সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিএনপির মহাসমাবেশে নেতাকর্মীদের জমায়েতের মধ্যেই নয়াপল্টনের অদূরে শুরু হওয়া সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কয়েকস্থানে; পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়ায় কাকরাইলসহ পুরো এলাকা হয়ে পড়ে রণক্ষেত্রে। সমাবেশ পণ্ডের মধ্যেই হরতাল ডাকে বিএনপি; পরে কয়েক স্থানে বাসে দেওয়া হয় আগুন। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও হামলায় নিহত হয়েছেন এক পুলিশ সদস্য; আহত হয়েছেন পুলিশ, বিএনপি নেতাকর্মীসহ সংবাদমাধ্যম কর্মীরা। অপরদিকে এক যুবদল নেতা নিহত হওয়ার দাবি করেছে বিএনপি।
একই দিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ ঘিরে উদ্বেগ-আলোচনার মধ্যে আগের রাতে ও সকালের ভাগে নয়াপল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় নেতাকর্মীদের সরব যে অবস্থান ছিল, তা সংর্ঘষের পর পাল্টে যায়; রূপ নেয় রণক্ষেত্রে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাকরাইল থেকে বিজয়নগর, সেগুন বাগিচা, সিদ্ধেশ্বরী, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল, দৈনিক বাংলা, কাকরাইল মোড়ের আশপাশ, জাজেজ কোয়ার্টারস, রাজমনি মোড, আইডিবি ভবন, অডিট ভবন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে, শান্তিনগর, ডিসি রমনা ট্রাফিক অফিসের সামনেসহ মতিঝিল, পুরানা পল্টন এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
সংঘর্ষের পর যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুরো এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়ে। সংঘর্ষের এ দিনে রাজধানীর বেশ কয়েক জায়গায় বাসে, অ্যাম্বুলেন্সে ও মোটরসাইকেলে আগুনও দেয় দুর্বৃত্তরা।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক জানান, কাকরাইল মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর রাজধানীর শাহজাহানপুর, শান্তিনগর, মালিবাগ, কমলাপুরসহ অন্তত ১৫টি জায়গায় বাস ও যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। তাদের টিম পুলিশ প্রোটেকশন নিয়ে সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।
কাকরাইল মসজিদের সামনের মোড়ে একদল লোক কয়েকটি বাস ভাঙচুর করে। এসময় কাকরাইল মোড়ে একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ও আইডিইবি ভবনে রাখা একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সামনে ৬-৭টি গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বাস দুটিতে আগুন দেওয়া হয়। রাজধানীর মালিবাগ- মৌচাক ফ্লাইওভারে বলাকা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। কমলাপুরে বিআরটিসির একটি বাসেও আগুন দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের ঢাকা মেডিকেল ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একজন নিহত হয়েছে। ওই পুলিশ সদস্য দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় দায়িত্বরত ছিলেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেছেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাড়িসহ সরকারি স্থাপনায় হামলা করেছে। সরকারি স্থাপনায় হামলা ও গাড়িতে আগুনের ঘটনায় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাকরাইলে সংঘর্ষস্থলে গিয়ে তিনি জানান, শর্ত সাপেক্ষে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর বিএনপির কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে করার কথা থাকলেও হঠাৎ করে বেলা ১২টার পর থেকে দেখা গেল তারা প্রধান বিচারপতির বাড়ির ফটকে ও জাজেস কোয়ার্টারের সামনে আক্রমণ করেছে। আইডিবি ভবনের সামনে দুটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের সূত্রপাত
শনিবারের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আগের রাত থেকেই নয়াপল্টন এলাকায় জমায়েত হতে শুরু করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে দলে তারা আসছিলেন। দুপুরের দিকে পায়ে হাঁটা মানুষের স্রোত যাচ্ছিল নয়াপল্টনের দিকে।
এরমধ্যে দুপুর ১টার দিকে গাজীপুর থেকে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে আসা দুটি বাস কাকরাইল মসজিদ মোড়ে আটকে দেয় পুলিশ। নেতাকর্মীদের নেমে বাকি পথ হেঁটে সমাবেশে যেতে বলেন পুলিশ সদস্যরা। তবে নেতাকর্মীরা বাস নিয়েই বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটের সমাবেশে যোগ দিতে চায়। এ নিয়ে বাদানুবাদ চলছিল।
এসময়ই সেদিক দিয়ে নয়াপল্টনের সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া বিএনপির নেতাকর্মীরা বাস দুটির দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। লাঠিসোটা নিয়ে বাস দুটিতে হামলাও করে। এতে কিছুটা অপ্রস্তুত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যে যেদিকে পারে দৌড় দেয়। কয়েকজন ঢুকে পড়েন বিচারকদের আবাসিক এলাকায়। তাদের ধাওয়া করে সেখানে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এক পর্যায়ে সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে। সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ পেয়ে নয়া পল্টন থেকে আরও কয়েকশ নেতাকর্মী এসে সংঘর্ষে যোগ দেয়। এসময় সংঘাতে জড়িয়ে পড়া নেতাকর্মীরা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে আগুন দেয়, পুড়িয়ে দেওয়া হয় কাকরাইল মসজিদ মোড়ের ট্রাফিক পুলিশ বক্সটি। প্রধান বিচারপতির বাসভবনের গার্ড রুমের কাঁচও ভাঙচুর করা হয়। খবর বিডিনিউজ ও খবর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাকরাইল মসজিদ মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে সেখানে অবস্থান নেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে সার্কিট হাউজ রোড জুড়ে। ঘণ্টাখানেক সংঘর্ষের পর পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। এসময় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্যও আহত হন। মালিবাগ ফ্লাইওভারের উপর বলাকা পরিবহনের এ বাস ভাঙচুরের পর আগুন দেয় দুবৃর্ত্তরা।
বেলা সোয়া ২টার দিকে সেখানে সাত গাড়ি বিজিবি আসে। একটু পরেই মিন্টু রোড থেকে দল বেঁধে হেঁটে নয়াপল্টনের দিকে যেতে দেখা যায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের শতাধিক সদস্যকে। ততোক্ষণে সংঘর্ষে ছড়িয়েছে নয়াপল্টন এলাকায়। ওদিক থেকে বিস্ফোরণের শব্দ আসছিল।
বেলা পৌনে ৩টার দিকেই বিএনপির সমাবেশ থেকে নেতারা সরে যান, প- হয়ে যায় সমাবেশ। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে কাকরাইল, ফকিরাপুল, বিজয়নগর, সেগুন বাগিচা, সিদ্ধেশ্বরী, শান্তিনগর এলাকায়।
বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ সদস্য নিহত
রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে দৈনিক বাংলার মোড় এলাকায় এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার বিকেল ৪টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মো. পারভেজ নামের ওই পুলিশ কনস্টেবলের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে। তিনি দৈনিক বাংলা মোড়ে দায়িত্বরত ছিলেন বলে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান। তিনি বলেন, সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, ওই পুলিশ কনস্টেবলের মাথায় ‘কোপানো হয়েছে’।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘মৃত অবস্থাতেই ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তার মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। আমরা ইসিজি করার পর নিশ্চিত হয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেছি।’
পুলিশের গুলিতে কর্মী নিহত হওয়ার দাবি বিএনপির
রাজধানীর নয়াপল্টনে সংঘর্ষের সময় গতকাল পুলিশের গুলিতে গুলিতে শামীম মোল্লা নামের একজন বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম মোল্লা মুগদা থানা যুবদলের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর ইউনিটের সভাপতি। তার পিতার নাম ইউসুফ মোল্লা।
মিল্টন বলেন, শামীমকে গুরুতর অবস্থায় পুলিশ লাইন হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তিনি সেখানেই মারা যান।
নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সমাবেশ প-ের পর জনশূন্য নয়াপল্টন
ঢাকার নয়াপল্টনের চারপাশ ঘিরে সংঘর্ষের পর বিএনপির মহাসমাবেশ প- হলে সেখানে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শেষে পুরো এলাকা ফাঁকা হয়ে গেছে; নেতাকর্মীরা অলিগলি দিয়ে বিভিন্ন পথে চলে গেছেন, যাওয়ার সময় তাদের ছোঁড়া ইটপাটকেলে পুরো সড়ক ছেয়ে গেছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে সমাবেশ স্থলের কাছে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ ছড়াতে শুরু করলে সমাবেশের কাজ বন্ধ করা হয়। পরে সংঘর্ষ মাত্রা ছড়ালে সমাবেশ প- হয়ে যায়। কর্মীরা মঞ্চের মধ্যে ঘিরে রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীরসহ শতাধিক নেতাদের। টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজ বাড়তে থাকলে মির্জা ফখরুল হ্যান্ড মাইকে হরতালের ঘোষণা দেন।
এরপর অন্য নেতাকর্মীরা জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিরাপত্তা দিয়ে মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনেন। ধোঁয়ায় চারিদিক ছেয়ে গেলে তাদের সমাবেশস্থল ছেড়ে যেতে দেখা যায়। দলীয় কার্যালয়ে না গিয়ে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে কার্যালয় এখন কার্যত ফাঁকা।
বিকাল পৌনে তিনটার দিকে কাকরাইল ও ফকিরাপুল থেকে পুলিশ নয়াপল্টনের দিকে এগোতে থাকে। তখন নেতাকর্মীদের বড় অংশ বিভিন্ন গলি দিয়ে সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন। তবে অনেকে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে যান। এলোপাথারি ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকেন পুলিশের দিকে। পুলিশও লাঠিচার্জ করে। আহতদের কয়েকজন প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নেন।
বিকাল ৪টার মধ্যেই পুরো নয়া পল্টন, নাইটিঙ্গেল ও কাকরাইল এলাকা খালি হয়ে যায়। পুরো সড়ক ইটপাটকেলে ছেয়ে যায়।
সমাবেশ প- হওয়ার পর দলীয় কার্যালয়ে নেতারা ঢোকেননি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, আহত কয়েকজন কর্মী ব্রিফিং কক্ষের টেবিলে শুয়ে আছেন। অন্য কয়েকজন কর্মী তাদের সেবা শুশ্রষা করছেন। কার্যালয়ে মহিলা দলের ১০/১২ জন নেতাকর্মী রয়েছে।
কার্যালয়ের ভেতরে থাকা মহিলা দলের জেবুন্নেসা বলেন, ‘কাঁদুনে গ্যাসের ধোঁয়ায় আমরা এখানে আশ্রয় নিয়েছি। বাইরে যেতে পারছি না। আমারে একটু পার কইরা দেবেন ভাই ।’
আহত কয়েকজন কর্মীর দাবি, তারা কাকরাইল মোড়ে পুলিশের ছঁড়ড়া গুলিতে আহত হয়েছেন। পরে সহকর্মীরা ধরাধরি করে তাদেরকে কার্যালয়ে নিয়ে আসে।
সমাবেশ প-ের আধা ঘণ্টা আগে থেকে কাকরাইলে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে সংঘর্ষে জড়িতদের পিছু হটতে বাধ্য করে। এসময় নয়া পল্টনে সমাবেশ স্থলে থাকা নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। রাস্তায় বসে নেতাদের বক্তব্য শুনতে থাকা নেতাকর্মীদের বড় অংশ দাঁড়িয়ে যান।
এসময় মঞ্চ থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মাইক নিয়ে তাদের শান্ত হতে বলেন। তিনি বলেন, ‘ওরা আমাদের মহাসমাবেশের লোক সমাগম দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ প- করতে চায়। আপনারা শান্ত থাকুন, বক্তব্য শুনুন।’
এর ৫/৬ মিনিট পরই স্কাউট ভবনের কাছে পুলিশের ছোঁড়া কাঁদুনে গ্যাস এসে পড়ে। কিছু সময় পর তা কাকরাইল ও ফকিরাপুল মোড় থেকে পুলিশের ছোঁড়া কাঁদুনে গ্যাস মঞ্চের কাছে আসতে থাকে। একের পর এক সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। তখন নেতাকর্মীরা এদিক-ওদিক দৌড়াতে থাকেন। মঞ্চ একেবারে নেতা-কর্মী শূন্য হয়ে, সমাবেশ প- হয়ে যায়।
এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ ও সেলিমা রহমানসহ নেতারা কাঁদুনে গ্যাসের ধোয়ার মধ্যে নেমে কর্মী পরিবেষ্টিত অবস্থায় চলে যান।
এরপর কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল আহত হন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির উদ্যোগে সরকার পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবিতে এ মহাসমাবেশ হয়। বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়।