সুপ্রভাতকে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
সমুদ্র বাণিজ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমিকা নিয়ে সুপ্রভাতের সঙ্গে কথা বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের বিদ্যমান কার্যক্রম, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর ও বে-টার্মিনালের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান।
সুপ্রভাত : সমুদ্রবাণিজ্যের অগ্রগতিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে অনেক কাজ করেছে। এরমধ্যে আপনি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য মনে করছেন কোন কোন কাজকে?
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী : চট্টগ্রাম বন্দরের প্রতিটি কাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। কেননা এ বন্দর দেশের সিংহভাগ রাজস্ব উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি করছে। তবে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য বার্তা হলো- আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তারা যেহেতু এখানে ব্যবসা করতে আসবে, তারা স্বভাবত তাদের লাভের চিন্তা করবে। কিন্তু লাভ কখনো একপক্ষের হয় না। তারা পোর্ট ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি আমাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে। এতে আমরা আরও স্কিলড হওয়ার সুযোগ পাবো। এছাড়া আমাদের পড়ে থাকা জায়গায় তারা ইনভেস্ট করবে। যে স্ট্রাকচার তৈরি করবে, সেটাতো তারা আর ভেঙে নিয়ে যাবে না। বন্দরের দক্ষতা যত বাড়ানো হবে, তত বেশি ওই অঞ্চলের স্ট্রাকচারাল ডেভেলপমেন্ট হবে।
সুপ্রভাত: চট্টগ্রাম বন্দর কি তাহলে ল্যান্ডলর্ড পোর্টের নীতি অনুসরণ করবে?
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: বিশ্বের সব উন্নত বন্দরগুলো প্রাইভেট অপারেটরের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমরা যাদের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ করবো, তারা আমাদের শর্ত মেনে কাজ করবে। এটি নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন ও ভ্রান্ত ধারণা আছে। কিন্তু সবাইকে বুঝতে হবে, পোর্ট একটি দেশের হলেও তার ওপর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কানেক্টিভিটি নির্ভর করে। তাই পোর্টকে আন্তর্জাতিক নীতি অনুসরণ করতে হয়। সে নিয়মে বিদ্যমান পোর্ট ছাড়া বাকি কিছু কিছু টার্মিনালে পোর্ট ল্যান্ডলর্ডের ভূমিকা পালন করবে।
সুপ্রভাত: ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি বে-টার্মিনাল। কিন্তু এ প্রকল্পের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। প্রকল্পটি কবে নাগাদ শুরু হবে?
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: এটি সত্য যে, ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি ও আমাদের পরিকল্পনায় বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প থাকার পরও কাজ সেভাবে হয়নি। তবে কোনো পরিকল্পনা যখন শক্ত হয়, তখন কাজটি স্বভাবত ভালো হয়। এটির পরিকল্পনা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু সময় লেগেছে। সব সমস্যা রিভিউ করে দেখা হচ্ছে, যেন কাজটি সঠিকভাবে হয়। এ প্রকল্প নিয়ে এখন আর কিছু বলবো না। শুধু বলবো- আর কিছুদিন অপেক্ষা করেন। বে-টার্মিনাল নিয়ে সবার প্রত্যাশা পূরণ হবে।
সুপ্রভাত: মাতারবাড়ি প্রকল্প নিয়ে কিছু বলবেন?
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের কারণে আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা আরও ত্বরান্বিত হবে। কেননা এটির ড্রাফট হবে ১৬ মিটার। এখানে মাদারভ্যাসেল ভিড়বে। ফলে এখান থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরসহ মোংলা ও পায়রাতে তো যাবেই, পাশাপাশি আমাদের কাছাকাছি থাকা অন্য দেশের পোর্টের সার্পোটিভ হবে। এখন আমাদের পণ্যবাহী মাদারভ্যাসেলগুলো সিঙ্গাপুরে যায়। তখন সরাসরি মাতারবাড়িতে চলে আসবে। প্রকল্পটির কাজ শুরুর প্রায় সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অক্টোবরে প্রকল্পটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন হবে।