মিডলঅর্ডারে ‘জগাখিচুড়ি’ নিয়ে অনেক প্রশ্ন!

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

‘সাজানো-গোছানো’ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে পরীক্ষায় বসালেন হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কয়েক মাস ধরেই চলছে পরীক্ষা। অস্বস্তিকর এই পরীক্ষা যেন শেষই হচ্ছে না। বিশ্বকাপের মত বড় আসরেও পরীক্ষার অংশ হিসেবে ব্যাটিংঅর্ডার পরিবর্তন করা রুটিনে রূপ নিয়েছে লঙ্কান কোচের। নানান বিতর্কের জন্ম দিয়ে ভারত বিশ্বকাপে খেলতে গেছে বাংলাদেশ দল। স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। তার বদলি হিসেবে আনা হয়েছে বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতাশূন্য ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিমকে। বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে তাকেও ছন্দে দেখা যাচ্ছে না।
এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচ খেলেছে। তুলনামূলক দুর্বল দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে পেয়েছে একমাত্র জয়। বাকি দুটিতেই হেরেছে বাজেভাবে। প্রতিটি ম্যাচেই ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এনেছেন কোচ হাথুরু। সবশেষ গতকাল (শুক্রবার) ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও তার এমন পরিকল্পনা ছিল অনেকটা দৃষ্টিকটু। একজন ক্রিকেটারকে তার পজিশনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার যে একটি বিষয় আছে সেটা যেন হাথুরুসিংহে ভুলতে বসেছেন। যার ফল হিসেবে বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে বাজেভাবে। ওই ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্তকে খেলানো হয়েছে ৪ নম্বর পজিশনে। অথচ গত এক বছর ধরে তিনটি ফরম্যাটেই ৩ নম্বর পজিশনে খেলেছিলেন তিনি। শান্তর জায়গায় খেলানো হয়েছে মেহেদি হাসান মিরাজকে। চলতি বছর দলের উদীয়মান ব্যাটার তাওহিদ হৃদয় সবচেয়ে বেশি রান করেছেন ৫ নম্বর পজিশনে। গতকাল তিনি খেলেছেন ৭ নম্বরে। এছাড়া ’মিস্টার ডিফেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিম খেলেছেন ৬ নম্বরে। অপরদিকে আগের পরিসংখ্যান বলছে, তাকে খেলানো উচিত ছিল ৪ নম্বরে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তারপরের ম্যাচ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এরপর গত ম্যাচে তিনি খেলেছেন ৮ নম্বরে। অথচ ২০১০ সালের পর থেকে তাকে এমন লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করতে দেখা যায়নি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের পর ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটিংঅর্ডারের জগাখিচুড়ি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন দলের সহ-অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। জানতে চাওয়া হয়, কেন এমন পরিবর্তন? শান্ত সহ-অধিনায়ক হলেও এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। জানিয়েছেন, অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে প্রশ্নটি করলে ভালো হবে। তবে শান্ত জানিয়েছেন, দলের এই পরিবর্তনের বিষয়ে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি স্বীকার করেছেন যে, নতুন পজিশনের সাথে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগছে। শান্ত বলেন, ‘দলের জন্য আমি যেকোনো পজিশনে ব্যাট করতে প্রস্তুত। এর আগে আমি ৪ নম্বরে রান করেছি। বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচে কেবল রান করিনি, সিদ্ধান্ত (অর্ডার পরিবর্তনের) অধিনায়ক এবং কোচের। তারা আমাকে যেখানে বলবেন আমি সেখানেই ব্যাট করতে পারি। এটা মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগে। যেকোনো পজিশনে ব্যাট করার জন্য সবাইকে প্রস্তুত হতে হবে। আমরা আমাদের ব্যাটিং পজিশন সম্পর্কে সচেতন।’
বাংলাদেশের এই টপঅর্ডার বলেন, ‘নতুন পজিশনে কেউ পারফর্ম করেনি বলেই এটি নিয়ে আমরা কথা বলছি। এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যখন মেহেদিকে টপঅর্ডারে পাঠানো হয়েছিল, তখন আমরা এটি নিয়ে বেশি কথা বলিনি। এর মধ্যে কিছু জিনিস ঠিক আছে, কিছু ভুল। ব্যাটাররা রান করেনি। মিরাজ এবং আমি বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশনের জন্য ওই পজিশনে ব্যাট করেছি। নতুন বলের বিপক্ষে আমাদের দুইজন বাঁহাতি থাকতে পারে। কিন্তু অর্ডারের নিচে আমাদের বেশি বাাঁহাতি নেই।’
শান্ত আরও বলেন, ‘যে ব্যাটারদের কেউই অর্ডার পরিবর্তনের বিষয়ে অভিযোগ করেননি। আমি মনে করি, কিছু টিমে যারা ৪, ৫ এবং ৬ নম্বরে ব্যাট করে তাদের ব্যাটিং অর্ডার স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন করা যায়। আমাদের দলের প্রতিটি ব্যাটারও বেশ স্বস্তিতে থাকেন। প্রতিদিন তাদের নতুন ব্যাটিং পজিশন দেওয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগ কেউ করে না।’ খবর ঢাকা পোষ্টের