বেশ কয়েকটি নতুন বই এসেছে

অমর একুশে বইমেলার সপ্তম দিন

হুমাইরা তাজরিন »
বইমেলার সপ্তম দিনে জনসমাগম বাড়লেও বিক্রিতে ভাটা বলছেন বিক্রেতারা। অন্যান্য দিনের তুলনায় সপ্তম দিনে মেলায় এসেছে বেশ কয়েকটি নতুন বই।
খড়িমাটি প্রকাশনীর স্টল থেকে মাসুদ্লু রহমান বলেন, ‘এখানে অনেকেই আসছেন তবে বই বিক্রি ছুটির দিন ছাড়া সেভাবে হচ্ছে না। মেলায় ক্রেতা সেভাবে নেই। সবাই আসছেন, ঘুরছেন ও ছবি তুলছেন। গতকাল (বুধবার) সরস্বতী পূজার বন্ধ থাকায় কিছুটা ভিড় ছিলো এবং তুলনামূলক ভালো বিক্রি হয়েছে। আজ আবার ক্রেতা নেই। ’
দুই মেয়েকে সঙ্গে করে মেলায় এসেছিলেন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন। মেয়েদের পরিচিত করছেন বিখ্যাত লেখকদের কালজয়ী সাহিত্যকর্মের সাথে। কিনছেন নতুন বইও। মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘মেলায় এসে দেখলাম নতুন প্রজন্মের বইয়ের প্রতি বিশেষ আগ্রহ নেই। তারা কেবল ঘুরছেন ছবি তুলছেন। তবে আমি নিজের জীবন অভিজ্ঞতায় বুঝতে পেরেছি, একজন মানুষকে সমৃদ্ধ করতে বইয়ের বিশেষ ভূমিকা থাকে। তাই আমি চেষ্টা করেছি আমার সন্তানদেরকে বইয়ের সংস্পর্শে রাখতে। তাদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে এবং ভালো লেখার সাথে পরিচিত করতে।’
অন্যান্য দিনের তুলনায় গতকাল দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিলো বেশি। তবে বইয়ের স্টলের চেয়ে মেলার বাইরে বাহারি খাবারের দোকানে ছিলো বিশেষ ভিড়। যেখানে বিক্রি হচ্ছে নানা ধরনের চা, পিঠাসহ মুখরোচক সব খাবার। এছাড়া শিরীষতলায় দর্শনার্থীরা উপভোগ করছেন সাংস্কৃতিক আয়োজন। পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের নিয়ে এসেছেন বইমেলার নতুন সংযোজন শিশু কর্নারে। যেখানে শিশুদের প্রিয় কয়েকটি রাইডে চড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
সপ্তম দিনের আয়োজনে ছিলো কলম একাডেমি লন্ডনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। সাংস্কৃতিক আয়োজনে ছিলো কবিতা ও গান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের। সভাপতিত্ব করেন কলম একাডেমি লন্ডনের বাংলাদেশ শাখার সভাপতি করুণা আচার্য। আলোচনা সভা ছাড়াও সম্মেলনের আয়োজনে ছিলো ‘অক্ষরে অমরতা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, গুণিজন সংবর্ধনা।
ধারাবাহিক আয়োজনে আগামী দিন থাকবে শিশু উৎসব। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম।
এ দিনে মেলায় এসেছে বেশ কয়েকটি বই। এর মধ্যে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনী থেকে হিমেল মাহমুদের ১৬টি গল্প নিয়ে গ্রন্থ ‘লাল প্রাইভেট কার’, বিশ্বজিৎ চৌধুরীর উপন্যাস ‘তুমি কি ভালোবেসেছিলে’, অমল বড়ুয়ার প্রবন্ধগ্রন্থ ‘যাপিত জীবনের পটলেখা’। শৈলী সিমলা চৌধুরীর লেখা ছোটদের বই ‘বাকসোবন্দী ভূত’, রত্না বনিক ‘মায়ের বোলে ছন্দ দোলে’, খুরশীদ আনোয়ারের ‘প্রেম শহরের পথে ’, কাসেম আলী রানার ‘চিত্রমানব’, বনশ্রী বড়ুয়ার ‘আর্য সত্য’। নন্দন বইঘর থেকে প্রকাশ পেয়েছে অটল ভৌমিকের ‘মরে যাইয়ুম ঘুমে’, সোহানা সুলতানার ‘চতুর্মিতি’, শাহিদ হাসানের ‘ওরফে আবু দাউদ’, বিশ্বজিৎ রাহার ‘ভাঙা হাটে ভাঙার গান’। কথাপ্রকাশ থেকে প্রকাশ হয়েছে ইকবাল খন্দকার রচিত ‘রহস্যময় যাত্রী ছাউনি ’ ও ‘অদৃশ্য নাইট গার্ড’, নাজমুল হুদা রচিত ‘অনুর্ধ্ব উনিশ -তারুণ্যের প্রেরণাকথন’, মজিদ মাহমুদের লেখা নজরুলের জীবন ভিত্তিক উপন্যাস ‘তুমি শুনিতে চেয়ো না’, আফসানা বেগমের ‘প্রতিচ্ছায়া’, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ‘সাতচল্লিশের দেশভাগে গান্ধী ও জিন্নাহ’, আবুল ফজল রচিত ‘রাজ অরাজ’, তারেক আজিজ রচিত ‘অতীত ঢাকার আশ্চর্য ইতিহাস’। প্রথমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে আনোয়ারা সৈয়দ হক রচিত ‘নিঃসঙ্গ পিরামিড ’, বিশ্বজিৎ চৌধুরীর ‘লাল বাড়িটা ডেঞ্জারাস’, ইসমাইল আরমান রচিত ‘থ্রি চিয়ার্স ফর অয়ন -জিমি’। বাতিঘর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে আবুল আহসান সম্পাদিত ‘অবিদ্যার অন্তঃপুরে’। চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে মঈন ফারুক রচিত ‘এ শহরে মানুষ হাঁটে না রাস্তা হাঁটে’ ও ‘কে যেন আছে’। খড়িমাটি থেকে প্রকাশিত হয়েছে রায়হানা হাসিবের উপন্যাস ‘এসো কিংশুক ফাগুনে’, ফেরদৌস আরা আলীম ‘প্রবন্ধের আলপথে’।