সাধন সরকার :
আবহাওয়া
বন্ধুরা, চলো প্রথমে জানা যাক ‘আবহাওয়া’ সম্পর্কে। আবহাওয়া হলো প্রতিদিনকার আকাশ ও বায়ুম-লের (বায়ুর বিশালাকার যে ম-ল) চারপাশের অবস্থা। আরও নির্দিষ্ট করে যদি বলি তাহলে বলা যায়, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের আকাশ ও বায়ুম-লের সাময়িক অবস্থা হলো আবহাওয়া।
আমাদের চারপাশের বায়ুর তাপ, বায়ুর চাপ (বায়ু চারপাশে যে চাপ দেয়), বায়ুর প্রবাহ (বায়ুর চলাচল), বায়ুর আর্দ্রতা (বাতাসে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতি), মেঘাচ্ছন্নতা, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি মিলেই আবহাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়। এগুলো আবহাওয়ার এক একটি উপাদান। এই জন্যই দিনের বিভিন্ন স্থানের আবহাওয়া আলাদা আলাদা হয়। ছোট্ট বন্ধুরা, মজার খবর হলো, আবহাওয়ার ভিন্নতার কারণে কোনো দিনের আকাশ থাকতে পারে রৌদ্রোজ্জ্বল বা মেঘাচ্ছন্ন, আবার কোনো স্থানের বাতাস হতে পারে গরম ও ঠান্ডা।
আবহাওয়ার ভিন্নতার কারণে আমরা মূলত কখনো ঠান্ডা আবার কখনো গরম অনুভব করি এবং সে অনুযায়ী জামাকাপড় পরি। একই দিনে খুলনার আবহাওয়া এক রকম (বৃষ্টি হতে পারে), আবার ঢাকার আবহাওয়া অন্য রকম হতে পারে (বৃষ্টি নাও হতে পারে)! বন্ধুরা, আবহাওয়া কিন্তু যেকোনো মুহূর্তে পরিবর্তন হতে পারে। যদিও আবহাওয়া আমাদের জীবনের প্রতিদিনকার কাজের ওপর খুব একটা প্রভাব বিস্তার করে না!
আর্দ্রতা
ছোট্ট বন্ধুরা, এবার জেনে আসা যাক আবহাওয়ারই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ‘আর্দ্রতা’ সম্পর্কে। যখন আমাদের চারপাশের বাতাস ভেজা ও চটপটে থাকে, আমরা সেই আবহাওয়াকে আর্দ্র আবহাওয়া বলে থাকি। আর্দ্রতা হচ্ছে জলীয়বাষ্প (বাতাসে জলের যে ছোট ছোট কণা মিশে ভেসে বেড়ায়) বাতাসে কতটুকু আছে তার পরিমাণ। বন্ধুরা আমরা বলতে পারি, বাতাসে যখন জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে তখন আমাদের শরীর ঘেমে যায়। আবার যখন বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কম থাকে তখন আমরা শুষ্কতা অনুভব করি। বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ যত কমে আর্দ্রতাও তত কমে। আবার বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি হলে আর্দ্রতাও বেড়ে যায়। বাতাসে বর্ষাকালে মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয়বাষ্প স্থলভাগে (আমরা যেখানে বসবাস করি) নিয়ে আসে। এই জলীয়বাষ্প ঠান্ডা হয়েই মূলত বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। একইভাবে শীতকালেও মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর শুষ্ক শীতল বাতাস স্থলভাগে বয়ে আনে। ফলে আমরা তীব্র শীত অনুভব করি।
আবর্তন
চলো বন্ধুরা, এবার জানা যাক আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ‘আবর্তন’ (ঘূর্ণন) সম্পর্কে। প্রতিদিন সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। পৃথিবী নামক এই ছোট্ট গ্রহ মূলত সূর্যকে (সূর্য মূলত স্থির) কেন্দ্র করে ঘুরছে। পৃথিবী শুধু সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে না, নিজ অক্ষ বা নিজের চারদিকেও ঘোরে। মূলত পৃথিবীর এই ঘূর্ণন বা গতিকেই আবর্তন বলে। পৃথিবী পশ্চিম হতে পূর্বদিকে আবর্তন করে বলেই আমরা পৃথিবী থেকে সূর্যকে পূর্ব দিক হতে পশ্চিমে যেতে দেখি (চলন্ত গাড়িতে আমরা যেভাবে উল্টো যেতে দেখি)। মজার বিষয় হলো, নিজ অক্ষে বা চারদিকে আবর্তন (ঘুরতে) করতে পৃথিবীর সময় লাগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা (১ দিন)। পৃথিবীর এই দৈনিক গতিকেই আহ্নিক গতি বলে। মূলত পৃথিবীর এই আবর্তনের জন্যই দিন ও রাত হয়ে থাকে।























































