নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই »
মিরসরাইয়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে এক কিশোর নিহত হয়েছে। নিহতের নাম জাহিদ হোসেন রুমন (১৫)। রুপন জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাপাহাড় গুচ্ছগ্রামের নুরুজ্জামানের পুত্র। এ সময় কমপক্ষে ১৫ জন ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন ছাত্রলীগ। আহতরা হলো ওসমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. হাসান (২৮), যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আল মামুন, যুবলীগ নেতা সাদ্দাম, মিজানূর রহমান, সাঈদ খানসহ ১৫ জন। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নের আজমপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুপন ওসমানপুর বাজারে পানির পাম্পে চাকরি করতো।
এদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম রানা নিহত কিশোরকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবি করলেও রুমনের চাচা আবুল হোসেন সেই দাবি নাকচ করেন দেন। এদিকে রাত সাড়ে আটটার দিকে বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা হয়েছে।
নিহত জাহিদ হোসেন রুমনের চাচা আবুল হোসেন বলেন, রুমন ওসমানপুর বাজারে একটি পানির পাম্পে চাকরি করতো। সে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. খন্দকার নোমান সাইন বলেন, শুক্রবার প্রায় সাড়ে ৬টায় মারামারিতে আহত হওয়া ৫/৬ জন ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। এদের মধ্যে জাহিদ হোসেন রুমন নামে এক কিশোরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের পরআহ্বায়ক মাসুদ করিম রানা বলেন, শুক্রবার বিকালে ওসমানপুর বাজারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় বিএনপি। এসময় ওই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লা আল মামুনসহ ১৫ জন ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মী আহত হয়। এছাড়া নিহত রুপন ছাত্রলীগের কর্মী বলে তিনি দাবি করেন।
ওচমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহ আলম অভিযোগ করেন, আজমপুর গ্রামে বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিটিং করে। পরে তারা মিছিল নিয়ে আজমপুর বাজারে থাকা ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলার সময় জাহিদ হোসেন তার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে থাকলে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাকে পিটিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ আলম নিহত জাহিদ হোসেনকে তাদের দলীয় কর্মী বলে দাবি করেন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজামকে ফোন দেয়া হলে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বক্তব্য জানতে শুক্রবার রাত ৮টা ২১মিনিটে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শাহীদুল ইসলামকে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় একজন কিশোর মারা যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।