স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামে শহরে মেট্রোরেল নির্মাণের দাবি পূরণ করা হবে। তবে প্রথমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এক্সপ্রেসওয়ে হবে। এ সড়ক ঢাকা-মাওয়া সড়কের পরে দ্বিতীয় এক্সপ্রেসওয়ে হবে। জাপান আগে একবার ফিজিবিলিটি করেছে। তারা দ্বিতীয়বার এ ফিজিবিলিটি করতে চাইছে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গতকাল শনিবার সকালে লালখানবাজার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভার্চুয়াল সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঋণগ্রস্ত বাংলাদেশ এখন ঋণদাতা দেশ। এই করোনা মহামারিতে শ্রীলঙ্কাকে ২০০ মিলিয়ন ডলার এবং সুদানকে ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭২৭ ডলার। গতবছর রেমিট্যান্স এসেছে ৭ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভ এখন ৪৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
চট্টগ্রামের অগ্রযাত্রার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফুলে ফুলে শোভিত হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়ক। চট্টগ্রামে আমরা চার লেনের রাস্তা করেছি। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এক্সপ্রেসওয়ে হবে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ প্রায় ৬৯ শতাংশ হয়ে গেছে। আশা করি, আগামী বছর কর্ণফুলী টানেল, দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র নদীর তলদেশে টানেল- এটি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।
তিনি উন্নয়নশীল দেশের তকমা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, ১২ বছর আগে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ ১২ বছর পরে উন্নয়নশীল দেশের তকমা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আলোর দিশারি হয়ে এই বাংলাদেশের চেহারা বদলে দিয়েছেন। যে বাংলাদেশকে আজকে বিশ্ব সমীহ করে। প্রত্যেকটি সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে এ দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশের দারিদ্রসীমা ২০ শতাংশে এসে ঠেকেছে ও অতিদরিদ্রর সংখ্যা ১১ শতাংশ। তিনি ঘটা উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিধ্বংসী পারমাণবিক বোমা ছাড়া বাংলাদেশ সব দিক থেকে এগিয়ে আছে।
করোনা মহামারি বিষয়ে তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রকট সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে শঙ্কিত। ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত দিচ্ছেন। বোঝাই যাচ্ছে সামনের দিনগুলো খুব ভালো যাবার নয়। নিজ নিজ অবস্থান থেকে পদক্ষেপ নিতে হবে আত্নরক্ষার, সাধারণ মানুষকেও বাঁচাতে হবে।
সম্মেলনে নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন নেতৃত্ব বাছাই একটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। এর সাথে কারো পরাজয়ের সম্পর্ক নেই, তেমনি কারো বিজয়ে উল্লাসের কিছু নেই। যারা নির্বাচিত হবেন তাদের ওপর বড় দায়িত্ব বর্তায়। যারা নির্বাচিত হবেন সকলে সততা, নিষ্ঠার সাথে রাজনীতি চর্চা করবেন। দেশপ্রেমিক কর্মীরাই দেশনেত্রী শেখ হাসিনার শক্তি, আওয়ামী লীগের শক্তি।
এসময় দুটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামনে আমাদের দু’টি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে করোনা প্রতিরোধ করা, দ্বিতীয়টি হচ্ছে উগ্র সাম্প্রদায়িকতাকে মোকাবেলা করা। এই দু’টি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে এগিয়ে যাবে- এটাই প্রত্যাশা করি।
অপশক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি মহল এই উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছে না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। পূর্ণিমার ঝলমলে আলোতে এই দলটি অমাবস্যার অন্ধকার দেখে। দলটি বিএনপি। দেশের এই অমিত সম্ভাবনা উন্নয়ন ও অর্জন বিএনপির গাত্রদাহ, তাই তারা দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন-অর্জন তাদের গাত্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ চলমান উন্নয়নকাজ যখন শেষ হবে তখন বিএনপির আর কথা বলার মত মুখ থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, তাদের আমলের এমন কোনও উন্নয়নচিত্র নেই, যেটা দেখিয়ে তারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে। নেতিবাচক রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করে বিএনপি দিনে দিনে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা পিছিয়ে দিয়ে দেশটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্য তাদের। এই লক্ষ্য সামনে রেখে দেশকে অস্থিতিশীল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় তারা। তাছাড়া সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে তারা। পূর্বেও স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক ও উন্নয়নবিরোধী সকল অপশক্তি বিএনপির নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছে। যা এখনো বহাল রয়েছে। কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের কাছে যেকোন ষড়যন্ত্র ভেস্তে যাবে।