সুপ্রভাত ডেস্ক »
ভারতে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাঁওতাল নারী দ্রৌপদী মুর্মু। যদিও ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু নির্বাচিত হতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভোট তিনি পেয়ে গেছেন। বিজেপির পছন্দের প্রার্থী দ্রৌপদীই প্রথম কোনও আদিবাসী নারী যিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করতে চলেছেন। খবর বিডিনিউজের।
দ্রৌপদী ভারতের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে আগামী ২৫ জুলাই শপথ নেবেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ ওইদিন শেষ হবে।
সাবেক শিক্ষক ৬৪ বছর বয়সের দ্রৌপদী ওড়িশার মেয়ে। গত কয়েক দশক ধরে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ঝাড়খ-ের প্রাদেশিক গভর্নর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভারতে রাষ্ট্রপতি পদটি অনেকটা অলঙ্কারিক। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ হলেও দেশ পরিচালনায় রাষ্ট্রপতির তেমন কোনও ভূমিকা নেই।
পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের (লোকসভা এবং রাজ্যসভা) সদস্য, দেশটির সবগুলো রাজ্যের বিধানসভার সদস্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর প্রতিনিধিদের ভোটে ভারতে একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
কে এই দ্রৌপদী মুর্মু ?
দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে প্রথম গণমাধ্যমে হইচই হয়েছিল ২০১৭ সালে। সেবার গুঞ্জন রটেছিল, বিজেপি তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তার নাম বিবেচনা করছে। তিনি ওই সময় ঝাড়খ- রাজ্যের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
১৯৫৮ সালের ২০ জুন ময়ুরভাঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করনে দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এবং বৃহৎ আদিবাসী গোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মেয়ে।
একটি গ্রামের গ্রাম প্রধানের মেয়ে দ্রৌপদী রাজ্যের রাজধানী ভূবনেশ্বরের রামাদেবী উইমেন্স কলেজে লেখাপড়া করেছেন।
ওড়িশা রাজ্য সরকারের একজন কেরানি হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যের কৃষি ও জ্বালানি অধিদপ্তরে একজন জুনিয়র এসিস্টেন্ট হিসেবেও কাজ করেছেন।
১৯৯৪-৯৭ সাল পর্যন্ত রাইরংপুরে শ্রী অরবিন্দ ইনটেগরাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। দ্রৌপদীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। সেবার তিনি রাইরংপুরে স্থানীয় নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
বিজেপি’র হয়ে রাইরংপুর আসন থেকে তিনি ২০০০ ও ২০০৯ সালে দুইবার বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০০-২০০৪ সালে তিনি রাজ্যের জোট সরকারের একজন মন্ত্রীও ছিলেন।
প্রথমে বাণিজ্য ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করলেও পরে তিনি মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় সামলান। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্য বিজেপি’র ‘পিছিয়ে পড়া আদিবাসী’ শাখার প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
ঝাড়খ- রাজ্যের প্রথম নারী রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১৫ সালে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিদায় নেন। দ্রৌপদী ওড়িশার প্রথম আদিবাসী নেত্রী যিনি রাজ্যপালের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত টানা ছয় বছর তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। বিবিসি জানায়, দ্রৌপদী মুর্মু বেশ সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কার্যালয়ের দরজা সব সময় সব শ্রেণীর মানুষের জন্য খোলা থাকত।