভেদে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা, বাংলা কলার ডজন মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও সাগর কলা মানভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে ৭০ টাকা, নাগফল ২২০ টাকা, তরমুজ মানভেদে ১২০ থেকে ২০০ টাকা, ও আনারস প্রতিপিস ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দোকানের চেয়ে রাস্তা ও ফুটপাতের ভ্যানগাড়িতে বিক্রি করা ফল কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা কমে মিলছে।
ফলমন্ডি বাজারের মেসার্স খানদানি ফ্রুটস এর মালিক মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, ‘রমজান মাসে ফলের চাহিদা খুব বেশি থাকে। বিশেষ করে মালটা, আপেল, আঙ্গুর, কলা, তরমুজ ইত্যাদির। এছাড়া লকডাউনের কারণে চাহিদানুযায়ী পণ্য সরবরাহ হচ্ছে না। তাই দাম একটু বাড়তি।’
বহদ্দারহাটের একটি দোকান থেকে ফল কিনছিলেন স্কুল শিক্ষক মো. আজিম। তিনি বলেন, ‘এই গরমে রোজা রেখে ফলের তৈরি জুস খেতে ভালো লাগে। কিন্তু রোজার শুরুতেই কেজি প্রতি বিভিন্ন ফল ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। তরমুজের দাম চাওয়া হচ্ছে ১০০ টাকার উপরে। এর আগে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় তরমুজ কিনেছি।’
চকবাজারের খুচরা ফল বিক্রেতা বিধান হোড় বলেন, ‘পাইকারি বাজার ফলমন্ডি থেকে দেশি-বিদেশি ফলগুলো এনে বিক্রি করা হয়। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফলের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে বাজারে ফলের কমতি নেই।’
চকবাজারের ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা মো. শাকিল বলেন, ‘রোজা আসতেই আপেল, মালটা, আঙ্গুরসহ প্রায় সবরকম ফলের দাম পাইকারিতে বেড়ে গেছে। ফলে খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে। কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দোকানে মালটা ও আপেল ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু আমরা বিক্রি করছি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।’
চকবাজারে ফলে কিনতে আসা মোহাম্মদ জয়নাল বলেন, ‘রোজার আগেও আপেল কিনেছি ১০০ থেকে ১১০ টাকায় এখন প্রতিকেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। সাদা আঙ্গুর কিনেছিলাম ১৬০ টাকায়। এখন চাওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। এরকম প্রায় বিভিন্ন ফল কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকায় পর্যন্ত বেড়ে গেছে। সবকিছুর দাম এভাবে বাড়লে আমরা কিনব কিভাবে?’
কাজির দেউড়ি বাজারে ফল কিনতে আসা ইয়াসমিন হাসান বলেন, ‘রোজার প্রতিদিনই বাসায় শরবত তৈরি করা হয়। সে কারণে প্রতিদিনই বাজার থেকে মালটা কিনতে হয়। ১১০ টাকায় কেনা মালটা এখন ১৫০ টাকায় কিনলাম। রোজা আসলেই যেন বাজারে সবকিছুর দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। বাজারে প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন।’