ভোগান্তিতে ডেলিভারি রোগী ও স্বজনেরা

nor

চসিক মেমন হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে লিফট অচল

নিজস্ব প্রতিবেদক »

নগরীর কোতোয়ালী থানার সদরঘাট ও কালীবাড়ি সড়কে মেমন মাতৃসদন হাসপাতালের দুই শাখায় দীর্ঘদিন ধরে লিফট নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন চিকিৎসা নিতে আসা ডেলিভারির রোগীরা। এমন সমস্যা নিত্যদিনের হলেও লিফট মেরামত করার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের রোগীদের ভোগান্তির একটি ভিডিও সুপ্রভাতের প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক রোগীকে বহন করে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে রোগীর স্বজনেরা তাকে বেডে নিয়ে যাচ্ছেন।
গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে নগরের সদরঘাট রোডের সিটি করপোরেশন পরিচালিত মেমন মাতৃসদন হাসপাতালের দুটি শাখা ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান (সদরঘাট) শাখায় দুটি লিফট থাকলেও একটি নষ্ট। অন্যদিকে সদরঘাট কালীবাড়ি রোডের দ্বিতীয় শাখায় দেখা যায়, দুটি লিফটের একটি ৫/৬ বছর ধরে নষ্ট পড়ে আছে। যার সামনে ময়লার ঝুড়ি ও পাশে ডাস্টবিনের বক্স বসিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই। এবং অন্যটি প্রায়ই নষ্ট হয়ে যায়। ওই হাসপাতালের জেনারেটরও কিছুদিন পরপর নষ্ট হয়ে যায় বলে লিফটম্যান ও রিসিপশনিস্টের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, হাসপাতালের গেটে ময়লার ভাগাড়, বাথরুমে আবর্জনা, লিফটের সামনে ময়লার ঝুড়ি। লিফট নষ্ট হওয়ায় রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রেও জানা যায়।
মেমন হাসপাতালের (দ্বিতীয় শাখা/ কালীবাড়ি রোড শাখা) লিফট ও জেনারেটরম্যান কৃষ্ণ দাশ বলেন, ‘ময়লার ঝুড়ি রাখা বেডলিফটি প্রায় পাঁচবছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। আরেকটি লিফট প্রায়ই সময় নষ্ট হয়ে যায়। এখন তেমন চালানো হয় না। আর কিছুদিন পরপর জেনারেটরও নষ্ট থাকে। রোগীদের সিঁড়ি বেয়ে বেডে নিয়ে যাওয়া হয়।’
মেমন হাসপাতালের (প্রথম শাখা/ সদরঘাট) লিফটম্যান ছালেহ আহমদ বলেন, ‘আমাদের দুটি লিফট রয়েছে, যার মধ্যে ১৫ থেকে ২০ দিন পর একটি নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে সচল আরেকটি দিয়ে রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা থেকে লিফটের মিস্ত্রী আসবে বলে শুনছি।’
গতকাল শনিবার সদরঘাট মেমন হাসপাতালের ১ নম্বর শাখায় চিকিৎসা নিতে আসা হুমায়ুন নামের এক রোগী বলেন, এখানে সব লিফট বন্ধ। বি-ব্লকের একটি লিফট বিকালে চালু থাকে কয়েক ঘণ্টার জন্য। আমাদের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা মো. তাউসিফ নামের আরেক রোগী বলেন, ‘মেমন হাসপাতালে রোগীদের কষ্টের শেষ নেই। এখানে রোগীদের জন্য লিফটের ব্যবস্থা থাকলেও তা অচল। যার কারণে ডেলিভারি রোগীদের সমস্যার শেষ নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেমন হাসপাতালের (দ্বিতীয় শাখা) ইনচার্জ ডা. দীপা ত্রিপুরা বলেন, ‘আমি এই হাসপাতালে যোগ দিয়েছি ২০১২ সালে থেকে। এরপর থেকে কয়েকটি বিষয়ে উন্নয়নমুখী কাজ হলেও লিফট ও জেনারেটর প্রায়ই নষ্টের পথে। একটি লিফট তো চার/ পাঁচ বছর ধরেই নষ্ট। তবে আমরা এসব বিষয় চসিক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি, শীঘ্রই মেরামত করা হবে।’
মেমন হাসপাতাল (সদরঘাট শাখা)-এর ইনচার্জ ডা. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে দুটি লিফট রয়েছে। যে দুটি দিয়ে সকাল ও বিকালে রোগীদের সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে সকালের লিফটটি নষ্ট। তাই অন্য লিফটে সেবা পেতে রোগীদের একটু ভোগান্তি হচ্ছে। তবে নষ্ট হওয়া লিফটটি ঠিক করার প্রক্রিয়া চলছে।’
দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকা লিফট প্রসঙ্গে জানতে চাইতে চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তার চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার তার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।