সুপ্রভাত ডেস্ক »
আওয়ামী লীগ ‘নিজেদের ভাগ্য গড়তে’ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়নি, বরং এ দল যখনই সরকারে এসেছে, দেশের মানুষের ‘উন্নতি’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যদি দেখা যায়- আজ পর্যন্ত এদেশের মানুষের যতটুকু অর্জন, সবটুকুই আওয়ামী লীগের হাতে। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।’
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছিলেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে সরকারে এসে আমরা যতটুকু অর্জন করতে পেরেছিলাম, ২০০১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে সবই নস্যাৎ করে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিল।
‘পাঁচ পাঁচ বার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেছে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকতে দুর্নীতিতে এক নম্বর, চ্যাম্পিয়ন। সেই ভাবমূর্তি বাংলাদেশের জন্য কতটা অসম্মানজনক।’
সেই অবস্থারও পরিবর্তন আওয়ামী লীগ করেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে এখন বিশ্বে একটা সম্মানজনক স্থানে আমরা নিয়ে গিয়েছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ‘অপশাসন’,‘অনিয়ম’,‘দুর্নীতি’র কথাও অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ দেশের প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে আওয়ামী লীগের ‘ভালো জানাশোনা; আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দেশটা আমাদের। আমরা যতটুকু চিনি, জানি এদেশের প্রকৃতি, এদেশের পরিবেশ, এদেশের মানুষ, মানুষের কল্যাণ আওয়ামী লীগ যতটা বুঝবে; অন্যেরা তা বুঝবে না।
‘বুঝবে কী করে? বিএনপির মনেই আছে পাকিস্তান। দিল মে হ্যায় পেয়ারে পাকিস্তান। সারাক্ষণ ওই গুনগুন করে গানই গায়।… আঁখো কি তারা, আসমান কি চাঁন। মেরে জান, পাকিস্তান।’ এই হল খালেদা জিয়ার কথা।’ এ ধরনের মানসিকতা যাদের, তাদের বাংলাদেশের ‘ভালো না চাওয়াটাই স্বাভাবিক’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি তার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এটা নিয়ে আপনাদের এত দুঃখ করার, চিন্তা করার কিচ্ছু নাই। আর ওদের কথা যতটা না বলা যায়, ততটাই ভালো। কারণ ওরা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।
‘বরং এগুলোকে সবগুলোকে গাট্টি বাইন্ধা পাকিস্তানে পাঠায় দিলেই ভালো হয়। কারণ পাকিস্তানের এখন যা অবস্থা ওখানে থাকলেই তারা ভালো থাকবে। এখনও লাহোরে সোনার দোকানে খালেদা জিয়ার বড় ছবি আছে যে ওই দোকানের সোনার গহনা তার খুব প্রিয়। তাদের মানসিকতা ওই দিকেই, আমাদের বাংলাদেশের জন্য না।’
জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, এইচ এম এরশাদ- কারও জন্মই বাংলাদেশে নয় বলেও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকুক বা বিরোধী দলে থাকুক, সবসময় দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সবার আগে মানুষের পাশে থাকতে ছুটে গেছে এবং সহযোগিতা করেছে।
‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ জনগণের সেবা করে। জনগণের সেবক। জনগণের পাশে থাকে এবং জনগণের পাশেই থাকবে; সেই আদর্শই আমাদের জাতির পিতা শিখিয়েছেন আর সেই আদর্শ নিয়েই আওয়ামী লীগ চলবে।’
মানুষের বিশ্বাসই আওয়ামী লীগের ‘শক্তি’ মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা প্রত্যেকটা- যা ওই জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে নিষিদ্ধ করেছিল, একে একে আমরা সব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ইনশাল্লাহ এই দেশ উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে।’
অর্থসম্পদ আজীবন থাকে না, সেই কথা মনে রেখে জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে ‘জনগণের সেবক’ হিসেবে কাজ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘অনেক অর্থ থাকলেও কিছু আসে যায় না, এবার করোনার সময় অনেক বিত্তশালীরাও টের পেয়েছে। কাজেই সেটা মাথায় রেখেই জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মী, জাতির পিতার আদর্শ মেনে চলবে।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। দলের জ্যেষ্ঠ নেতারাও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।