‘বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভূমিকা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।’ গতকাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদল সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ কথা বলেন।
তিনি ৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই বঙ্গবন্ধুর হত্যার মূল উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ে যারা সরাসরি জড়িত ছিলেন, তাদের সাক্ষাৎকার ও ভাষ্য অনুযায়ী খুনি জিয়ায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের মূল বেনিফিসিয়ারি। খুনি জিয়া-মোস্তাকসহ ৭১’এ যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী ও পরাজিত শক্তি তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। শুধু রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য নয়, সমগ্র বাঙালির স্বপ্ন ও স্বাধীনতা নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। ৭৫ এর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচারের সাথে সাথে ষড়যন্ত্রের কুশীলবদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
গতকাল বিকেল ৩টায় বোয়ালখালী সিরাজুল ইলসাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
তিনি আরো বলেন, খুনি জিয়া ক্ষমতায় এসে মহান মুক্তিযুদ্ধে মিমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। দালাল আইন বাতিল করেন, মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান জয় বাংলা নিষিদ্ধি করেন, রাজাকার ও ১৫ আগস্ট কালো রাত্রের সাথে জড়িত সকলকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করেন। বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করার পিছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে সফল হয়েছেন। বর্তমান সময়ে দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনার বিকল্প বা সমকক্ষ কেউ নেই। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও উদ্দেশ্য হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি বলেন, যার গৌরবময় নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই মহান নেতাকে সপরিবারে হত্যা শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক ঘটনা। এ হত্যাকা- ঘটিয়ে শুধু আওয়ামী লীগের নয়, দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যেমন যাবেনা তেমন এই কলঙ্ক মুছে ফেলা যাবেনা। এই আত্মস্বীকৃত খুনিরা ইতিহাসের কাছে ক্ষমা পায়নি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া বলেন, এ দেশের ইতিহাসের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত, দেশের মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় বঙ্গবন্ধুর স্থান। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার যে পথ সৃষ্টি হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর পিছনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, সুদীর্ঘকাল ধরে পরাধীন বাঙালিকে বঙ্গবন্ধু এক করেছেন। ভৌগলিক স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। অর্থনৈতিক মুক্তি দানের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। একটা দেশের সোনালী সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করার জন্য এই হত্যাকা-কে জাতি মেনে নিতে পারেনি।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি ও তাদের দোসর মদদদাতারা কখনো চিন্তা করেনি আওয়ামী লীগ একদিন ক্ষমতায় যাবে, বঙ্গবন্ধু কন্যা একদিন প্রধানমন্ত্রী হবেন। তারা এখনো মরিয়া, শেখ হাসিনাকে ওরা একাধিকবার হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে ব্যর্থ হয়েছে।
বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোতহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, শিক্ষা ও মানবসম্পদক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন এমরান, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ হায়দার শাহীন, ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস এম সেলিম, বোয়ালখালী পৌরসভা মেয়র জহুরুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা বেগম, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল, সফিউল আলম, নুরুল আবছার হীরা, আবদুর রউফ, সাইদুর রহমান খোকা, এস এম জসিম উদ্দিন চেয়ারম্যান, শফিউল আজম শেফু, শেখ শহিদুল আলম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র তারেকুল ইসলাম, আবদুল মান্নান রানা, সায়েম কবির, সুনীল দে, কাউন্সিলর রেবেকা সুলতানা মনি, ইকবাল হোসেন তালুকদার, মিজানুর রহমান সেলিম, সাইদুল আলম, সরোয়ার আলম, বোয়ালখালী উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি আবদুল মোনাফ মুহিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হাসান রুবেল, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইকরামুল হক মুন্না, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম রাসেল, ছাত্রনেতা আরাফাত হোসেন তারেক, জাবেদ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মো. রিটন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি