চট্টগ্রাম চেম্বার এবং ভারতীয় হাই কমিশন, চট্টগ্রামের যৌথ উদ্যোগে “ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক গতকাল বিকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ চেম্বার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চেম্বার সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর।
বৈঠকে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন- ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগে সহযোগিতার লক্ষ্যে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। যাতে করে দু’দেশের ব্যবসায়ীরা খোলামনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত মতবিনিময় করতে পারেন। তিনি ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সেক্টর নিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজনের মধ্য দিয়ে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধান এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক পরিবেশে উন্নয়ন করা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করেন। দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে ভিসা সংক্রান্ত যেকোন সমস্যা সমাধানে আশ্বাস প্রদান করেন।
চেম্বার সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে চারটি মূল বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেন। বেসরকারি খাতের আরো বেশি অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে উন্নয়ন, উভয়দেশের মধ্যে সৃষ্ট যেকোন ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে চট্টগ্রামে চিটাগং চেম্বার এবং সিআইআই’র যৌথ উদ্যোগে একটি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কেন্দ্র স্থাপন করা, ব্যবস্থাপনাগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ‘নলেজ কোঅপারেশন’ এবং সম্মিলিত উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ ও অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, চেম্বার পরিচালক মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), অঞ্জন শেখর দাশ ও মো. শাহরিয়ার জাহান, বিএসআরএম গ্রুপ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহুসেইন, চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চেম্বার সেক্রেটারি ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক, রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ, শান ট্রেডিং করপোরেশন’র পরিচালক মো. হাসান, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ এর হেড অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল সৈয়দ মোহাম্মদ নাসিম, আরামিটের ডিজিএম (সিমেন্ট) এ কে এম মারুফ, ম্যানগো লাইন এর ম্যানেজার হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স’র প্রধান নির্বাহী ওয়াসফি তামিম অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজকিরণ কানাগালা ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের দ্বিতীয় সচিব (কমার্স) ড. প্রমেশ বাসল।
হাই কমিশনের দ্বিতীয় সচিব ড. প্রমেশ বাসল তাঁর প্রবন্ধে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন।
কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজকিরণ কানাগালা তাঁর প্রবন্ধে জিটুজি পর্যায়ের অংশীদারিত্বের উদাহরণ অনুকরণপূর্বক উভয়দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে অংশীদারিত্ব আরো জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ বলেন-বে-টার্মিনাল, কর্ণফুলি টার্মিনাল ও গভীর সমুদ্র বন্দরসহ চট্টগ্রামে চলমান অবকাঠামো উন্নয়নের সুবিধা গ্রহণ করতে পারে ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ভিশন বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম থেকে উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার সড়ক পথের উন্নয়ন, রেলওয়ে যোগাযোগ এবং নৌ-পথের যোগাযোগের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।
চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বাংলাদেশ ও ভারতের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল শিল্পে সমন্বিতভাবে সাপ্লাই চেইন গড়ে তোলাকে প্রাধান্য দিয়ে সম্পূরক সামর্থ্য ও সক্ষমতার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন। বিজ্ঞপ্তি