মেলায় জনসমাগম বেড়েছে

অমর একুশে বইমেলার পঞ্চম দিন

হুমাইরা তাজরিন »
বইমেলার পঞ্চম দিনে বেড়েছে জনসমাগম। মেলায় এসেছে বেশ কয়েকটি নতুন বই। কবিতার মূর্ছনায় মূখর ছিলো বইমেলার পঞ্চম দিন।
স্ত্রীকে সঙ্গে করে মেলায় এসেছিলেন মো ইলিয়াস। উপন্যাস ও কবিতার বইগুলো তাদের বিশেষ পছন্দের। সুপ্রভাতকে ইলিয়াস বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা মুখিয়ে থাকি বইমেলার জন্য। কাজের ব্যস্ততায় এই কটা দিন আসার সুযোগ হয়নি। আজ আসলাম। আমাদের দুজনেরই বই পড়ার অভ্যাস আছে। আমার স্ত্রীর পছন্দ উপন্যাস। আমার পছন্দ কবিতা। আজও কবিতা এবং উপন্যাসই দেখছি, কিনছি।’
গতকাল ১৩ ফেব্রুয়ারি ছিলো বইমেলার পঞ্চম দিন। শিরীষতলায় গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় জনসমাগম বেড়েছে মেলায়। নানা আয়োজন উপভোগ করছেন দশর্নার্থীরা। বেশ আনন্দে ঘুরছেন, বই দেখছেন, কিনছেন। বই কেনা ছাড়াও, অনেকেই উপভোগ করছেন অনুষ্ঠান। গাছতলায় বসে কবি ও আবৃত্তিশিল্পীদের পরিবেশনা উপভোগ করছেন দর্শকেরা। এছাড়া পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের নিয়ে এসেছেন বইমেলার নতুন সংযোজন শিশু কর্নারে। যেখানে শিশুদের প্রিয় কয়েকটি রাইডে চড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও আশপাশের পিঠা, ফাস্ট ফুড ও নানা রকম খাবারের দোকানেও ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা ।
পঞ্চম দিনের আয়োজনে ছিলো কবিতাপাঠ ও আবৃত্তি উৎসব। কবিতা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড.সুকান্ত ভট্টাচার্য, বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, কবি ফাইজুল কবির। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবৃত্তি শিল্পী ও সংগঠক রাশেদ হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল মোমেন বলেন, ‘বই একটা অনুসঙ্গ প্রতিটি ঘরে। বই না পড়লে সংস্কৃতিবোধ গড়ে উঠবে না। বই না পড়লে শিক্ষা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যার ফলে আলোকিত মানুষ গড়ে তোলা সম্ভব না। আমি শিক্ষামন্ত্রীকে বলেছি এবার শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।’
ধারাবাহিক আয়োজনে আগামী দিন থাকবে বসন্ত উৎসব। দর্শকদের মাতাতে উপস্থিত থাকবেন মীরাক্কেল খ্যাত কৌতুক অভিনেতা আরমান। এদিনে বইমেলায় এসেছে নতুন কয়েকটি বই। যার মধ্যে রয়েছে খড়িমাটি প্রকাশনী থেকে মামুরা মমতা দীপার কবিতার বই ‘মুগ্ধতার আড়ালে’। ফুলকি প্রকাশনী হতে ছোটদের বই। অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনী থেকে মাইনুল এইচ সিরাজী ‘সেপ্টেম্বর বিভ্রম’, কামরুল হাসাস বাদলের ‘খুন ও হুইসেল’, এছাড়া রয়েছে ধারাবাহিক রহমাতুল্লাহ রাফিরন অনুবাদিত বই ‘হাউ টু সিট’।
আজ মেলায় আসা ‘খুন ও হুইসেল’ গল্পগ্রন্থটিতে রয়েছে মোট ৯টি গল্প। যার মধ্যে ‘খুন ও হুইসেল’, ‘কর্পুর ও ‘যে রাতে আমি মদ্যপান করিনি’ নামক তিনটি মনস্তাত্বিক গল্প। এছাড়াও আছে প্রভাবশালী ধনীদের জমি দখলের অভিনব গল্প ‘জমিনদার’। দলীয় স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহারের গল্প ‘আবসেরাব’। এছাড়াও ‘খুন ও হুইসেল’ গ্রন্থে গল্পের বিষয়বস্তু হিসেবে স্থান পেয়েছে সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্বৃত্তায়ন, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, রাজনৈতিক বড় ভাইদের তৃণমূল কর্মীদের ব্যবহার ও ছুঁড়ে ফেলা ইত্যাদি।
বইমেলা চলবে আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত। ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা এবং অন্যান্য দিনে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে মেলা।