নিজস্ব প্রতিবেদক »
তিন দফা জানাজা শেষে গরীবুল্লাহ শাহ মাজার (রহ.) মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে বর্ষীয়ান রাজনীতিক মোছলেম উদ্দিন আহমদের লাশ দাফন করা হয়েছে। সেখানে মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার মানুষ এ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। এতে ইমামতি করেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পেশ ইমাম মওলানা নূর মোহাম্মদ সিদ্দিকী।
জানাজার পূর্বে মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য রাখেন- ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক এমপি, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, বিএনপি নেতা, সাবেক মেয়র মীর নাছির উদ্দীন, জাতীয় পার্টি নেতা সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম এমপি, আতাউল্লাহ এমপি, সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, বদিউল আলম, আবদুচ সালাম, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, মশিউর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন, আবু তাহের ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মুজাফ্ফর আহমদ।
মোছলেম উদ্দিনের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘তিনি ছিলেন গণমানুষের নেতা। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে সব আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রসেনানী ছিলেন।’
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন ছিলেন একজন রাজনৈতিক শিক্ষক। ছোট-বড় অসংখ্য সংগঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। আপাদমস্তক এ রাজনীতিকের জীবনী থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গণে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে।’
মরহুমের রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের কথা তুলে ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন আহমদ ত্যাগী নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুতে একজন রাজনৈতিক বন্ধু হারিয়েছি।
প্রসঙ্গত, রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা ৪৭ মিনিটে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন। জানা যায়, করোনাকালে এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ক্যান্সার শনাক্ত হয়। এরপর গত দুই বছর ক্যান্সারের সঙ্গে লড়েছেন তিনি। তার পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও রয়েছেন চার মেয়ে।
মোছলেম উদ্দিন আহমদ ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের সরকারি কমার্স কলেজ শাখার সহসভাপতি নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ১৯৮২ সালে ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মইন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হন।